ক'দিন যাবার পর দেখা গেলো ঘটনা মোটেই এমন নয়। বাংলাদেশের মহিলারা যেখানে সাধারণত যা জানেন তার'চে কয়েকগুন বাড়িয়ে নিজের গল্প করেন, সেখানে আন্টি বরং নিজের সম্পর্কে বাড়িয়ে খারাপ বলতে আরো মজা পান। রান্নাবান্না তিনি বেশ ভালোই জানেন, তবে খুবই অসুস্থ থাকেন বলে চাচা (মানে তার স্বামী) এবং মেয়ে অনেক সাহায্য করেন, এটা ঠিক। ধীরে ধীরে যে ব্যাপারটা জেনে আমি সবচেয়ে অবাক হলাম তা হলো তার আশ্চর্য শিল্পী মন। তাদের পুরনো অ্যালবাম দেখতে গিয়ে কিছু মাঝারি সাইজের ভাস্কর্য দেখে জিগগেস করতেই তিনি লজ্জা লজ্জা মুখে বললেন, "এগুলো আমার করা"। আমি তো হা! কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়া স্রেফ নিজের মনের মত করে কি চমৎকার করে যে সেই কাজগুলো করা হয়েছিলো!
বাংলাদেশের খুব বিখ্যাত একটা পরিবারের মেয়ে শিখুআন্টি। সেই নিয়ে কখনও এক বিন্দু অহংকার করতে তাকে কখনও দেখিনি। শুধু ভীষন সহজ-সরল আর পাগলাটে স্বভাব দেখে সমীকরণ মিলিয়েছি। আজকে সন্ধ্যায় খুব হৈ চৈ করে আমাদের বাসায় এসেছেন। হাতে অসাধারণ এক শিল্প! বরফের ভেতরে আস্ত ফুল এবং সেই বরফ চাকতির মাঝে মোমবাতি জ্বালিয়ে বসানো। কি আশ্চর্য সুন্দর যে লাগছিলো! আমরা হা করে তাকিয়েই আছি, আর আন্টি বলে যাচ্ছেন, "হইছে, আর এমন করে দেখতে হবে না... সাধারণ ব্যাপার তো। ঈদের সময় আনা ফুলগুলো নষ্ট হয়ে যেতো, তাই মাথায় বুদ্ধি এলো, একটা বাটিতে এরকম করে পানির মধ্যে রেখে বরফ বানিয়ে ফেললাম। মাঝখানে ফাঁকা রেখেছিলাম মোমবাতি বসাবো বলেই।"
নিজের বাসায় খুব একটা পাত্তা তিনি আজ পান নি, এরকম অনেক কিছু অহরহই করেন তো! তাই আমাদের কাছে রেখে গেছেন। আমি মুগ্ধ হয়ে দেখতে দেখতে ভাবছি, জয়তু শিখু আন্টি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


