আমার ছেলের জন্য কিছুটা হুট করেই একটা কম্পিউটার কেনা হলো। এটা ছেলের জন্মদিনের জন্য মূল গিফট, যদিও ছেলেকে একটা নীল রঙের সাইকেল কিনে দেয়ার বায়নাও আছে। বেশ কিছুটা ঘাটাঘাটি করে ডেলের অপটিপ্লেক্স ব্র্যান্ডের ৩০৭০ মডেলের মাইক্রো কম্পিউটারটি কিনে ফেললাম। যদিও প্রাথমিক কনফিগারেশন তেমন আহামরি টাইপের কিছু নয়, তবে আমার ধারনা ওর কিম্পউটারের হাতেখড়ি এবং টুকটাক কার্টুন দেখা ছাড়াও যে কোনো অফিসিয়াল কাজের জন্য বেশ ভালোই হবে। খুব তাড়াতাড়ি একটা ডেলের মনিটরও কেনা হবে যাতে ওর মূল ব্র্যান্ডের পিসির সাথে সব কিছু মানিয়ে যায়।
আসুন পিসির কনফিগারেশনটা দেখে নেই।
প্রসেসরঃ ইন্টেল পেন্টিয়াম গোল্ড জি৫৪২০টি (৩৫ ওয়াট)
চিপসেটঃ ইন্টেল এইচ ৩৭০
মেমরিঃ ৪ গি.বা (ডিডিআর ৪, ২৬৬৬ মেগাহার্টজ)
হার্ড ড্রাইভঃ টোশিবা ৫০০ গি.বা (৭২০০ আর.পি.এম)
আকারঃ উচ্চতা ৭.২ x চওড়া ১.৪ x গভীরতা ৭ ইঞ্চি
কম্পিউটারটির সাথে ডেলের কেবি২১৬ ইউএসবি কীবোর্ড এবং ওপটিক্যাল মাউসও এসেছে। আসুন এর আইও পোর্টগুলো দেখে নেই।
কম্পিউটারটির সামনের দিকে দুটো ইউএসবি ৩ পোর্ট রয়েছে। সাথে আছে একটি হেডফোন পোর্ট এবং অন্যটি হেডফোন + মাইক্রোফোন পোর্ট কম্বো। আছে হার্ডডিস্ক এ্যাক্টিভিটি ইন্ডিকেটর এবং পাওয়ার বাটন। পেছনের দিকে আইওতে আছে ৪ টি ইউএসবি পোর্ট যার দুটো ইউএসবি ৩ এবং দুটো ইউএসবি ২ পোর্ট। মনিটরের সাথে কানেক্ট করার জন্য রয়েছে একটি এইচ.ডি.এম.আই. এবং একটি ডিসপ্লে পোর্ট। যদিও আরো একটি ডিসপ্লে পোর্ট এক্সপানশস হিসেবে যোগ করা সম্ভব। মূল কথা হলো এটি দিয়ে সর্বমোট তিনটি মনিটর একসাথে ব্যবহার করা সম্ভব। সর্বোচ্চ রেজুলেশন হিসেবে ৪কে বা ৪০৯৬ x ২৩০৪ পিক্সেলের মনিটর ব্যবহার করা যাবে।
ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য রয়েছে ১ গিগাবাইট গতির আরজে ৪৫ ইথারনেট পোর্ট। যদিও ক্রয়ের সময় এটিতে কোন ওয়াই-ফাই কার্ড সংযুক্ত ছিলো না কিন্তু স্লট ছিলো। কম্পিউটারটির সাথে উইন্ডোজ ১০ প্রো এর লাইসেন্স এসেছে যা দিয়ে উইন্ডোজ ১১ এও বিনামূল্যে ভবিষ্যতে আপগ্রেড করা সম্ভব হবে।
আপগ্রেড
কম্পিউটারটি ক্রয়ের পরপরই আমি ১৬ গি.বাইটের ডিডিআর৪ ২৬৬৬ মেগাহার্টজ গতির মেমরি অর্ডার করেছি। কারণ আমার জানা ছিলো যে ৬৪ বিটের অপারেটিং সিস্টেমে ৪ গি.বা. মেমরি দিয়ে খুব বেশী ভালো কিছু আশা করা সম্ভব নয়। যেহেতু কম্পিউটারটিতে ওয়াই-ফাই কার্ড ছিলো না তাই ইন্টেলের ৯৫৬০ এনজিডব্লিই মডেলের ওয়াই-ফাই কার্ড ক্রয় করা হয়েছে। এতে সর্বোচ্চ ১ গি.বাইটের অধিক গতির ওয়াই-ফাই ইন্টারনেট ব্যবহার করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি রয়েছে ব্লুটুথ ৫ ফিচার যা দিয়ে পরবর্তীতে ওয়ারলেস কী-বোর্ড, মাউস, হেডফোন এবং মাইক্রোফোন কম্বো ব্যবহার করা যাবে। পাশাপাশি এ্যান্ড্রয়েড ফোন থেকে সরাসরি ফাইল আদান প্রদান করা সম্ভব হবে। ৫০০ গি.বাইটের প্রথাগত হার্ড ড্রাইভ খুলে ফেলা হয়েছে। সেখানে ২৫০ গি.বাইটের স্যাটা এস.এস.ডি দিয়ে আপগ্রেড করা হবে। মাদারবোর্ডে অবস্থিত এম.২ স্লটে ইতোমধ্যে ২৫০ গি.বাইটের এনভিএমই এসএসডি ড্রাইভ যুক্ত করে আপগ্রেড করা হয়েছে। এতে করে পাওয়ার অন করার ১০ সেকেন্ডের মধ্যে উইন্ডোজ ব্যবহারের উপযোগী হবে। সব মিলিয়ে বাচ্চাদের জন্য বেশ শক্তিশালী মানের কম্পিউটার হিসেবে দাঁড় করানো হয়ছে।
মোটামুটিভাবে সবকিছু মিলিয়ে প্রায় ৫০০ ডলারের মতো খরচ পড়ছে। তবে উল্লেখ্য যে, প্রয়োজনে কম্পিউটারটির প্রসেসর আপগ্রেড করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে আমার মূল টার্গেট হলো ইন্টেলের কোর আই ৫-৯৪০০টি বা ৯৫০০টি প্রসেসরটি। এ ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি। তবে আপগ্রেড করতে চাইলে মোটামুটিভাবে আরো ২০০ ডলার যোগ করতে হবে। মনিটরের দামটা এখনো ভুলে গেলে চলবে না।
মতামতঃ
মনে রাখা প্রয়োজন বিদ্যুৎ খরচের কথা মাথায় রেখে মূলত এই কম্পিউটারটি ক্রয় করা হয়েছে। মনিটর বাদ দিয়ে শুধু কম্পিউটারটি সর্বোচ্চ ৩৫/৪৫ ওয়াট বিদ্যুৎ ব্যবহার করবে। বলতে পারেন ল্যাপটপের মতোই পাওয়ার এ্যাডাপটার ব্যবহার করা হবে এটি চালানোর জন্য বা কম্পিউটারটিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং ভোল্টেজ ওঠানামার কথা মাথায় রেখেই আমি একটি ব্যাকাপ পাওয়ার এ্যাডাপটার কিনে রেখেছি। আশা করছি সেটার প্রয়োজন পড়বে না, তবুও। সব মিলিয়ে ব্যক্তিগতভাবে ছেলের জন্য আপাতত আমার কাছে বর্তমান কনফিগারেশনটি বেশ উপযুক্ত মনে হয়েছে। বাচ্চার পাশাপাশি বাসার যে কেউই এটিতে বসে তার প্রয়োজনীয় অফিস কাজও খুব সহজেই সম্পাদন করতে পারবেন নির্দ্বিধায়। ফটোশপ, টুকটাক ভিডিও এডিটিং করা সম্ভব হবে এটি দিয়ে। ধন্যবাদ।
ছবি কপিরাইটঃ সার্ভদিহোম
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৩২