somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার নতুন কম্পিউটার বিল্ড

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বিগত ২০১৮ সালে আমি নতুন কম্পিউটার বিল্ড করেছিলাম। মাঝে টুকটাক আপগ্রেড করা হয়েছে তবে সে অর্থে বড় কোন জেনারেশনাল আপগ্রেড করা হয় নি। সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম নতুন পিসি বিল্ড করবো। মোটামুটি সবকিছু অর্ডার শেষে পার্টসগুলো গতকালই হাতে পেয়েছি। রাতের মধ্যেই পি.সি বিল্ড শেষ করা হয়েছে। নতুন কনফিগারেশনটি তুলে দেয়া হলো।

প্রসেসর: ইন্টেল ১২ জেনারেশন আই৯ - ১২৯০০ টি
মাদারবোর্ড: এ্যাসরক বি৭৬০এম
সিপিউ ফ্রেম: থার্মাল গ্রিজলি ১৭০০ এল.টি.
সিপিউ কুলার: নকটুয়া এন.এইচ.-এল.৯ আই - ক্রোম ব্ল্যাক
ড্রাইভ (বুট): স্যামসাং ৯৯০ ইভো ১ টে.বা.
ড্রাইভ (ডেটা): স্যামসাং ৯৮০ ১ টে.বা.
ড্রাইভ (টেম্প): ক্রুশাল এম.এক্স ৫০০ (৫০০ গি.বা.)
মেমরি: ক্রুশাল প্রো ডি.ডি.আর.৫-৫৬০০ (৩২ গি.বা.)
ওয়াই-ফাই: ইন্টেল বি.ই.২০০
জি.পি.ও: এনভিদিয়া আর.টি.এক্স এ১০০০ ৮ গি.বা.

যারা পিসি সম্পর্কে ধারনা রাখেন তারা বুঝতেই পারবেন মূলত বিদ্যুৎ শাস্রয় ও ব্যবহারের উপযোগীতার কথা মাথায় রেখেই এই বিল্ডটি তৈরী করা হয়েছে। সবগুলো না হলেও কিছু বিষয় নিয়ে নিচে আমার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হলো।


প্রসেসর: সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এই কম্পিউটারটি মূলত বাংলাদেশে ব্যবহার করা হবে। বিদ্যুৎ ব্যবহারে শাস্রয়ী হওয়ার লক্ষ্যেই মূলত ইন্টেল এর ১২তম জেনারেশনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের টি সিরিজের প্রসেসরটি নেয়া হয়েছে। মাত্র ৩৫ ওয়াটের এই প্রসেসরটি টার্বো বুস্ট মোডেও মোটামুটি ১০০ ওয়াটের আশে-পাশে ব্যবহার হতে পারে। তবে স্বাভাবিক কাজে এর চেয়েও অনেক কম বিদ্যুৎ ব্যবহার হবে।

মাদারবোর্ড: এ্যাসরক ব্র্যান্ডের মাদারবোর্ড আমি ব্যবহার করছি দীর্ঘদিন ধরে। তবে আমার কাছে মনে হয় এম.এস.আই. এর তৈরী মাদারবোর্ডগুলো বর্তমানে গুণে ও মানে সেরা। তবে একই জেনারেশনের অন্যান্য ব্র্যান্ডের তুলনাম তাদের মাদারবোর্ডে ফিচার কম থাকে। দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকেই বিষয়গুলো এক দাগে বলা হলো তাই ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন দেখছি না। সুর্নিদিষ্ট কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই আলোচনা করা যাবে। বি৭৬০এম মাদারবোর্ডটি মূলত সাদা রং-এর। মাদারবোর্ডের এই রং আমার অপছন্দের হলেও মূলত এর বৈশিষ্ট্যের কারনে আমি এটি নিতে এক প্রকার বাধ্য হয়েছি। প্রয়োজন ছিলো ইউ.এস.বি-সি পোর্ট ও কমপক্ষে দুটো এম.২ পোর্ট ও অতিরিক্ত একটি এম.২ পোর্ট ওয়াই-ফাই মডিউল এর জন্য। ভিরেম এর জন্য থার্মাল থাকা একটি বড় প্লাস পয়েন্ট ছিলো। সেই সাথে পি.সি.আই.ই ৪ জেনারেশনের জিপিও ব্যবহারের সুবিধা থাকা দরকার হয়েছে। পাশাপাশি ডি.ডি.আর৫ মেমরি সাপোর্টও একটা বড় বিষয় ছিলো আমার জন্য। ৭৬০এম চিপসেট মূলত এল.জি.এ ১৭০০ প্রসেসর সাপোর্টেড দ্বিতীয় জেনারেশনের চিপসেট। ৬০০ সিরিজগুলো ছিলো প্রথম জেনারেশনের। এই চিপগুলো ১৪ জেনারেশনের প্রসেসরগুলোও সাপোর্ট করে।

সিপিউ ফ্রেম: এটি একটি নতুন পার্টস। প্রথাগত মাদারবোর্ডের ল্যাচ ব্যবহার করলে মূল প্রসেসরের ফিনগুলোতে দাগ পড়ে যায়। পাশাপাশি দীর্ঘদিন ল্যাচ ব্যবহৃত হলে লক্ষ্য করবেন মাদারবোর্ডের মাঝ বরাবর কিছুটা বাঁকা হয়ে যায় স্প্রিং এর ক্রমাগত প্রেশারের কারনে। তাই এই সিপিউ ফ্রেম কেনা হয়েছে।


সিপিউ কুলার: বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড নকটুয়ার কুলার আমি ব্যবহার করছি দীর্ঘদিন ধরেই এবং আমার কাছে তাদের এয়ার কুলারগুলো সর্বোচ্চ মানের বলে মনে হয়েছে। বিল্ড কোয়ালিটি ও তাদের তৈরী ফ্যানগুলো শব্দহীন হওয়াতে তারা বিশ্বব্যাপী নন্দিত। আমি তাদের লো প্রোফাইল এল.জি.এ ১৭০০ সাপোর্টেড কুলারটি নিয়েছি কালো রং-এর। ক্ল্যাসিক কুলারগুলো মূলত হালকা বাদামী রংএর হয়ে থাকে যা আমার আগের কম্পিউটার বিল্ড-এ ব্যবহার করেছি প্রায় ৪ বছর। ফ্যান ব্লেডগুলো মূলত মেরুন রং-এর হয়ে থাকে। এবার কালো নেয়ার কারণ হলো আমার মাদারবোর্ড সাদা রং-এর। আমি লিকুইড কুলারে বিশ্বাসী নই বা ব্যক্তিগতভাবে কখনো ব্যবহার করিনি বা করার ইচ্ছেও নেই। সিপিউ ঠান্ডা রাখার জন্য এয়ার কুলার যথেষ্ট না হলে বুঝতে হবে কেউ সম্ভবত কম্পিউটারে গেমিং করছে। স্বাভাবিক কাজের জন্য কখনোই লিকুইড কুলারের প্রয়োজন হওয়ার কথা নয়।

ড্রাইভ: একাধিক ড্রাইভ যোগ করা হয়েছে এবার। আমি মূলত দুটো ড্রাইভ ব্যবহার করি। বুট ড্রাইভ সবসময়ই এম.২ এস.এস.ডি হতে হবে। কাজের ফাইল রাখার জন্য দ্বিতীয় ড্রাইভ স্বাধারনত আমি স্যাটা এস.এস.ডি ব্যবহার করি। এতে ড্রাইভ ঠান্ডা থাকে ও কম দামে বিশাল স্টোরেজ পাওয়া যায়। এবার ১ টেরাবাইটের বুট ড্রাইভ কেনার উদ্দেশ্য হলো আমার বিশাল বিশাল কিছু এ্যাপলিকেশন ব্যবহার করতে হয়। এই বুট ড্রাইভটি মূলত পি.সি.আই.ই ৪ জেনারেশরনের। দ্বিতীয় এম.২ ড্রাইভটি পি.সি.আই.ই ৩ জেনারেশনের। এখন থেকে এটিই মূলত কাজের ফাইল রাখার জন্য ব্যবহার হবে আর সেটা ড্রাইভ মূলত ফাইল আপলোড / ডাউনলোড জাতীয় কাজের জন্য টেম্পোরারি স্টোরেজ হিসেবে ব্যবহার করা হবে।


মেমরি: বরাবরের মতোই ৩২ গিগাবাইটের মেমরি নিয়েছি আমার কাজের প্রয়োজনে। তবে এবার ডি.ডি.আর.৫ মডিউল কেনা হয়েছে দ্রুত গতির জন্য।


জি.পি.ও: আমি আর.টি.এক্স এ ১০০০ ক'দিন আগেই ক্রয় করেছি এই বিল্ডকে সামনে রেখে। মূল উদ্দেশ্য ছিলো ৮কে ভিডিও সাপোর্ট, কিছু এল.এল.এম ট্রাই করা ও হালকা মানের কিছু রেটরো গেম খেলে তা ক্যাপচার এবং এডিট করে ইউটিউব চ্যানেলে দেয়া। সেই সাথে আমার ভিডিও এডিটিং এর কাজ কিছু রয়েছে। ৪কে ভিডিও এডিটের জন্য এই কার্ড বেশ বালো বলে মনে হয়েছে। কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করা ও সেই সাথে ছোট আকারের হওয়াতেই এই কার্ড কেনা হয়েছে।

এইতো, মোটামুটিভাবে এই পিসি আগামী ৪/৫ বছরের জন্য যথেষ্ট উপযোগী বলে আমার মনে হয়েছে। বেশ এনজয় করছি নতুন কম্পিউটারটি। বেশ ফাস্ট মনে হচ্ছে সবকিছু। সবার জন্য শুভ কামনা থাকছে। ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১:৪০
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্ধ ভিখারি এবং রাজার গল্প....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৪ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:২৬

অন্ধ ভিখারি এবং রাজার গল্প....

এক অন্ধ ভিখারি ভিক্ষা করতে করতে একদিন রাজপ্রাসাদে ঢুকে পড়লো। অন্ধ ভিখারিকে দেখে রাজার মনে দয়া হলো। রাজা মন্ত্রী-কে ডেকে বললেন-
"'এই ভিক্ষুক জন্মান্ধ নন, একে চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রক্তজবা ও গোলাপ

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৫ ই মে, ২০২৫ রাত ১২:৩৭

ভালোবাসার রূপান্তর

তোমার শহরে তুমি বসে আছো,
রক্তজবা হাতে…
আমার শহরে আমি,
একটি গোলাপের বাগান গড়ি—
লাল রঙে রাঙা, নিঃশব্দে ফুলে ভরে।

তুমি একদিন বলেছিলে,
রক্তজবা মানেই চিরন্তন ভালোবাসা,
তোমার অভিমানে লুকোনো ছিল রাগের আগুন,
তবু তার গভীরে ছিল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আ.লীগের মত বিএনপি কেউ নিষেধাজ্ঞা দেয়ার সময় ঘনিয়ে আসছে

লিখেছেন অপলক , ১৫ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১২:২৫

ক্ষমতায় না বসতেই যা শুরু করেছে বিএনপি, মনে হয় না তারা তাদের যোগ্যতা বা উপযোগিতা ধরে রাখতে পারছে। এত এত করাপশন গত আগস্ট থেকে যে, এমন কোন সেক্টর নাই যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইহাকেই বলে আগবাড়িয়ে মাড়া খাওয়া

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৯


শিক্ষিত জঙ্গি মোদী ভোটের মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই হাসিনার মতো জঙ্গি নাটক সাজায়; দুজনের পার্থক্য হলো হাসিনা নিজদেশের জনগন হত্যা করে নিজদেশের জনগনকেই দোষ দেয় অপর দিকে মোদী নিজদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাসুদ(শাহবাজ ) তোমরা কি আর ভালো হবা না ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২৯


বাংলাদেশপন্থীরা ভারত ও পাকিস্তানপন্থীদের হাউকাউতে অতিষ্ঠ। ভারত ও ভাদা রা মনে করে ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হয়েছিলো। ভারত বাংলাদেশ কে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। গুগলে সার্চ করলেও এমন কিছুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×