somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি স্তব্ধ, বাকরুদ্ধ ও ক্ষিপ্ত

২২ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১২:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঠিক যে সময়ে আমি লিখতে বসেছি তারও প্রায় ছয় কিংবা সাত ঘন্টা আগে থেকেই কিছু লিখার তাড়না অনুভব করছিলাম। কিন্ত ঠিক গুছিয়ে উঠতে পারছিলাম না, সংবাদের পর সংবাদ, পাতার পর পাতা শুধু পড়ছি, দেখছি ছবি কিংবা ভিডিও। উত্তরায় বিমান বাহিনীর যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঠিক কতগুলো খবর আমি পড়েছি জানি না, তবে বেশীরভাগ খবরই পড়া শেষ, হোক সে দেশী কিংবা বিদেশী। আমি কখনো কাঁদছি, কখনো স্ক্রীনে বিভিন্ন দৃশ্য দেখে চোখ ভিঁজে আসছে। কখনো স্ত্রী কিংবা মা সান্ত্বনা দিচ্ছেন ফোনে। বাংলাদেশ তথা ঢাকার মাটিতে ঘটে যাওয়া এই নির্মমতার দৃশ্য আমাদের অনেকের কাছেই অপিরিচিত। কম্পিউটারের পর্দায় ভয়ানক সব দৃশ্য দেখে আমি অনেকটাই বাকরূদ্ধ হয়ে পড়েছিলাম। এতটা ভয়াবহতা কিভাবে সম্ভব!!! মাথা ঠিকমতো কাজও করছে না। আমি জানিও না কি লিখা উচিত।

এতগুলো তাঁজা প্রাণ ঝরে গেল। এতগুলো বাচ্চা তাদের মা-বাবার কোল খালি করে চলে গেল। ঠিক কতগুলো পরিবার আক্রান্ত হলো তার সঠিক হিসেবে হয়তো এখনই বলা যাবে না তবে এই তালিকা যে আরো অনেক দীর্ঘ হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই আমার। এখনো পর্যন্ত অন্তত ২০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আহত দেড় শতাধিকেরও বেশী। এতগুলো পরিবার কিভাবে এই আঘাত সইবে আমার তা জানা নেই। শুধু জানি, তাদের হাহাকার ও কষ্টগুলো দীর্ঘদিন বয়ে বেড়াতে হবে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে।

প্রশ্ন হলো এই ঘটনার দায় কার? বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও দেশের প্রশাসনকে এই ঘটনার উত্তর অবশ্যই দিতে হবে।

বিমান বাহিনীর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকিরও এ ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। দেশের সম্পদ নষ্ট হলো সেই সাথে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিও হারিয়ে গেলেন। সমস্যা হলো বিমান বাহিনীর তিনিই প্রথম শহীদ নন, অতীতেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। আজও ঘটলো ও সঠিক ব্যবস্থা না নেয়া হলে আগামীতেও ঘটবে। বাংলাদেশের বিমান বাহিনী দীর্ঘদিন যাবত মুড়িরটিন মার্কা বিমান এফ-৭ ও মিগ-২৯ দিয়ে একটা বাহিনী পরিচালনা করছে। তদুপরি এ ব্যাপারে সঠিক ব্যবস্থা কখনোই নেয়া হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। বিমান বাহিনীর আধুনিকায়ন নিয়ে বহুবার কথা আসলেও কোন অজানা কারনে বিমান বাহিনীতে নতুন যুদ্ধ বিমান যুক্ত হচ্ছে না দীর্ঘদিন ধরে। প্রশ্ন হলো কেন? আমরা হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে দেশের রাস্তা-ঘাট, ফ্লাই-ওভার, মেট্রোরেল নির্মান করছি। কিন্তু যে দেশের আকাশ সীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় একটা বাহিনী রয়েছে সেদিকে আমাদের কেন নজর নেই? কেন তার আধুনিকায়ণ হচ্ছে না।

সরকারের পর সরকার আসছে, কিন্তু বিমান বাহিনীতে আধুনিক যুদ্ধ বিমান যোগ হচ্ছে না কেন? দীর্ঘ উত্তর শোনার কোন মানসিক স্থিতি আমার নেই। দেশের আকাশসীমার প্রতিরক্ষায় আধুনিক যুদ্ধ বিমানের বিকল্প নেই এবং সেটা অতি সত্তর হতে হবে। সরকারের কাছে টাকা না থাকলে সরকার আলাদা ফান্ড তৈরী করুক, আমরা সাধারণ জনগণ সেখানে টাকা দেব বা ডোনেট করবো। আমার বিশ্বাস আমাদের সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়নে এ দেশের সকল মানুষ এই ফান্ডে খুশি মনে ডোনেট করবে। প্রয়োজনে যাতে প্রবাসীরাও এখানে অংশগ্রহণ করতে পারে সে ব্যবস্থাও রাখুন। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, প্রতি বছরই ভালো একটা ফান্ড তৈরী হবে।

বিমান বাহিনীর আশু সংস্কার ও আধুনিকায়ণ প্রয়োজন। দয়া করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিমান বাহিনীতে কোন চাইনিজ কিংবা রাশিয়ায়ন মুড়ির টিন যুক্ত করবেন না। আমেরিকান না হলেও ইউরোপিয়ান অনেক যুদ্ধ বিমান রয়েছে। সেখান থেকে প্রয়োজন অনুযাীয় যুদ্ধ বিমান সংগ্রহ করুন। তবুও কিছু একটা করুন। এভাবে অকারণ অবহেলায় যেন আর কোন প্রাণ না যায় সে ব্যাপারে সচেষ্ট হোন।

পরিশেষে বলবো, যারা আজ প্রাণ হারালেন তাদের জন্য কোন না কোনভাবে আমরা সবাই দায়ী, এটা যেন আমরা ভুলে না যাই। পরিবারগুলোর প্রতি সামরিক বাহিনী, প্রশাসন তথা দেশবাসী সবাই এগিয়ে আসবেন এটাই প্রত্যাশা করি। আহতদের সর্বোচ্চমানের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা ও পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করা হোক। মহান রাব্বুল আলামিন এর দরবারে সকল শহীদদের রূহের মাগফেরাত কামনা করি। রাব্বুল আলামিন সকল শহীদ পরিবারকে এই্ শোক ধৈর্য্যের সাথে মোকাবিলা করার শক্তি দিন এটাই প্রার্থনা করছি। বাংলাদেশের মাটিতে এই ঘটনার আর যেন কোন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেই প্রার্থনা করি।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১২:৪৫
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×