১৯৭১ সালে যারা বিরোধিতা করলো তারা স্বাধীনতার ৪০ বছর পার হয়ে গেলেও বেশ দম্ভের সাথে এ দেশে রাজনীতি করছে এবং যে বাঙ্গালীদের ওপর ‘তারা’ অত্যাচার করলো সেই বাংগালীরাই আবার তাদের খুব পছন্দ করে আবার তাদের জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিয়ে সংসদে পাঠায়। সেই রজাকার বা স্বাধীনতা বিরোধীদের সত্যিই অনেক চতুর বা চালাক বলতে হবে। আবার এদের অনেকে ব্যবহার করে সরকার উৎখাত করেছে আবার এদের সমর্থনে সরকার গঠন করেছে আবার ভবিষ্যতে সরকারের ক্ষমতায় যেতে চাচ্ছে। এর জন্য বাঙ্গালীর সহজ সরলতার দোষ দেয়া যাবে না। দোষ দিতে হবে ষড়যন্ত্রের। ষড়যন্ত্রের কারণেই আজ ৪২ বছর পর তাদের ফাসিঁর দাবিতে রাস্তায় নামতে হচ্ছে, সারারাত জেগে আন্দোলন করতে হচ্ছে। কিন্তু এই স্বাধীনতা বিরোধী যে দল আছে সেই দল চালাতে গেলে নিশ্চই খরচের ১টা ব্যাপার আছে এবং টেকনিক আছে। তাছাড়া দেশের বেশির ভাগ মানুষ তাদের ঘৃণা করার পরও কিভাবে দল চালাতে পারে নেতাদের পিছনে এতো খরচ করতে পারে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের চেয়ে তাদের ব্যবস্থাপনা ভালো। যোগ্য লোককে তার যোগ্য স্থান দেয়। কিন্তু অন্যান্য ছাত্র সংগঠনে তা দেয় না এবং আমার কথায় সবাই একমত হবে। কথিত আছে দলের সাথে থাকলেই ভালো চাকরি নয়তো ভালো পদ তাদের বিভিন্ন আয়ের উৎসের প্রতিষ্ঠানে। এর জন্যই দারিদ্রের কশাঘাতে বিপর্যস্ত হয়ে অনেকে তাদের সংগঠনে যোগ দিচ্ছে। তাই আমাদের উচিত এদের চিকিৎসা সেবা, ব্যাংকিং সেবা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বা তাদের বিনোদনমূলক যেসব প্রতিষ্ঠান আছে তাদের থেকে দূরে থাকা। তাহলে মনে হয় এদের সমূলে উৎপাটন করা যাবে। স্বাধীনতা বিরোধীদের বিচার নিয়ে খেললে বা ঝুলিয়ে রেখে পরে সেই ঝুলিয়ে রাখা থেকে, বোকা মনে করা বাংগালীদের ব্যবহার করে দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা নিতে চাইলে ভুল করবেন। মানুষের সব চালাকির মধ্যেই কিছু না কিছু বোকামি থাকে। আর এদের রাজাকার না বলে দেশদ্রোহী বলা ঠিক হবে। আমি যতদূর জানি রাজাকার আরবী শব্দের অর্থ খুব ভালো মানে আছে ১টা, সেটা হচ্ছে সেচ্ছাসেবক। আল শামস্ মানে সূর্য। আবার আল বদর মানে পূর্ণ চাঁদ। তাই বাইরে বললে হয়তো বিশেষত আরব বিশ্বে মানুষ ভুল বুঝবে এর জন্যই হয়তো মধ্যপ্রাচ্য সহ অনেক দেশ এই দেশদ্রোহীদের সমর্থন করছে এবং তারা সরকারকে এই বিচার বন্ধ করার অনুরোধ করছে, তাদের লোক সরকারের কাছে অনুমোদন না নিয়ে ট্রাইবুন্যাল পরিদর্শন করছে। তাদের ভাবাটাও অস্বাভাবিক নয় তারা আমাদের দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস জানে না ভালো করে। জানে কোন ১ বিশেষ দেশের সমর্থন পুষ্ট সরকার চলে আমাদের। তাই আমার মনে হয় এইসব শব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরো সতর্ক হওয়া উচিত, যাতে আরব বিশ্বের লোক ভবিষ্যতে আমাদের সম্পর্কে জানতে গিয়ে কোন সংশয়ের মধ্যে না পরে। আরব বিশ্বের মানুষ আমাদের দেশের সঠিক ইতিহাস জানুক, আমাদের ওপর নির্যাতনের ইতিহাস জানুক।
শাহবাগ নিয়ে কিছু কথাঃ
এখন হয়তো অনেকেই আবেগের মোহে শাহবাগ দৌড়াচ্ছি কিংবা হরতাল বলে সময় কাটিয়ে আসছি।(আমার ২জন পরিচিতই মানুষের এমন চিন্তা)। মিশরের তাহরির স্কয়ারে মানুষ এতোদিন আন্দোলন করলো তাদের তেমন আশানূরূপ ফল আসেনি। তাই আমাদের সতর্ক হতে হবে। আজ গেলাম কাল গেলাম এরপর গেলাম না এমন হলে যেই লাউ সেই কদুই হবে। পরে এই আন্দোলন ১টা হাসির পাত্র হিসেবে গণ্য হবে এবং এইসব দেশদ্রোহীরা, বিচার নিয়ে খেলা করা লোকেরা আরও অনেক বেশি সুযোগ পাবে। অনেকে বলছে আমিও মনে করছি বিচারের নামে রাজনৈতিক চাল হচ্ছে এর জন্য এতো মাতামাতি করার দরকার নেই। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে বিচারতো আমাদের চাইই এবং যারা বিচারের নামে বিশেষ রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চাইবে তাদের বিচার করার ক্ষমতাও কিন্তু আমাদের কাছে। তাই যেভাবেই হোক এখন সর্বোচ্চ বিচার করতে হবে এইসব স্বীকৃত দেশদ্রোহীদের। আজ শাহবাগে দেখলাম মানুষের ঘৃণার পাত্র বিশেষ ১ ছাত্র সংগঠন, ঐ দলের বড় বড় লোক এসে ঐ রাজনৈতিক দলের স্লোগান দিচ্ছে, মাতব্বরি করছে। কিন্তু সেখানে আসা ৯৮% মানুষ এসেছে কিন্তু নিজ ইচ্ছায়, স্বতস্ফূর্ত হয়ে, দেশের সাধারণ নাগরিক হিসেবে। তাই ঐ শেষে এসে যেনো ঐ বিশেষ নাম করা “মানবতা প্রেমী” ছাত্র সংগঠনের ভালো বিজ্ঞাপন না হয়ে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:১৪