নির্ভীক গাঙ্গচিলের রাজত্ব এখান অব্দিও রয়েছে
আগের পোষ্টটি এখানেঃ view this link
করোনার ছুটি চলছে টিভি মিডিয়া ব্লগ খুললেই করোনার সংবাদ, ভবিষ্যৎ বানী, টিকা ঔষধ তৈরীর আশার বানী, হতাশা জনক প্রতিক্রিয়া, ইত্যাদী ইত্যাদীতে ভরপুর। অতএব করোনা ভাবনা থেকে মুক্তি দিতে কিছুক্ষণ অন্য ভাবনায় নিয়োজিত থেকে নিজেকে ব্যস্ত রাখার প্রয়াসেই পোষ্টের অবতারনা।
ওখানে গিয়ে একটি ছবি দেখেছিলাম সেখানে বর্নিত ছিলো : অন্যান্য দেশ থেকে একজন মুচি, একজন দর্জী, একজন কামার স্মরনার্থি হিসাবে এসে প্রচুর সুখ সুবিধা নিয়ে উলুবনে শেয়াল রাজার মত নেতা বনে যায় । এরপর যেসকল ইমিগ্র্যান্ট (ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার) আসছিলো তাদের উপর বিভিন্ন বিধি নিষেধ আরোপ করে তাদের অধিকার ক্ষুন্ন করছিলো ভাবখানা এমন যে, এটা আমাদের জায়গা তোমরা আমাদের শান্তি বিনষ্ট করতে এখানে এসেছো কেন ? একদম বর্তমান ট্রাম্প চরিত্রের আদিরূপ। ট্রাম্প নিজেই জার্মানীর ইমিগ্র্যান্ট হয়ে এখন দুনিয়ার তাবৎ ইমিগ্র্যান্টদের শত্রু জ্ঞান করছে এটি স্ট্যাচু অব লিবার্টী যে নীতি নিয়ে স্থাপন করা হয়েছিল তার পরিপন্থী।
আমেরিকা আসলে রেড ইন্ডিয়ানদের জায়গা । পরবর্তিতে মূলত আমেরিকা হয়ে উঠেছিলো সব বর্ণের সব দেশের মানুষের জায়গা। বারাক ওবামা বলেছিলেন আমেরিকা গড়ে উঠেছে পৃথিবীর সব কালার সব সংস্কৃতির সব ভাষার মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়।
পৃথিবীতে সব সময় সব জায়গায় কিছু না কিছু পিউরিট্যানিক্যাল বা ফ্যানাটিকাল মানুষ থাকেই, তারা ছলে বলে কৌশলে তাদের কিছু সমর্থক গোষ্ঠী তৈরী করে নেয়, ফলে তারা যখন ক্ষমতায় থাকে পৃথিবী পশ্চাৎ দিকে ধাবিত হয়। তবে সুখের বিষয় হচ্ছে কোন কিছুই স্থায়ী নয়, মেঘের আড়াল থেকে সূর্য বেড়িয়ে আসেই।
প্রসঙ্গে ফিরে আসি।
আমরা স্ট্যাচু অব লিবার্টী থেকে আবার ক্রুজশিপে করে যাত্রা শুরু করলাম ১৫/২০ মিনিটের মধ্যেই এলিস আইল্যান্ডে পৌছে গেলাম। সমুদ্রপথে যারা আসতেন এই আইল্যান্ডেই প্রথম থামতে হত নামতে হত। নাম তালিকাভুক্ত করে অনুমতিপত্র নিয়ে তখন মূল ভূখন্ডে প্রবেশ করতেন। সেই সময় অষ্ট্রেলিয়া,নিউজিল্যান্ড, কানাডা,আর্জেনটিনাও ছিল যেখানে ইমিগ্র্যান্টরা মাইগ্রেট করতে পারতেন কিন্তু বেশীরভাগ ইমিগ্র্যান্টরা আমেরিকাকেই গন্তব্য হিসাবে পছন্দ করেছিলেন।
১৮৮০-১৯২৪ সাল পর্যন্ত ছিল পিক মাইগ্রেশন টাইম, এই সময়কালে প্রায় ২ কোটি ৬০ লক্ষ মানুষ আমেরিকায় প্রবেশ করেন।
১৮৯২-১৯৫৪ সালের মধ্যে ১ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ এলিস আইল্যান্ডের মাধ্যমে প্রবেশ করেন।
১৯৮০ সালে এলিস আইল্যান্ডের অভিবাসী স্থাপনাকে পুনঃনির্মান করে যাদুঘরে রূপ দেওয়া হয়।
মিউজিয়াম
যাদুঘরে প্রবেশ পথ।
যাদুঘরের ভিতর
অভিবাসী আগমনের স্মৃতি স্মারক ছবি।
দুর্গম সমুদ্র পাড়ি দিয়ে হত ক্লান্ত অভিবাসীরা।
জ্যামাইক্যান,ওয়েষ্ট ইন্ডিয়ান ইমিগ্র্যান্টস।
আঙ্কেল স্যাম। বহুদেশের মানুষের সমন্বয়ে গঠিত প্যাট্রিওটিক জাজ।
এন্টি ইমিগ্র্যান্ট ইমেজ
ইমিগ্র্যান্টদের শতোর্ধ বৎসর পূর্বে নিয়ে আসা বাক্স প্যাটরা স্মারক বা আর্টিফ্যাক্ট হিসাবে সংরক্ষিত।
দুরে স্ট্যাচু অব লিবার্টী।
মিউজিয়ামের পিছনে সবুজ চত্ত্বর ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান আমেরিকার পার্ল হারবারে এ্যাটাক করে আমেরিকাকে বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে ফেলে। ফলশ্রুতিতে জাপানকে পারমানবিক বোমা সইতে হয়। যুদ্ধ হয় রাজায় রাজায় সাধারন বেসামরিক জনগনের বিরুদ্ধে নয়। কিন্তু টুইন টাওয়ার ধ্বংস করে সাধারন জনগনের বিরুদ্ধে হলি আর্টিসানে আক্রমন চালিয়েও সাধারন জনগনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করা হয় যা কোন ভাবেই কোন যুদ্ধের নীতিমালায় পড়েনা এগুলো সন্ত্রাসী হামলা । এসব হামলা পৃথিবীতে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বিপর্যয় ডেকে এনেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইরাকের মত ভাল অর্থনৈতিক অবস্থানে থাকা দেশ ধ্বংস হয়েছে আফগানিস্তান ও ঐ পথে গেছে। একই ভাবে আমাদের দেশেও সন্ত্রাসী হামলায় অনেক মূল্যবান প্রান নষ্ট হয়েছে অনেক সন্ত্রাসীও প্রান হারিয়েছে। অনেকটা ডেকে এনে যেন যুদ্ধে জড়ানো। কবে এগুলো থেকে মুক্তি পাবো জানিনা।
ধ্বংস হয়ে যাওয়া টুইন টাওয়ার মেমোরিয়ালের উদ্দেশ্যে পায়ে হেটে রওনা হলাম পরিচ্ছন্ন সুন্দর রাস্তাঘাট সুন্দর ইমারত দেখে ছবি তোলার জন্য হাত নিশপিষ করে।
পৌছে গেলাম।
এখানে একটি টাওয়ার ছিলো
এখানে আরেকটি টাওয়ার ছিল।
টাওয়ার ধ্বসে যে সকল ব্যাক্তি মারা গেছেন তাদের নাম।
যে শিশুটি ভুমিষ্ট হওয়ার পূর্বেই পৃথিবী ত্যাগে বাধ্য হয়েছিলো।
নুতন গড়ে ওঠা টাওয়ার।
মুক্তভাবে দম নেওয়ার জন্য, বিশ্রামের জন্য, বাকবাকুম করার জন্য খোলা শান বাধাঁনো চত্ত্বর ।
টুইন টাওয়ার মেমোরিয়াল মিউজিয়ামের পথে।
টুইন টাওয়ার মিউজিয়াম।
দৃষ্টি নন্দন নির্মানশৈলী
ফেরার পথে এই ভাস্কর্যটা চোখে পড়লো
কার পার্কিং এর পথে
বিদায় নিউইয়র্ক ছুটছি এবার ডেরার পথে।
কিন্তু পেটে কিছু না দিয়েই কি বিদায় নেওয়া যায় ? তাই নিউইয়র্কের মিনি বাংলাদেশে এক বাঙ্গালী হোটেলে।
দশ নং ছবিটি গুগল থেকে নেওয়া কারন একই ক্যাপশনে আমার তোলা অন্য আরেকটি ছবি ভুলক্রমে ডিলিট হয়ে গেছে।
(আগের পোষ্টটি নাকি কোন কোনো জায়গা থেকে দেখা যায়নি এটার কি হাল হবে কে জানে। )