somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্যামেরাম্যান, মেকাপম্যান থেকে নিয়ে আয়োজক, বিচারক সবার কাছে নিজেকে সর্বোচ্চ উজাড় করে দাও, মুকুট তোমার মাথায় উঠবেই...

১২ ই আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৪:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১। প্রতিযোগিতার কোরিওগ্রাফার থেকে শুরু করে মেকাপম্যান পর্যন্ত সবাই প্রতিযোগীদের সঙ্গে আপত্তিজনক ব্যবহার করেছে। ইভেন্ট আয়োজকরা বোঝাতে চেয়েছে, নিজেকে যে যতো উজাড় করে দেবে তার স্কোরিং ততো বেশি হবে।
২। এমন এক হোটেলে রাখার ব্যবস্থা করা হয়, যেখানে অসামাজিক কর্মকাণ্ডের স্পস্ট ইঙ্গিত ছিল। হোটেলে আসা খদ্দেরদের অশ্লীল ইশরায় বিব্রত হতে হয়েছে।
৩। প্রতিযোগিতার এক পর্বে বিকিনির মতো স্বল্প বসনে ফটোসেশনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ ফটো দিয়ে নাকি কোন এক ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ করা হবে। সেই খোলামেলা সেশনে অংশ নিতে আপত্তি জানালে ভীষণ দুর্ব্যবহার করা হয়।
৪। সবচেয়ে আপত্তির বিষয় ছিল, মেয়েদের পোশাক ঠিকঠাক করে দেওয়ার জন্য সেখানে রাখা হয় পুরুষ ড্রেসম্যান।


এতদিন ভারতীয় অনুকরণে বাংলাদেশী আয়োজকরা বিভিন্ন নামে সুন্দরী প্রতিযোগীতার আয়োজন করে যাচ্ছিল। এবার বাংলাদেশে সরাসরি ভারতীয়দের উদ্যাগে আয়োজন করা হয় সেই ধরনের একটি প্রতিযোগীতা। নাম মিস এ্যান্ড মিসেস অদ্বিতীয়া। প্রথম পর্ব বাংলাদেশে, দ্বিতীয় পর্ব কোলকাতায়। দুই বাংলা থেকে নাকি একজন করে মিস ও মিসেস অদ্বিতীয়া বাছাই করা হবে। হয়েছেও। কিন্তু সেই প্রতিযোগীতায় চুড়ান্ত পর্বের জন্য বাংলাদেশ থেকে নির্বাচিত তিন জনের একজন আনহা আমিন কৌশলে কোলকাতা থেকে পালিয়ে এসে কিছু তথ্য ফাঁস করেছেন উপরের কথাগুলোর মাধ্যমে।

তিনি জানিয়েছেন, প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে গিয়ে কলকাতায় অনাকাঙ্খিত ও অনৈতিক ঘটনার মুখোমুখি হই। মুসলিম নারী হিসেবে নিজেকে সেই আপত্তিজনক পরিবেশে মানাতে পারি নি বলেই মায়ের অসুস্থতার কথা বলে দেশে ফিরে আসি।” আনহা আমিনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিজয়ী সিলভিয়া আফরিন মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানালেও বলেন, “অচেনা-অজানা জায়গায় কিছু বিব্রতকর পরিবেশের মধ্যে আমাদের পড়তে হয়েছে। এরকম পরিস্থিতি কমবেশি সব রিয়েলিটি শোতে তৈরি হয়।”

সুন্দরী প্রতিযোগিতার অসভ্যতার নামে নারী অবমাননার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সচেতন মহল বলে আসছে। কিন্তু ওসবের আয়োজক ও তথাকথিত প্রগতিবাদীরা ওই প্রতিবাদকে মৌলবাদী কর্মকান্ড ও নারী অধিকারের বিরোধীতাকারী হিসেবে চিহ্নিত করার প্রয়াস চালিয়েছে। অথচ ওই ধরনের একটি প্রতিযোগীতার চুড়ান্ত পর্ব থেকে একজন নারী সেই জন্যেই নিজেকে প্রত্যাহার করে পালিয়ে এসেছেন যা আমরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছি। ওই সব প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্য যে আসলে নারী উন্নয়ন নয় বরং নারীদের ভোগ করার একটা ষড়যন্ত্র, সেটি আবারও প্রমাণিত হয়েছে আনহা আমিনের কথার মাধ্যমে। সুন্দরী প্রতিযোগিতার মুকুট মাথায় পড়ানোর লোভ দেখিয়ে একজন মেয়েকে সামান্য মেকাপম্যান থেকে নিয়ে আয়োজক, বিচারক সহ অর্থাৎ সকল পর্যায়ের পুরুষের কাছে নিজের শরীর, আব্রু, ইজ্জতকে সপে দিতে হচ্ছে। যে যত বেশি দিতে পারবে সে তত বেশি স্কোর পাবে।

আনহা আমিনের বিবেক শেষ পর্যন্ত কথা বললেও বাকী অংশগ্রহণকারীদের বিবেক যে কথা বলেনি তা সিলভিয়া আফরিনের কথা দিয়েই বুঝা যায়। তিনি বা তারা বলেই দিয়েছেন নাচতে নেমে ঘোমটা দেবনা। সব রিয়েলিটি শোতে এসব হয়। অর্থাৎ এসব করেই মুকুট নিতে হয়। প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণকারীরা সাধারণত এসব প্রকাশ করেন না। আলোর নামে নিকষ কালো অন্ধকারের সেই জগতের বাস্তব অভিজ্ঞতা অনেকে চক্ষুলজ্জ্বার কারণেও প্রকাশ করেন না। অথচ যারা অংশগ্রহণ করে তাদের সকলের অভিজ্ঞতা আনহা আমিনের মতোই।

ওই সব প্রতিযোগীতার মূল উদ্দেশ্যই হয় নারীদের পণ্য হিসেবে উপস্থাপন করে ভোগ করা। এরপর যতদিন যৌবন থাকবে ততদিন ভোগ্যপণ্য হিসেবেই সেই নারীকে ব্যবহার করতে থাকবে রঙ্গিন জগতের বিভিন্ন স্বপ্ন দেখানোর মাধ্যমে। এসব যেমন দারুচিনি দ্বীপের নায়িকা খোঁজার প্রতিযোগীতায় করা হয়, তেমন অরুন চৌধুরীদের আনন্দ আলোতেও হয়, আবার লাক্স-চ্যানেল আই এর সুন্দরী প্রতিযোগীতাও ব্যাতিক্রম নয়। সব জায়গায় একই ভাবে নারীদের ভোগ্যপণ্য হিসেবে উপস্থাপন করা হয় এবং যে নারী নিজের আব্রু, ইজ্জতের মাধ্যমে অরুনদের সর্বোচ্চ খুশি করতে পারবে, তিনিই হবেন, সেরা সুন্দরী বা দারুচিনির দ্বীপের নায়িকা।

আনহা আমিন সেই গোগন কথা প্রকাশ করে দিয়েছে, নিজের চাক্ষুস অভিজ্ঞতা দিয়ে। নারীরা কি এখনো সতর্ক হবেনা?

রিলেটেড পোস্ট- প্রয়োজনে আমার মেয়ে বিয়ে করে ফেলুক, কিন্তু ওই জগতে অবশ্যই না!
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৪:২৩
২৬টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×