somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোলাগা থেকে ভালোবাসা...বন্ধুত্ব থেকে প্রেম... (১)

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সকাল ৯:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"একজন মানুষকে চিনতে কতটুকু সময়ের প্রয়োজন? " ফারাহ দুম করে প্রশ্নটা ছুঁড়ে দিয়েছিলো আমার মুখের ওপর....

তুই কি ভাবিস এ ব্যাপারে? - আমি পাল্টা প্রশ্ন করেছিলাম।
উত্তর চেয়েছি দোস্ত, আগে সেটা দে। পরে প্রশ্নের জবাব পাব- বললো ফারাহ।

আমাদের বন্ধুমহলে সবচাইতে বোকাসোকা যে বন্ধুটি তার কাছ থেকে এমন প্রশ্ন শুনে বেশ অবাকই হয়েছিলাম। যাহোক, আমার উত্তর ছিলো, পৃথিবীর সবচাইতে কঠিন কাজ হলো মানুষকে চেনা। দু'টো মানুষ সারাজীবন পাশাপাশি থেকেও কাউকে সম্পূর্ণভাবে চিনতে পারে না, সম্ভবও নয়। কথাগুলো বলতে বলতে বোঝার চেষ্টা করছিলাম আসলে ওর মনের মধ্যে কি চলছে....

বেশ চিন্তিতভাবেই উত্তর দিলো, "হুমম" ।

- কি হয়েছে রে? হঠাৎ এমন কথা?
- নাহ কিছুনা।
- বল না? এত্তো সিরিয়াস একটা প্রশ্ন করলি যে ? কোনও সমস্যা চলছে তমালের সাথে?
- সমস্যা ভাবলে সমস্যা , না ভাবলে সমস্যা'ই না। ওর সাথে সম্পর্কটাই তো সবচাইতে বড় সমস্যা ওর জন্য। আমার আজকেল মনে হয় জোর করেই আমাদের সম্পর্কটা টিকে আছে।
- ওমা! সে কি কথা? তোদের তো কখনোই এমন মনে হয়নি। বরং আমাদের সার্কেলে সবচাইতে সুখি জোড়া হিসেবে আমরা তোদের কথাই ভাবি।
- সুখি? সাত বছর প্রেম করার পর সুখের ডেফিনিশনটা মনে হয় পাল্টে যায়। ইনফ্যাক্ট সবকিছুই বদলে যায়, মানুষটাও।

[বেশ থতমত খেয়ে গেলাম। এধরণের কথাবার্তা আসলেও কখনো ফারাহর মুখে শুনিনি। ঘটনা যাই ঘটুক না কেন, খুব সিরিয়াস কিছু হয়েছে বুঝলাম। ]

- তুই যদি চাস আমাকে বলতে পারিস ফারাহ।
- হুমম
- কি হুমম? কি ভাবছিস?
- তমাল বদলে গেছে রে। অনেক বদলে গেছে।
- এ কথা কেনো মনে হলো তোর? ও কি বলেছে তোকে?
- কিছু বলা লাগেনা রে....বোঝা যায়।
- আজব! এত হেঁয়ালি করিস না তো!! ডিটেইলে বল শুনি।
- গত দুই মাস ধরেই ওর মধ্যে একটা অন্যমনস্কতা লক্ষ্য করছি। আগের মতো যোগাযোগ নেই। মন চাইলে মাঝে মধ্যে ফোন করে। দেখা করতে চায়না। ভেবেছিলাম অফিসে হয়তো কাজের প্রেশার অনেক বেশী। কিন্তু পরে দেখি ব্যাপারটা তাও না।

এই বলে একটু থামলো ফারাহ।
- এক গ্লাস পানি খাওয়া ।
- আচ্ছা আনছি, বলে উঠে ওকে পানি এনে দিলাম।
- পানিটা শেষ করে বললো, এই সম্পর্কটা আর আগাবেনারে।
- কি!!!!
- হুমম
- আবার হুমম???
- আমি কাজের ব্যস্ততা ভেবেছিলাম। পরে শুনি চাকরি বদলেছে। দু'মাস আগেই। কিন্তু আমাকে জানায়নি। একদিন ওর আগের অফিসে ফোন করে শুনলাম। পরে ওকে বলেছিলাম যে কেন জানালে না? ওর জবাব কি ছিলো শুনবি?
- কি?
- তোমার কাছে সবকিছুর এক্সপ্লেইনেশন দিতে হবে?
- আজব!
- হ্যাঁ। নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারছিলামনারে।
- তারপর?
- এটা গত সপ্তাহের ঘটনা। তারপর আমি বেশ জোর করে হলেও ওকে দেখা করতে বললাম। অনেক টাল-বাহানা করলো। পরে গতকাল ওর বাসায় গেছিলাম।
- হুমম।
- আমাকে দেখে ভুত দেখার মত চমকে উঠলো। দোস্ত ৭ বছরের সম্পর্ক। ওর চেহারা দেখেই আমি বুঝে গেছি কিছু একটা ব্যাপার আছে যেটা ও আমার কাছে লুকাচ্ছে। জানিনা কি হলো আমার, আমি সরাসরি ওকে প্রশ্ন করলাম যে, তোমার কি এমন কোনও কথা আছে যেটা তুমি আমাকে জানাতে চাও?
- .......
- ও অনেকক্ষণ চুপ করে রইলো। আমি জানিনা কেনো আমার প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হলো। আই ওয়াজ শাউটিং! "উইল ইউ প্লিজ টেল মি হোয়্যাট দ্য হেল হ্যাপেনড উইথ ইউ?"
- হুমম
- ও মিন মিন করে বললো, "আই ডোন্ট লাভ ইউ এনিমোর। আই ডোন্ট ফিল ফর ইউ নাউ " বিশ্বাস কর!! আমার মনে হলো পায়ের নিচে থেকে মাটি সরে গেছে। হাত পা অবশ হয়ে গেলো। বুকের ভেতরটা একটা মোচড় মেরে হঠাৎ করে একদম খালি হয়ে গেলো! অঝোরে কাঁদছিলাম।


(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৬:৪৫
২২টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×