মনের অসুখ আর শরীরের অসুখ সম্ভবত বিপরীতধর্মী বস্তু। এক প্রজাতির মানুষ হয় নিজের থেকে পালিয়ে বেড়ানোর মতো এক অদ্ভুত গুণ নিয়ে জন্মায়, নিজেকে এক্সপ্লোর করতে গিয়ে বুঝতে পেরেছি আমি অনেকটা সেই প্রজাতিরই মানুষ। মানুষ দেখলে পালিয়ে বেড়াই, আয়নায় নিজের বিম্ব দেখলেও পালিয়েই বেড়াই। আর যেই ঘরে ঝরে পড়তে যাই,সে ঘরের সাথে দীর্ঘকালীন কানামাছি খেলা, ছোঁয়া যায়না, না ছুঁতে পারার অপারগতায় এই খেলার শেষ ও হয়না। এই না ছুঁতে পারার একঘেয়েমির অপারগতা গিয়ে পৌছায় বটের তলে কিংবা অসুখে।
মনের থেকে পালিয়ে বেড়ানোর সবচেয়ে সহজ উপায় গিয়ে ঠেকলো আমার সেই অসুখেই। শুরুতেই যেমনটা বললাম, মনের অসুখ আর শরীরের অসুখের বিপরীতমুখী আচরণ। মনটা অসুখে পড়লেই শরীরটাকে ঝিমিয়ে দিই। খিদেটাকে শোনাই সহজিয়ার গান, আর পা দুটি দুইধারে বনের সবুজ সুবাস মেখে হেলেদুলে চলে এই বড্ড লো প্রেশারে। শরীরটাকে খুব হালকা লাগে তখন। এই রুগ্ন গায়ে তরতর করে বাড়তে থাকা একটা বেসাইজ ভুড়ির বিরক্তি আর চোখে পড়েনা তখন। সহজিয়ারা তখন বড্ড মায়া জাগিয়ে তোলে আকাশের বুকে,শালিকের ডানায়, ঘুঘুর ভয়ার্ত চোখে। অইদিকে চতুর শেয়াল একটু ছুট দেয়,আবার পিছু ফিরে তাকায়,মনের অসুখের মতো করে।
একটু একটু করে বাড়তে থাকে পেটের ব্যথা,মাথার ব্যথা, একটু একটু করে দূর হতে থাকে মনের ব্যথা। কখন কিভাবে যেন তা উবে যায় পুরোপুরি, ক্লান্ত ঘাম ঝড়া গায়ে একটা সিগারেট তখন বড্ড সতেজ প্রভাব। আর সিগারেটের দামের উর্ধ্বগতি তখন ব্যাপক দুশ্চিন্তা জাগায়। চিন্তা করতে করতেই ফুরোয় সিগারেট, পকেটে তাকিয়ে বুঝতে হয় আজকের মতো চিন্তা এখানেই থামুক নাহয়।
এইসব প্রিটেন্ডিং দিনকালের উপকরণ হিসেবে একটু খিদে কিংবা লো প্রেশার কিন্তু ব্যাপার না, ব্যাপারটা গিয়ে দাঁড়ায়, এই ব্যথা সয়ে গেলে যে ফিরে চাওয়া দায়! আমি তো মানুষ, সহজিয়ার গানগুলোর ফ্রিকোয়েন্সিগুলাকে চোখ বন্ধ করে হাত বুলাই মায়ায়, আমাকে যে ফিরে চাইতেই হয় ঘর। ঘরের ভেতর বোকাবাক্সে বন্দী আমার সুদিন
১৪-১০-২১
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:২৮