somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোরবানীর পশুর চামড়া !!!

২০ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১২:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পশুর চামড়ার সাথে আমাদের সাধারণ জনগনের বছরে ২ বার যোগাযোগ হয়।
১ - কোরবানী শেষে আমরা পশুর চামড়া বাড়ির বাইরে ফেলে রাখি। এতিমখানা থেকে এসে নিয়ে যাবে বলে।
২ - দিন দুই পরে এলাকার এতিমখানা থেকে সেই চামড়ার বিক্রয় মূল্যের অর্ধেক টাকা সংগ্রহ করি। দরিদ্রদের বিলিয়ে দিবো বলে।



এলাকার এতিমখানার নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে চামড়া সংগ্রহের আরো কিছু কাজের ফিরিস্তি আমি জানি।
কোরবানীর পশুর চামড়া সংগ্রহের জন্য প্রস্তুতি নিতে হয় অনেক দিন আগে থেকেই।

# কোরবানীর পশুর চামড়া এতিমখানার জন্য দান হিসেবে চেয়ে লিফলেট-পোস্টার-ব্যানার ছাপাতে হয়, এবং সেগুলি বিতরনের ব্যবস্থা করতে হয়।

# কোরবানীর পুশুর চামড়া সংগ্রহের জন্য রশিদ বই ছাপাতে হয়।

# জেনারেল মিটিং ডেকে এলাকায় মাইকং করতে হয়। সদস্যদের চিঠি পাঠাতে হয়।
# জেনারেল মিটিং-এ যারা উপস্থিত হন তাদের আপ্পায়নের ব্যবস্থা করতে হয়। (করনার কারণে এখন বন্ধ আছে।)

# এলাকাবাসীর ক্রয়কৃত পশুগুলি কোরবানী করে দেয়ার ব্যবস্থা করতে হয়।
# তারজন্য এতিমখানা ও মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষদের অনেকের ছুটি বাতিল করতে হয়।
# কোরবানী শেষে তাদের নিজ-নিজ বাড়িতে (গ্রামে) ফিরে যাওয়ার জন্য ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হয়। সেই ভাড়াও সাধারন সময়ের চেয়ে অনেক বেশী হয়ে যায়।
# কোরবানী সম্পন্ন করতে তারা যে শ্রম দেয় তার জন্য কিছু হাদিয়া দিতে হয়।

# এলাকার প্রায় ২০টি মসজিদের খতিব-ইমাম-মুয়াজ্জিন সাহেবরাও কোরবানীর কাজে অংশ নেন বলে তাদের জন্যও কিছু সম্মানী পাঠাতে হয়।

# এলাকার প্রতিটি মসজিদের মসজিদ কমিটির সভাপতি বরাবর চিঠি পাঠাতে হয়।

# পুরনো ছুড়ি ধার করাতে হয়।
# পুরনো কিছু ছুড়ি বাতিল হয়। সেগুলির পরিবর্তে নতুন ছুড়ি তৈরি করতে হয়।
# ছুড়ির হিসাব-নিকাশ থানায় ইনফর্ম করতে হয়।

# কোরবানী শেষে বাড়ির বাইরে ফেলে রাখা চামড়া রশিদের মাধ্যমে সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট স্থানে জড়ো করার জন্য অনেকগুলি ভ্যান গাড়ি ও পিকাপ ভাড়া করতে হয়।
# চামড়া সংগ্রহের কাজে ছাত্র ও শিক্ষকদের সাথে আর কিছু শ্রমিক নিয়োগ দিতে হয়।

# কোরবানী পশুর চামরা সংগ্রহ করে যেখানে জমা করা হয় সেখানে ছাউনির ব্যবস্থা করতে হয়। লোকজন বসার জন্য সেখানে টেবিল চেয়ার রাখতে হয়।

তারপর বিকেল থেকে অপেক্ষা করতে হয় চামড়া কেনার পাইকারদের জন্য।

এই সমস্ত কাজ গুছিয়ে আনতে যে পরিমান খরচ হয় তাতে করে দেখা যায় চামড়া প্রতি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকার মতো খরচ পরে যায়। কমিটির সদস্য যে শ্রম আর সময় দেন তার হিসাব বাদ রইলো। কারণ তারা স্বেচ্ছায় এই শ্রম দেন, কোনো রকম সম্মানী বা ভাতা তারা নেন না।

একটা সময় ছিলো যখন আমরা ছোট ছিলাম তখন দেখতাম একটি গরুর চামড়া ২,২০০ থেকে ২,৫০০ টাকা বিক্রি করা হতো। এতিখানা চামড়া বিক্রি করে বিক্রয় মূল্যের অর্ধে এতিমদের জন্য রেখে বাকি অর্ধেক গরুর মালিকদের দিয়ে দিতেন যাতে গরুর মালিকেরা তাদের পরিচিত দরিদ্রদের মাঝে তা বিতরন করতে পারেন। কিন্তু এখন সেই চিত্র পালটে গেছে।

এখন বর্তমানে একটি গরুর চামড়ার বিক্রয় মূল্য পাওয়া যায় ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। (এবছর কি হবে কে জানে!!)
মহিষের চামড়ার বিক্রয় মূল্য পাওয়া যায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা।
ছাগলের চামড়ার বিক্রয় মূল্য পাওয়া যায় ২০ থেকে ৩০ টাকা।
কখনো কখনো মহিষ ও ছাগলের চামড়া বিক্রিকরা সম্ভব হয় না, তখন ফ্রী দিয়ে দিতে হয়।

ফলে গত প্রায় ৩ বছর যাবত আমরা ইচ্ছে থাকলেও গরুর মালিককে চামড়ার টাকার অংশ দিতে পারছি না।

গরিবের হকের, এতিমের হকের এই চামড়ার মূল্য নিয়ে যারা কারসাজি করছেন তাদের জন্য উচিত মূল্য নির্ধারিত হয়ে আছে আল্লাহর দরবারে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১২:৩৭
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×