শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা গয়েন্দা চরিত্র ব্যোমকেশ বক্সীর সাথে পাঠকের প্রথম পরিচয় হয় পথের কাঁটা গল্পটি দিয়ে। এর পরের গল্প সীমন্ত-হীরা লেখার পরে শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যোমকেশ বক্সীকে নিয়ে সিরিজ লিখবেন ঠিক করেন এবং ১৩৩৯ বঙ্গাব্দের ২৪শে মাঘ সত্যান্বেষী গল্পের মধ্য দিয়ে পাঠকের সাথে গয়েন্দা হিসেবে ব্যোমকেশ বক্সীকে পরিচয় করিয়ে দেন। তাই সত্যান্বেষী গল্পটিকে ব্যোমকেশ সিরিজের প্রথম গল্প ধরা হয়। প্রথম ধাপে তিনি ব্যোমকেশকে নিয়ে ১০টি গল্প লিখে সিরিজটি বন্ধ করে দেন। তারপর ১৫ বছর বিরতীর পরে আবার লিখতে শুরু করেন ব্যোমকেশকে নিয়ে। সব মিলিয়ে ৩৩টি গল্প তিনি লিখেছিলেন। শেষ গল্প বিশুপাল বধ অসমাপ্ত থেকে গিয়ে ছিলো। পরে সেটিকে নারায়ণ সান্যাল শেষ করেন।
গোয়েন্দা কাহিনী নিয়ে তৈরি হওয়া সিনেমা, নাটক আর ওয়েব সিরিজের মধ্যে আমার কাছে ব্যোমকেশ বক্সীর কাহিনী গুলিই বেশী ভালো লাগে। অনেকদিন আগে অনির্বাণ ভট্টাচার্যের অভিনীত হইচই ওয়েব সিরিজ ব্যোমকেশ দেখেছি আমি। অসাধারন লেগেছিলো। সেই সিরিজটি সম্পর্কেই লিখবো।
হইচই ওয়েব সিরিজ ব্যোমকেশ এর সিজন ১ এর প্রথম পর্বে একসাথে দুটি কাহিনী দেখানো হয়, সত্যান্বেষী এবং পথের কাঁটা।
প্রথম কাহিনী সত্যান্বেষীতে লেখক অজিতের সাথে পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয় ব্যোমকেশের। সেখানে একজন হোমিওপ্যাথি ডাক্তার গোপনে কোকেন ব্যবসায় ও কয়েকটি হত্যা কান্ড চালালে ব্যোমকেশ তাকে ধরে ফেলে।
দ্বিতীয় কাহিনী পথের কাঁটাতে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে অভিনব কায়দায় একজন লোক গ্রামফোনের পিন দিয়ে লোকদের হত্যা করছিলো। ব্যোমকেশ অজিতকে সাথে নিয়ে হত্যা রহস্যের অনুসন্ধানে নামে। হত্যাকারী ব্যোমকেশ এবং অজিতকেও হত্যা চেষ্টা করে। কিন্তু ব্যোমকেশ সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে রহস্যের উন্মচন করে।
সিজন ১ এর দ্বিতীয় পর্বেও একই সাথে দুটি কাহিনীকে চলমান দেখানো হয়। কাহিনী দুটি হচ্ছে মাকড়সার রস এবং অর্থমনর্থম।
প্রথম কাহিনী মাকড়সার রসতে পক্ষাঘাতগ্রস্ত অচল একজন বৃদ্ধ নিজের ঘরে বসে থেকেই কি করে যেনো বিশেষ এক প্রকার মাকড়সার রস জোগাড় করে সেটি দিয়ে নেশা করছিলো। ব্যোমকেশ তার লেখক বন্ধু অজিতকে দিয়ে সেই রহস্যের সমাধান করায়। কারণ ঠিক সেই সময়েই ব্যোমকেশ অর্থমনর্থম নামের অন্য আরেকটি হত্যা রহস্যের কিনারা করছিলো। সম্পত্তির লোভে একজন নিঃসন্তান লোককে হত্যা করে তারই আশ্রীত আত্মীয়দের কেউ একজন। সমস্ত তথ্য প্রমান থেকে খুব সহজেই বুঝা যাচ্ছিলো কে খুনি। কিন্তু প্রকৃত খুনিকে ব্যোমকেশ ঠিকই ধরে ফেলে। সেখানেই ব্যোমকেশের পরিচয় হয় সত্যবতীর সাথে। পরে ব্যোমকেশ সত্যবতীকে বিয়ে করে।
সিজন ১ এখানেই শেষ হয়। সিজন ২ এর কাহিনীগুলি আগামী পর্বে পেশ করবো।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:২৭