বিষকাটালি অর্থ- যা বিষ বা আঘাত নষ্ট করে।
কয়েক বছর আগে বান্দরবানের পাহাড়ে বেড়াতে গিয়ে সেই চিম্বুক পাহাড়ে দেখতে পেলাম কিছু বিষকাটালি ফুল ফুটে আছে। গাছ দেখে সহজেই বুঝা যাচ্ছিলো এগুলি বিষকাটালি। তবে ঠিক সমতলের বিষকাটালি বলা যাবে না। ফুল আর গাছে বেশ কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।
বিষকাটালি একটি বিরুৎ ঔষধি উদ্ভিদ। এই প্রজাতির অনেকগুলি উদ্ভিদ আমাদের দেশে দেখতে পাওয়া যায়। তাদের অনেকগুলির গাছ-পাতা ও ফুলে বেশ স্বাদৃশ্য রয়েছে।
বিষকাটালি নামে আমাদের দেশের বেশ কিছু গাছ পরিচিত। এ গাছগুলির কোন কোনটি একবর্ষজীবি আবার কোন কোনটি বহুবর্ষজীবি। এরা আকারে ছোট, এদের কাণ্ড নরম, সরল শাখাযুক্ত, অনেক শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট বিরুৎ উদ্ভিদ।
ডোবা বা জলাশয়ের ধারে, বাড়ির আশেপাশে, খাল বা নদীর আশেপাশে ভেজামাটিতে ঝোপের মতো জন্মে থাকে। একবার জন্মালে সহজে নির্মূল করা যায় না। এরা সকলেই সকলেই পার্সিকারিয়া (Persicaria) জেনাসের অনর্ভুক্ত। যেখানে জন্মে সেখানে খুব ঘন সন্নিবেশিতভাবে থাকে। বিষকাটালির পাতা একক, সম্পূর্ণ ও সুক্ষ্ণাগ্র। কান্ডের নিচের অংশ থেকে শিকড় বের হয়ে মাটির সাথে আকড়ে থাকে।
এদের অট্রিলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইউরোপ, এশিয়ার নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল এবং উত্তর আমেরিকায় প্রচুর জন্মাতে দেখা যায়। তবে এর আদি বাসস্থান সম্ভবতো ভরতে।
বাংলা নাম : বিষকাটালি
Common name : Bearded Knotweed, water milkwort, Oriental Pepper, Prince's feather,Tall Persicaria
Scientific Name : Persicaria barbata বা Persicaria hydropiper
এরা প্রাকৃতিকভাবেই জন্মে থাকে। বিভিন্ন গাছে বিভিন্ন আকার ও রঙের ফুল ফোটে। নভেম্বর মাসে বীজ পরিপক্ক হয়ে মাটিতে ঝরে পরে। বীজের রং কালো। ঝরে পরা বীজের মাধ্যমেই পরিবর্তী সময়ে প্রকৃতিক ভাবেই বংশ বিস্তার হয়।
বিষকাটালির সম্পূর্ণ উদ্ভিদ, পাতা ও বীজ ঔষধী হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
বিষকাটালির পাতার রস রক্তপাত বন্ধ করে।
পাতার রস ১-২ চামচ খেলে রক্ত বমি ও আমাশয়ে উপকার পাওয়া যায়।
ফোঁড়া ফাটানোর জন্য এর ব্যবহার হয়ে থাকে।
পায়ের আঙ্গুলের চিপায় ঘা হলে এই গাছ বেটে লাগিয়ে দিলে অতি সহজেই আরোগ্য হয়।
গরুর শরীরে উকুন হলে শোয়ার জায়গায় বিষকাঁটালি বিছিয়ে দিলে উকুন দূরীভূত হয়।
তিন বছরের নীচের শিশুদের ও গর্ভবতী মায়েদের খাওয়া নিষেধ।
ছবি তোলার স্থান : চিম্বুক, বান্দরবান, বাংলাদেশ।
ছবি তোলার তারিখ : ২৭শে ফেব্রুয়ারি ২০২০ খ্রিষ্টাব্দ।
তথ্য সূত্র : বাংলাপিডিয়া, উইকিপিডিয়া, অন্তর্জাল।
ছবি ও বর্ণনা : নিজ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:২০