দুপুরমনি
অন্যান্য ও আঞ্চলিক নাম : কটলতা, বন্ধু, বন্ধুক বন্ধুলী, বন্ধুজীব, কুপুরিয়া দুপুরিয়া, দুপারশেন্দ্রী, দুপাহরিয়া, দুপুর মালতি, দুপুরচণ্ডি, বনদুলি, বন্দুক, বন্দুকা, বন্ধুক, বাধুলিপুষ্প, মধ্যদিনা, রক্তক, শরৎপুষ্প, সূর্য মনি।
Common Name : Copper Cups, Duparshendri, Florimpia, Midday Flower, Noon Flower, Scarlet Mallow, Scarlet Mallow, Scarlet Pentapetes, Scarlet Phoenician
Scientific Name : Pentapetes phoenicea (পেন্টাপেতেস ফেনিসিয়া)।
দুপুরমনি, দুপুরিয়া, দুপারশেন্দ্রী, দুপুর মালতি, দুপুরচণ্ডি, মধ্যদিনা, সূর্য মনি ইত্যাদি বাংলা, হিন্দী, সংস্কৃতি নামগুলি থেকে সহজেই বুঝা যায় এই ফুলের সাথে দুপুরের কোনো সম্পর্ক আছে। তাছাড়া ইংরেজী নাম Midday Flower, Noon Flower থেকেও একই ধরনের ইংগিত পাওয়া যায়। মূলত দৃষ্টি নন্দন এই চমৎকার ফুলটি দুপুর বেলায় তার রূপের ডালি সাজিয়ে বসে। দুপুর গড়িয়ে বিকল হলেই যৌবন হারিয়ে চুপসে যেতে শুরু করে। তাই আমার মতে দুপুরমনি নাম এই ফুলটির শতভাগ যথার্থ হয়েছে।
দুপুরমনি Malvaceae (মালবাসেই) পরিবারের একটি একবর্ষজীবি গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। দুপুরমনি গাছের আদিনিবাস দক্ষিণ এশিয়া; পরে এটি সমগ্র দুনিয়াতে ছড়িয়ে পরেছে। গাছটি একহারা লম্বা, ১ থেকে ৪ ফুট উঁচু হতে দেখা যায়। গাছে খুবই কম ডালপালা থাকে। শাখাগুলি হয় লম্বাটে। গাছে ২ থেকে ৪ ইঞ্চি লম্বা সরু চোখা পাতা হয়। পাতাগুলির কিনারা করাতের দাঁতের মতো খাঁচকাটা হয়।
দুপুরমনি ফুলটি দেখতে খুবই সুন্দর। সাধারনত ফুল গুলি উজ্জ্বল সিঁদুরে লাল রঙের হয়। তবে কখনো কখনো হালকা গোলাপী এবং সাদা রঙের দুপুরমনি ফুলও চোখে পড়ে। তবে আমাদের দেশে লাল রঙের ফুলের দেখা মিলে বেশি। অনিন্দ্য সুন্দর এই ফুলটি চোখে পড়লে পথিক দ্বিতীয়বার ফিরে তাকাতে বাধ্য। তবে ফুলগুলি দেখতে যত সুন্দরই হোক এদের কিন্তু কোন ঘ্রাণ নেই।
দুপরমনি ফুল খুব বেশী বড় হয় না, আবার একেবারে খুব ছোটও নয়। ফুলের পাপড়ি প্রায় ২ সেন্টিমিটার চওড়া হয়। প্রতিটি ফুলে পাঁচটি করে চ্যাপ্টা পাপড়ি থাকে। পাপড়িগুলি নরম আর কোমল । ফুলের কেন্দ্র থেকে কয়েকটি উপাঙ্গ পরাগদণ্ডকে ঘিরে পাপড়ির বাইরে বেরিয়ে থাকে। সেগুলিতে হলদে রঙের পরাগরেণু লেগে থাকে। সব মিলিয়ে ফুলটির রূপ যেনো আর বেড়ে যায়।
দুপরমনি বর্ষার ফুল। ফুল ফোটার প্রধান মৌসুম বর্ষা কাল হলেও এর ব্যাপ্তি হেমন্তকাল অবধি হয়ে থাকে। ফুল শেষে গাছে খাওয়ার অযোগ্য ৫ প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট প্রায় গোলাকার ফল হয়। রং প্রথমে সবুজ এবং পরিপক্ব ফল কালচে রং ধারণ করে। পরিপক্ব ফলের প্রতিটি প্রকোষ্ঠে ৮ থেকে ১২ টি করে বীজ থাকে। বীজ থেকে খুব সহজেই চারা জন্মে। অতিতে গ্রামাঞ্চলে পথের ধারে, ঝোপ-জঙ্গলে কোনো রকম যত্ন ছাড়াই দুপুরমনি গাছ দেখা যেতো। তবে বর্তমানে আগের মতো প্রকৃতিতে এদের অহরহ দেখা মেলে না। আজকাল শহরের শৌখিন বাগানে শোভা বর্ধনের জন্য এদের লাগানো হয়।
ভেষজ চিকিৎসায় দুপুরমনি গাছের পাতা, মূল, ফুল ব্যবহার হয়।
ছবি তোলার স্থান : উত্তর বাড্ডা, ঢাকা, বাংলাদেশ।
ছবি তোলার তারিখ : ২রা নভেম্বর ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দ।
তথ্য সূত্র : উইকিপিডিয়া, অন্তর্জাল।
ছবি ও বর্ণনা : নিজ।
এবং গোলাপি ফুলটির
ছবি তোলার স্থান : মুনসিগঞ্জ, বাংলাদেশ।
ছবি তোলার তারিখ : ১৯/০৫/২০১৭ ইং
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩৯