শেষবার কান্তজীউ মন্দির, নয়াবাদ মসজিদ, প্রত্নতত্ত্ব জাদুঘর দেখতে দিনাজপুর গিয়েছিলাম। আমার মধ্যে অসাধারণ ঘোরের জন্ম হয়েছিলো। কি স্থির, শান্ত পরিবেশ। সুস্থ বোধ করছিলাম অনেকদিন পর।
প্রাইমারিতে চাকরি করার ফলে কলিগদের মধ্যে যখন একজন সিনিয়র জিজ্ঞেস করলেন এইবারের বন্ধে কোথাও যাবো কিনা তখন আমি বললাম উত্তরে যাবো। বেতনের অপ্রতুলতায় সবাই যখন ধুকছে তখন এটা বলতে আমার কিছুটা ইতস্ততই লাগছিলো। অনেকে টিপ্পনী করতেও ছাড়লেন না। বউ থাকলে ঘাড়টা ভাংতো। এমন বাউন্ডুলে আর বিলাসীতার ইতি টানতে সিনিয়র ম্যামদের ভালো প্রয়াস ছিলো। আমাকে ভীষন পছন্দ করেন ছোট ভাইয়ের মতো। কিছুটা প্রশ্রয়ের সুযোগ আমার নেয়া উচিত। কিন্তু আমি নেই না। এটা আমার জন্য বিলাসীতা নয়। আমি না হয় মারা পড়বো বলেই বন্ধ পেলেই একা বেড়িয়ে পড়ি। আমার পিছুটান নেই, ঝাড়া হাত-পা। যাই হোক। ম্যামদের আবার হতাশ করে দিয়ে সংসারের প্রতি বিন্দুমাত্র ইচ্ছা প্রকাশ না দেখিয়ে আবার একা বেরিয়ে পড়লাম।
প্রতিবারের মতো হলো না। এইবারে আমার একজন সুইট ছোট ভাই জুটে গেলো। এইবার একা বেরোনো হবে না ভয়ে সুক্ষ ভাবে তাকে ভয় দেখিয়েছি পর্যন্ত। নাহ! সে আমার চেয়ে দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে ছুটি নিয়ে ফেলেছে। ঘর থেকে বেরুতেই হঠাৎ কালো হয়ে খানিক বাতাসের ঘুর্ণি দেখে আমার অলস মন বৃহস্পতিবারের ক্লান্তি বিছানায় বিলিয়ে দেবার চিন্তা করেছিলো স্বীকার করছি। কিন্তু ভাই আমার কল দিয়ে তা নস্যাৎ করে ফেলল। প্রকৃতিও আসন্ন ঝড়ের আভাস দিয়েও রোদমাখা বিকেল তৈরিতে মনযোগ দেয়াতে আমিও বের হয়ে গেলাম। সাথে ক্যামেরা, ইন্সটা৩৬০ একশন ক্যাম আর বিভুতিভুষণের তারানাথ তান্ত্রিক সমগ্র। বগুড়া যাবার প্ল্যান প্রথমে। ঢাকা থেকে অনুজকে তুলে নিয়ে দুজনে মিলে ঠিক করবো কি করা যায়। প্রতিবারের মতো এইবারো জানিনা কোথায় ভাড়ায়, কোথায় খরচে ঠকতে হবে। কি করলে খরচ একটু কমবে। কিন্তু তাতে কখনো আমার যাত্রা থামেনি। আমি অনেকদিন ঘরে ফিরবো না। এটা আমি জানি।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৮:৪৬