somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ড. ইউনূসের ক্ষমতার রাজনীতি: কীসের ইঙ্গিত দিচ্ছে আজকের বাংলাদেশ?

১৩ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ৮:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ড. ইউনূসের ক্ষমতার রাজনীতি: কীসের ইঙ্গিত দিচ্ছে আজকের বাংলাদেশ?
– একজন সাধারণ নাগরিকের দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ

আমি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী নই, নই কোনো স্বীকৃত রাজনৈতিক বিশ্লেষক। তবে একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে যখন দেশের পরিস্থিতির দিকে তাকাই, বিশেষ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের রাজনৈতিক ভূমিকা, ক্ষমতার কৌশল ও বিদেশি সংযোগ দেখি, তখন আমার কাছে এটি আর সাধারণ রাজনৈতিক ঘটনা বলে মনে হয় না। বরং এটি এক গভীর পরিকল্পিত প্রক্রিয়ার অংশ, যার লক্ষ্য দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু দখল করে রাখা।

ড. ইউনূসের রাজনীতির প্রতি আকর্ষণ নতুন নয়
ড. ইউনূস একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, যার কর্মভিত্তি মাইক্রোক্রেডিট বা ক্ষুদ্রঋণ। তবে তার রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা একেবারেই অপ্রত্যাশিত নয়। ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তিনি সরাসরি রাজনীতিতে প্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন। ঘোষণা দিয়েছিলেন "নাগরিক শক্তি" নামে একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গঠনের। তখন দেশে চলছিল তথাকথিত "মাইনাস-২ ফর্মুলা" যার উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে এক নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার সূচনা করা।

ড. ইউনূস সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। যদিও তখন তার এই পরিকল্পনা সফল হয়নি, তবে প্রমাণ পাওয়া যায় যে তার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল রাষ্ট্রক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করা।

বিদেশি সংযোগ ও এজেন্ডা বাস্তবায়নের আশঙ্কা
বর্তমানে বাংলাদেশে অনেকেই মনে করছেন, ড. ইউনূস কেবল দেশীয় রাজনীতির অংশ নন তিনি বিদেশি স্বার্থ রক্ষা ও বাস্তবায়নের এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। বিভিন্ন সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, এমনকি জাতিসংঘের নানান মহলে তার সক্রিয় উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

বিশেষ করে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলের চাপ সৃষ্টি করা, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র নিয়ে বিবৃতি দেওয়া, এবং বিদেশি মিডিয়াতে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল ও স্বৈরাচারী রাষ্ট্র হিসেবে উপস্থাপন করা এসব কর্মকাণ্ডে ড. ইউনূসের ছায়া লক্ষ করা যায়।

ক্ষমতার কৌশল: সরাসরি নয়, কিন্তু প্রভাব বিস্তারকারী
বর্তমানে তিনি সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নন, কিন্তু "ব্যাকডোর" রাজনীতি করে দেশের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় প্রভাব রাখার চেষ্টা করছেন বলে ধারণা করা যায়। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে তার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের বসানো, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে একটি "গণতান্ত্রিক রক্ষাকর্তা"র ভাবমূর্তি গঠন, এবং সরকার বিরোধী জোটগুলোর নেপথ্যে সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করা এগুলো তাকে নিঃসন্দেহে এক ‘দৃশ্যমান-অদৃশ্য ক্ষমতা’র প্রতীক করে তুলছে।

সহজে ক্ষমতা ছাড়বেন না ইঙ্গিত স্পষ্ট
বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মনে হয় না যে ড. ইউনূস এত সহজে এই ক্ষমতার আসন ছেড়ে যাবেন। বরং তিনি ধাপে ধাপে দেশকে এমন এক পথে নিতে চাচ্ছেন যেখানে বিদেশি স্বার্থ, দমনমূলক নীতিমালা, গণতন্ত্রের নামে নিয়ন্ত্রিত রাজনীতি এবং একটি বিশেষ শ্রেণির আধিপত্য প্রতিষ্ঠা পাবে।

গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ কোথায়?
যদি সত্যিই এমন চক্রান্ত চলমান থাকে, তবে এর সবচেয়ে বড় ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ মানুষ। কারণ যে কোনো অগণতান্ত্রিক শাসন বা কৃত্রিমভাবে ক্ষমতা দখলের প্রচেষ্টা শেষমেশ জনগণের অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং জাতীয় স্বার্বভৌমত্বের ক্ষতি করে।

সময় এখনও আছে সচেতনতা ও প্রতিরোধ জরুরি
ড. ইউনূস ব্যক্তিগতভাবে সফল মানুষ হতে পারেন, কিন্তু একটি দেশের ভবিষ্যৎ ব্যক্তি নয়, জনগণের ইচ্ছা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্ধারিত হওয়া উচিত। দেশের মানুষ যদি সময় থাকতে সচেতন না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে হয়তো ইতিহাস আমাদের আরেকটি পর্ব দেখাবে যেখানে উন্নয়ন নয়, থাকবে নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র, বিদেশি স্বার্থ এবং একটি অদৃশ্য শাসনের রূপ।

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ৮:৩৩
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×