জাপানে যাওয়ার পর প্রথম যে সকল বিষয় শেখানো হয় তার মধ্যে অন্যতম ভূমিকম্পকালীন সতর্কতা। সেরকম একটা ট্রেনিংএ ট্রেইনার আমাদের জিজ্ঞাসা করল ভুমিকম্প হলে প্রথমে কি করবে? আমি উত্তরে বল্লাম যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঘর থেকে বের হয়ে ফাকা জায়গায় যাব; শুনে ওরা সবাই খুব অবাক হয়েছিল। বল্ল, এটা তুমি কোথায় পেয়েছ!! আমার যতদুর মনে পড়ে ছোট বেলায় আমাদের সেভাবেই শেখানো হয়েছিল। গতকালও শুনলাম ভূমিকম্পের সময় অনেকেই হুড়াহুড়ি করে বাসার নিচে নামতে গিয়ে আহত হয়েছেন, দু'জন মারাও গেছেন। এটা খুবই বোকামী। ভূমিকম্প সাধারণত স্থায়ী হয় কয়েক সেকেন্ড, সেটা হয় হঠাত করে, আর বাসার নিচে যেতে উচ্চতা ভেদে কয়েক মিনিট লেগে যায়। তাই বাসার নিচে ফাকা যায়গা যাওয়ার চেষ্টা করে সরু সিড়িতে আটকা পড়ার কোন মানে হয় না। হঠাত ঘুম ভেঙ্গে দৌড় দেওয়াতে হার্ড এর উপর চাপ পড়তে পারে, বিশেষ করে বাচ্চাদের ভিতর এটা প্রচন্ড ইফেক্ট করে। তাই আতংকিত না হয়ে হাতের কাছেই কোথাও আশ্রয় নেওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ। প্রথমে সেইফ করতে হবে মাথা, তারপর সম্ভব হলে সমস্ত শরীর।
সাধারনভাবে বলা যায় ভূমিকম্পে বিল্ডিং আপনার মাথার উপর ভেঙ্গে পড়ার সম্ভাবনা ০.০১%; আর আল্লাহ না করুক সেটা যদি কখনো হয়েই যায় তাহলে ছুটাছুটি না করে বরং খাস দিলে তাড়াতাড়ি তওবাটা পড়ে নেওয়াই উত্তম! ভূমিকম্পে অধিকংশ সময় যা হয় তা হলো ঝাঁকুনিতে নিজে পড়ে গিয়ে অথবা বাসার আসবাপত্র বা ছাদের প্লাষ্টারের আঘাতে আহত হওয়া। তাই এর থেকে সরবাজ্ঞে নিজেকে সাম্লাতে হবে।
ভূমিকম্পের সতর্কতা বিষয়ে দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা মন্ত্রালয়ের এই সাজেশন গুলো খুব ভাল। আমি শুধু একটা পয়েন্ট যোগ করব, ভুমিকম্পের সাথে সাথে টেলিফোনে আশেপাশে সবার খোজ নেওয়া ভাল কিন্তু আপনার খাট কিভাবে দোলনা হয়ে আপনাকে দুলাল বা আপনার কুম্ভকর্ণ বন্ধু কিছুই টের পায়নি বলে তাকে ঠাট্টা করার মত খাজুরে আলাপ মোবাইলে না করায় ভাল; কারন এই সময় মোবাইল লাইনে জ্যাম স্রিষ্টি করা অন্যের জন্য জীবন-মরন সমস্যা হতে পারে।
আল্লাহ আমাদের সবাই কে হেফাজত করুন!
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৫৩