somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

**আমি অপ্টিমিস্ট হয়ে আজকে আপনার কাছে প্রার্থনা করি** (খোলা চিঠি)

০৬ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মর্কট এই রাষ্ট্র যন্ত্রের কর্মকাণ্ড কোন কালেই কি নিরপেক্ষ ছিল? রাজনৈতিক মস্তিষ্ক খাটিয়ে হেড অব দ্যা গভর্নমেন্ট আপনি চ্যাম্পিয়ন অব দ্যা আর্থ হতে পারেন তো বটে, নারী ক্ষমতায়নে আপনার রাষ্ট্র সর্বদা জাগ্রত এমন বুলি আওড়ে যেতেও পারেন বটে, তবে ৬ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করায় দুয়ারে দুয়ারে বিচার চেয়ে ঘুরছে বাবা, তা নিয়ে আশ্বাস বক্তব্য অবধি রাখার সময় আপনার কি হয় না?

ধর্ষণের পরে শিশুকে খুঁজে পেলে তার মা-বাবাকে সে শিশু সুলভ আচরণেই কান্না করতে করতে ঘটনার বর্ণনা করেছিলো। ঐ কষ্ট শুধু মা-বাবাই বুঝতে পেরেছিল এবং পারে। আপনিও তো মা। তো কেন বুঝতে পারছেন না?

রাষ্ট্র যন্ত্র আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে এমন সংবাদ নামের প্রোপাগান্ডা রোজই চোখে পড়ে পত্রিকার পাতায়। কিন্তু সেখানে সেই আইনের ব্যবহার করে সোহাগি জাহান তনূ, দীপা, আফসানা আপুসহ অসংখ্য খুনের কোন কিনারা এখনো করা সম্ভব হয়নি। বরং বলা চলে বরাবরই ধামাচাপা দেয়ার অগ্রতি ৭৫% নিশ্চিত ছিল।

ওদেড় তো মরে গিয়ে বেঁচে যাওয়ার মত অবস্থা। জীবিত থেকে কোন বাঁচার মতই বা বেঁচে আছি? পাঁচ বছরের পূজার যৌনাঙ্গ কেটে বড় করে সতীত্ব হরণ করা হয়, বাসের মাঝে একা নারীকে নিরাপত্তা দিতে পারেনি আইন।
বিলাইছড়ির মারমা দুজন বোনকে তো তুলে নিয়ে গেলো। সতীত্ব হরণ খোদ তারাই করলো, যাদের কাছে নিরাপত্তা চাওয়ার কথা।

বিবিসি সম্প্রতি ২০১৮ তে একটা আর্টিকেল প্রকাশ করেছে। সেখানে শিরোনাম ছিল 'গালি দেয়, গায়ে হাত দেয়, প্রতিবাদ করলে চাকরি নাই'
প্রতিবেদন মোতাবেক, তৈরি পোশাক কারখানায় ৮০ শতাংশের বেশি নারী শ্রমিক গালিগালাজ, হুমকি এবং ধমকসহ বিভিন্ন ধরণের মানসিক নিপীড়নের শিকার হন। প্রতিবাদ জানাতে গেলেই চুরির অপবাদ দেয়া হয়, সাথে চাকরি থেকে বরখাস্তও বটে হতে হয়।

বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের একটা রিপোর্ট অনুসারে ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর অবধি দশ মাসে নারী নির্যাতনের তথ্য এই যে,
শারীরিক নির্যাতনের শিকার = ৫,৫৮৩ জন
আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন = ৭৫৭ জন
মানসিক নির্যাতনের শিকার = ৬২৮ জন
অন্যান্য ধরনের নির্যাতনের শিকার = ৮৮৮ জন।
তবে ব্র্যাকের মতে, এই সংখ্যা মূলত আরও অনেক বেশি। কারণ পাশবিক সামাজিকতার প্রভাবে ভিক্টিম নারী ও তার পরিবার সমাজে নিজেদের মর্যাদাহানীর আশঙ্কায় ঘটনা প্রকাশ করে না। ব্র্যাক ও ইউএনডিপি’র উদ্যোগে ৪৪টি ইউনিয়নে পরিচালিত এক মাঠ পর্যায়ের জরিপে দেখা গেছে, নারীর প্রতি সহিংস ঘটনার ৬৮ শতাংশই নথিভুক্ত হয় না।

গেলো বছরের ১৪ মার্চ, ২০১৭ ব্র্যাকের আরেকটা গোলটেবিল বৈঠকে ব্র্যাক পরিচালিত নারী নির্যাতনের ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণে ব্র্যাকের সামাজিক ক্ষমতায়নের কর্মসূচির (সিইপি) কর্মসূচি প্রধান ফারহানা হাফিজ একটা রিপোর্ট তুলে ধরে বলেন, ব্র্যাকের তথ্যানুযায়ী, ২০১৬ সালে নথিভুক্ত মোট নারী নির্যাতনের মধ্যে মেয়ে শিশু নির্যাতনের হার ২০ শতাংশ। মেয়ে শিশুদের মধ্যে ১২-১৭ বছর বয়সিরা সবচেয়ে বেশি (৬০.৬৩%) নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ১৮ বছরের নীচে প্রতিদিন গড়ে ১.৭ জন শিশু ধর্ষণের শিকার। আর মেয়ে শিশু ছাড়া অন্য নারীদের ক্ষেত্রে নির্যাতনের হার ৮০ শতাংশ।

সব শেষে কথা হল, আজ জাফর ইকবাল স্যারের পরিচিতির কারণে তার হয়ে কথা বলার লোকের অভাব হয়তো মোটেই পড়বে না। তাই আইনের অগ্রগতিও চোখে পড়বে। কিন্তু ৬ বছরের শিশুটির ধর্ষণ সম্পর্কে হয়তো এখনো আমাদের দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ বরেণ্য লেখকেরাও জানে না। তাই কোন কলামে ওর জন্য লেখা যায় না।

সবাই আপনাকে বুবু, আপা বা মেডাম বললেও, আমি আপনাকে মা বলে সম্বোধন করছি। আমি অপ্টিমিস্ট হয়ে আজকে আপনার কাছে প্রার্থনা করি মা, আপনি অবশ্যই যেন সব খুন, হামলা, যৌন হামলা, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। যেন জাফর ইকবাল স্যার, অভিজিৎ রায়, তসলিমা নাসরিন, তনূ, পূজা, ইলা রানিরা বিচার পায়।

--রাফিন জয়
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:৫৭
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×