somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যেনে নেই ঢাকার কোন কোন এলাকার মাটি কত মজবুত

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



নিজস্ব প্রতিবেদকরাজধানীর ৬৫ শতাংশ এলাকার মাটির গুণগত মান বহুতল ভবন নির্মাণ করার উপযুক্ত নয়। এসব এলাকার মাটিতে ছয়তলার বেশি উঁচু ভবন নির্মাণ করা হলে তা যেকোনো সময় উপড়ে বা হেলে পড়তে পারে। এমনকি নিচে দেবে যাওয়ার আশঙ্কাও আছে।

কিন্তু সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, নাজুক ৬৫ শতাংশ এলাকায়ও একের পর এক বহুতল ভবন গড়ে উঠছে। মাটির গুণাগুণ পরীক্ষায় ফাঁকি দিয়ে এমনটি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে।
রাজধানীর অনেক জলাশয়, ডোবা ও নিচু এলাকা ভরাট করা হয়েছে। ওইসব এলাকায় মাটির নিচে পিট জমে আছে। এই পিট স্পঞ্জের মতো। শুষ্ক মৌসুমে শুকিয়ে যায়। আবার বৃষ্টির পানি পেলেই ফুলে ওঠে। তখন ভবন দুলে উঠতে পারে। এ ধরনের স্থানে ডুপ্লেক্স কাঠের বাড়ি বানানো উত্তম বলে মনে করেন তিনি। বিশেষ করে মধুপুর ক্লে (লাল মাটি) পাওয়া গেলে বহুতল ভবন তৈরি করা যেতে পারে। রাজধানীতে এ ধরনের নিরেট লাল মাটির এলাকা ৩৫ শতাংশের বেশি হবে না। এসব এলাকায় ১০০-তলা ভবন নির্মিত হলেও কোনো সমস্যা নয়। তবে নির্মাণকাজ হতে হবে মানসম্পন্ন। এ ছাড়া কিছু এলাকায় সামান্য লাল মাটির স্তর আছে। এসব এলাকায় পাঁচ-ছয়তলা ভবন নির্মিত হতে পারে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পাইলিং করা দরকার।
আমাদের কাছেও ঢাকা শহরের মাটির নাজুক মানের তথ্য রয়েছে। তাতে দেখা যায়, ৬৫ শতাংশ এলাকায় লাল মাটির অস্তিত্ব চোখে পড়ে না। ওইসব এলাকার মাটির পুরুত্ব খুবই কম। কাজেই এ ধরনের এলাকায় বহুতল ভবন নির্মাণ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।

ঢাকার ৫৫০ বর্গমাইল এলাকার অন্তত ৬০ শতাংশ মাটি বহুতল ভবনের ভার সহ্য করতে পারবে না। পুরান ঢাকার মাটির যেমন মান, সে রকম মাটি ঢাকা শহরের আর কোথাও নেই। আবার অনেক এলাকার মাটির মান ভালো থাকলেও সেটাকে নষ্ট করে ফেলা হচ্ছে। যেমন পূর্বাচল উপশহর প্রকল্পের অনেক এলাকায় লাল মাটি রয়েছে। সেটা কেটে নিচু এলাকা ভরাট করা হচ্ছে। কিন্তু সেটা করলে ওই মাটির মান আর আগের মতো থাকে না। ভরাট করা এলাকা আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। পূর্বাচল উপশহর প্রকল্পে রাজউকের ঠিকাদাররা সেটাই করছে।'
সম্পূর্ণ আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে তাঁরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার অনেক নিচের মাটি সংগ্রহ করেন। মাটির গুণগত মান পরীক্ষা করেন। এতে প্রতিটি স্তরের মাটির ভূতাত্তি্বক অবস্থা, ভূ-প্রাযুক্তিক বৈশিষ্ট্য, গঠন ও প্রকৃতি প্রতিফলিত হয়েছে। তাঁদের তৈরি ভূতাত্তি্বক মানচিত্রে রাজধানীর মাটির মানকে ১৫টি স্তরে তুলে ধরা হয়েছে। প্রধানত পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। মানচিত্রে লাল, গোলাপি, সবুজ, হলুদ ও নীল রং চিহ্নিত করে মাটির মান ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। লাল রং চিহ্নিত এলাকার মাটি সর্বোচ্চ মানের। এ ধরনের মাটিতে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুসরণ করে ১০০-তলা ভবনও নির্মাণ করা যেতে পারে। এর পরই আছে গোলাপি রং। এ ধরনের মাটিতে ছয়তলা ভবন করা যায়। পাইলিংয়ের গভীরতা বাড়িয়ে আরো উঁচু ভবনও নির্মাণ করা যেতে পারে। তবে অবশ্যই প্রকৌশলীর পরামর্শ নিতে হবে। এ ধরনের মাটি স্বল্প উচ্চতার ভবন নির্মাণের জন্য মোটামুটি। এ ছাড়া অন্য তিনটি রঙের মাটিতে কোনোক্রমেই বহুতল ভবন নির্মাণ নিরাপদ নয়। নীলরঙা এলাকায় কোনো অবকাঠামোই নির্মাণ করা যাবে না। অন্য স্থানে কাঠের ঘর বা বড় জোর ডুপ্লেক্স নির্মাণ করা যেতে পারে। এসব এলাকাকে সবুজ ও হলুদ রং দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে।
জরিপ অধিদপ্তরের মানচিত্রে দেখা যায়, রাজধানীর কয়েকটি এলাকা ছাড়া বাকি সব এলাকার মাটিই নিম্নমানের।

সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন মাটি রয়েছে কতোয়ালি, মতিঝিল, কাকরাইল, খিলক্ষেত, ধানমণ্ডি, গুলশান, বনানী, উত্তরখান, উত্তরার অংশবিশেষ, সায়েদাবাদ, কমলাপুর, সেগুনবাগিচা, মিরপুর ১, মিরপুর ২, মিরপুর ৩, মিরপুর ৬ ও মিরপুর ১০ নম্বর এলাকায়। মানচিত্রে এসব এলাকাকে লাল রং দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে।

অন্যদিকে খুবই নিম্নমানের মাটি রয়েছে মেরাদিয়া, সাঁতারকুল, বাড্ডার অংশবিশেষ, মিরপুরের ১৪ নম্বর এলাকা, বোটানিক্যাল গার্ডেনের আশপাশের নিম্নাঞ্চল, কল্যাণপুর ও মোহাম্মদপুরের অংশবিশেষ, পল্লবীর নিম্নাঞ্চল, কালাপানি এলাকাসহ আরো কিছু এলাকায়। এসব এলাকায় কোনো ভবন নির্মাণ করাই উচিত নয়।

গোলাপি রং দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে ১৫ শতাংশের মতো এলাকা। সেখানে বড় জোর ছয়তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ করা যেতে পারে। তবে ৬০ থেকে ১০০ ফুট পর্যন্ত পাইলিং করা প্রয়োজন। অন্যথায় তিন থেকে সাত দিন টানা বৃষ্টিপাত হলে ভবনগুলো উপড়ে বা হেলে পড়তে পারে। তাই এখানে ডুপ্লেক্স ভবন করা বেশি নিরাপদ।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১৯
৭টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×