ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সন্তান উল্লাসকর দত্ত বিংশ শতকের গোড়ার দিকে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষিবিজ্ঞানের স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেছিলেন। কিন্তু অন্য অনেক সুবিধাবাদীর মতো নিজের আখের গোছানোতে ব্যস্ত না হয়ে উল্লাসকর পরাধীন দেশকে স্বাধীন করার সংগ্রামে যোগ দেন। আজ শুনুন এই উল্লাসকর দত্তের জীবনী, বাংলা উইকিপিডিয়া থেকে মুক্ত লাইসেন্সের অধীনে নেয়া।
------
উল্লাসকর দত্ত (১৮৮৫ - ১৯৬৫) একজন ব্রিটিশ বিরোধী বাঙালি বিপ্লবী কর্মী।
১) প্রাথমিক জীবন
উল্লাসকরের জন্ম হয় তদানিন্তন অবিভক্ত বাংলার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কালিকাছা গ্রামে। তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ এর ছাত্র ছিলেন, এবং পরে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় হতে কৃষিবিদ্যায় ডিগ্রি অর্জন করেন। তবে কলেজে পড়ার সময় ইংরেজ অধ্যাপক রাসেল বাঙালিদের সম্পর্কে কটুক্তি করার দরুন উল্লস্কর তাঁকে আঘাত করেন, এজন্য উল্লাসকরকে কলেজ হতে বহিষ্কার করা হয়েছিলো।
২) বিপ্লবী কর্মকান্ড
উল্লাসকর যুগান্তর দলে যোগ দেন। তিনি বিস্ফোরক নির্মাণে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। ১৯০৮ সালে তাঁর তৈরী বোমা ক্ষুদিরাম বসু ও হেমচন্দ্র দাস ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে আক্রমণে ব্যবহার করেছিলেন। তবে এই হামলা বানচাল হয়ে যায়, এবং পুলিশ উল্লাসকর দত্ত সহ যুগান্তর দলের অনেক সদস্যকে গ্রেফতার করে।
৩) বিচার ও সাজা
আলীপুর বোমা মামলা নামের এই বিখ্যাত মামলায় উল্লাসকরকে শুরুতে ফাঁসীর আদেশ দেয়া হয়। তবে পরবর্তীতে এই সাজা রদ করে তাঁকে আন্দামান দ্বীপের জেলে যাবজ্জ্বীবন দ্বীপান্তরের সাজা দেয়া হয়।
৪) জেল খাটা
আন্দামানের কুখ্যাত সেলুলার জেলে উল্লস্কর দত্তকে শারীরিক নির্যাতনের সম্মুখীন হতে হয়। এর ফলে তিনি সাময়িকভাবে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। ১৯২০ সালে তাঁকে মুক্তি দেয়া হলে তিনি কলকাতা শহরে ফেরৎ আসেন।
৫) পরবর্তী জীবন
উল্লাসকরকে পরে ১৯৩১ সালে আবারও গ্রেফতার করা হয়, ও ১৮ মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়। ১৯৪৭ এর ভারত বিভাগের পর তিনি গ্রামের বাড়ি কালিকাছাতে ফেরৎ যান। সেখানে একাকী ১০ বছর কাটানোর পর তিনি ১৯৫৭ সালে কলকাতায় প্রত্যাবর্তন করেন, এবং সেখানেই ১৯৬৫ সালের ১৭ই মে মৃত্যুবরণ করেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০০৭ দুপুর ১২:২৬