somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হাউ মাচ ভালোবাসা? /:)

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




অধিক ব্যবহারে শব্দের পুষ্টিগুণ হারায় যায়। এই কথা সিদ্দিকা কবীর বলে নাই, আমিই বলতেছি। গরীবের কথা মূল্যহীন হইলেও সত্যি। :-0

এই যেমন "মনটা মরে গেছে" আর "মনমরা", জিনিস একই কিন্তু গভীরতায় কম-বেশ আছে। কেউ যখন বলে ছেলেটা মনমরা হয়ে আছে, আমরা স্বাভাবিকভাবেই নেই। প্রতিদিন একবার নিয়ম করে মনমরা হওয়াটা মানুষের দৈনিক পালনীয় প্রেসক্রিপশনের মধ্যেই পড়ে। তবে কেউ যখন বলে, ছেলেটার মন মরে গেছে! আমরা একটু চিন্তিত হই। ভাবি, আহারে! মনটা মরেই গেলো? বড় ভালো ছিলো মনটা!
মনমরা শব্দটা এত বেশি ব্যবহার করি যে এই মরায় কিছু যায় আসে না। মরা মন দিব্বি হেঁটে ঘুরে বেড়ায়। মনটা মরে গেছে বললে অভিব্যক্তির গভীরতা বাড়ে। কল্পনায় মন নামক বস্তুটাকে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হইছে এমন একটা দৃশ্য ভেসে উঠে। :||

শব্দের অধিক ব্যবহার্য্যের এই হচ্ছে ফলাফল। "ভালোবাসা" নামক শব্দটারও এই দশা হইছে। বাংলা সাহিত্যে অতি মাত্রায় ব্যবহারের ফলে এই শব্দ পানির মতো সর্বত্র গড়ায় গিয়ে মাখনের মতো লেপ্টে আছে। ভালোবাসা বলতে যে গভীরতম আবেগীয় অনুভূতি আমরা বুঝি, সে আবেগের অংশবিশেষও আর ভালোবাসা শব্দটার মধ্যে অবশিষ্ট নাই। মাঝেমধ্যে মনে হয় মা ছেলের মধ্যকার অনুভূতিটা, যাকে আমরা ঘুরে ফিরে ভালোবাসাই বলি সেই আবেগের সম্পূর্ণটা প্রকাশ করতে নতুন বাংলা শব্দ বানানো দরকার। কারণ বনে বাদাড়ে, জলে জঙ্গলে, অলিতে গলিতে, মুখের বুলিতে কিংবা ফেসবুকের ইমোর মাধ্যমে এই শব্দটা এতটা সরলীকৃত এবং অপুষ্ট হইছে যে ভালোবাসি আর মুড়ি খাই এক গোত্রীয় শব্দ মনে হয়! /:)

শব্দটা যে দিন দিন গুণগত মান হারাচ্ছে এটা আমরা নিজেরাও একটু চোখ কান খোলা রাখলে বুঝতে পারি।
(যাদের প্রেমিক/প্রেমিকা আছে তারা হৃদয়ও খুলে রাখতে পারেন ফর বেটার এক্সপেরিয়েন্স!)
যেমন অনেক সময়ই দেখা যায় শুধু ভালোবাসায় চিড়া তথা হৃদয় ভিজে না। সেক্ষেত্রে বলতে হয় অনেক ভালোবাসি। তারপরও ঠিক স্বস্তি পাওয়া যায় না। মাঠে নামে "অনেক অনেক ভালোবাসি" স্কোয়াড। এরপর "অনেক অনেক বেশি... ..." ভালোবাসার পেছনে বিশেষণ যুক্ত হইতেই থাকে তাও মন ভরে না। আহারে কী দুঃখ দুর্দশা! :(

ভালো হয়, ভালোবাসা জিনিসটা নিজে আগে একটু অনুভব করতে শিখলে। তারপর বাপ-মা, ভাই-বোন, প্রেমিক/প্রেমিকা যাকে খুশি তাকে ভোটটা দিয়ে নিজের সামাজিক অধিকার পূর্ণ করেন। এক্ষেত্রে এক ফাইলই যথেষ্ট! B-)

কেউ যখন ভালোবাসার পিছনে হাজার বিশেষণ লাগায়ও স্বস্তি পায় না, যা বলতে চাচ্ছে তা ঠিক বলা হইলো না ভাবটা থেকে যাওয়ায় বিশেষণ লাগাইতেই থাকে তখন মনে হয় বলি,
ভাই থামেন! সামনে নাই ইঞ্জিন, আপনে পিছনে বগি লাগায় কী করেন?
এবং কল্পনায় আমি পেটে ব্যথায় আক্রান্ত এক লোককে দেখতে পাই। যার পেটে ভীষণ ব্যথা। সে চিতকাত হয়ে, উল্টে পাল্টে, এপাশ ওপাশ করে, কোনভাবেই ঠিক করতে পারতেছে না কোন দিকে কাত হইলে ব্যথাটা একটু কম হবে!
(কাতা-কাতি টু বি কন্টিনিউড... লাইক এডিং বিশেষণস বিফোর ভালোবাসি!)

এভাবে হয় না। আর যাই হোক, ভালোবাসা হয় না। ভালোবাসা সত্যি হইলে না বলা কথায়ও ভালোবাসা প্রকাশ পায়। বাবা-মা, ছেলে-মেয়েদেরকে সমগ্র জীবনে কয়বার ভালোবাসি বলে? খুব বেশিবার হওয়ার কথা না। তবে এই ভালোবাসার মাত্রাটা এমন যে, আমরা যখন কোন কিছু খুব বেশি হইলে বলি সেটা আকাশ ছুঁইছে... এক্ষেত্রে বলতে হয় আকাশটা যদি অনেক উপরে হইতো তবে সেই ভালোবাসাটা স্পর্শ করতে পারতো! এই ভালোবাসা খাতায় সহস্রবার ভালোবাসি লিখলেও কিছুমাত্র প্রকাশ হয় না।

হৃদয়ে কিছুমিছু অনুভব না করে সাদা পাতায় রক্তাক্ষরে ভালোবাসি লিখলেও সেটা শেষ পর্যন্ত ব্লাড ডোনেট হয়। ভালোবাসা আর হয় না!
১১টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×