সাত খুনের ঘটনা, চলন্ত বাসে তরুণী ধর্ষণ, নির্বাচনের ব্যালট ছিনতাই, পুলিশ দ্বারা ব্যালট ছিনতাইকারী আওয়ামীলীগ প্রার্থীর ভাই নিহত, মায়ের হাতে সন্তান খুন, ব্লগার হত্যা, বিদেশী নাগরিক হত্যা, পহেলা বৈশাখে নারী উত্ত্যক্তের ঘটনা, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন অনেক মানুষের অকাল মৃত্যু ইত্যাদি আরও অনেক ঘটনা বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে পরিচিত। তবে সে সব আমাদের সুযোগ্য সরকার নানা ভাবে ঢাক ঢোল পিটিয়ে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে জাহির করে।
একেকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা আলাদা আলাদা ভাবে একেকটি কান্নার সৃষ্টি করে। সেই সব কান্না ঘরে ঘরে করুণ রব তোলে। দুর্ভাগ্য হলেও সত্যি যে সেই সব কান্না উপর পর্যন্ত পৌছায় না।
সম্প্রতি যে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে গেল তা হল এক ১৯ বছর বয়সী তনু নামের একটি ফুল কয়েকটি বিষাক্ত ভাইরাসের আক্রমণে ঝরে গেল, সেই ঘটনাও ঘটলো দেশের সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা ক্যান্টনমেন্টে। নরপশুরা নষ্ট করল আরও একটি ফুল, একটি জীবন।
কি হবে এখন?
সারা দেশে কিছুদিন চ্যানেলে চ্যানেলে টক শো হবে, শাহবাগের মোড়ে মানববন্ধন হবে, কিছু ব্লগার ব্লগে লেখালেখি করবে, কিছু সুশীল সমাজের মানুষের কোথায় ফেনা ঝরবে, পুলিশের গাড়ির কয়েক লিটার পেট্রোল পুড়বে, একটি তদন্ত কমিটি হবে, অবশেষে আরও একটি নতুন বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটবে উপরের সকল ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে, কিন্তু আমরা যে সাধারণ মানুষ ছিলাম সেই সাধারণ মানুষই থেকে যাবো। পুঁজিবাদীদের আঙ্গুল আরও ফুলে ফেঁপে উঠবে, আমরা ঠিক আগের মতোই থাকবো।
আমার বুঝতে শেখার পর থেকে আমি এই সব ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবেই দেখে আসছি। এই সব বিচ্ছিন্ন ঘটনা একসাথে একটি বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা। আমাদের চালকেরা অবুঝ হলেও তাদের সাহায্যকারীদের মাথায় তো অন্তত কিছু আছে, তারা কি করছে? দেশটা কি তাদের নয়?
সরকার বলে যে, দেশের মানুষ শান্তিতে আছে। আমরা চাই সরকার যেন এই কথাটা সব সময় বলে যেতে পারে, তবে তা বলতে হবে অবশ্যই এই দেশের নাগরিকদের প্রকৃত শান্তিতে রেখে। কিছু কিছু সময় সরকারের কথা শুনে মনে হয় আমরা সাধারণ মানুষরা এতই সাধারণ যে, সরকার যদি একটি ফিডার হাতে ধরিয়ে দিয়ে শি-শি করে তাহলে আমরা নরম বিছানায়ও প্রসাব করব। কেউ যদি এমন ভাবে তাহলে তাদের মতো বোকা কেউ নেই। সাধারণ হলেও আমরা অবুঝ নই। দেশের প্রকৃত শান্তি আনতে চাইলে আমাদের অবশ্যই আইনের শাসন বাস্তবায়ন করতে হবে।
আমরা প্রকৃত শান্তি চাই।