somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‘কত যে স্বপ্ন মুকুলেই ঝরে যায়...’

০৭ ই মে, ২০১২ রাত ১০:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কত যে স্বপ্ন মুকুলেই ঝরে যায় ...’ (কিছুটা বড় লেখা..তবে জীবনের কঠিন বাস্তবতা জানতে সবার পড়া প্রয়োজন)

আমার বয়স তখন খুবই কম, ছয় কি সাত হবে। সেই সময়ে আমার বাবার কণ্ঠে প্রায়ই একটি গান শুনতে পেতাম। গানের অর্থ ঠিক বুঝতে না পারলেও শৈশবে শোনা বাবার সেই গান ভালোভাবেই গেঁথে গিয়েছিল মনে। আব্দুল জব্বারের কণ্ঠে গাওয়া—

তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়
দুখের দহনে করুণ রোদনে তিলে তিলে তার ক্ষয় ...
আমি তো দেখেছি কত যে স্বপ্ন মুকুলেই ঝরে যায়
শুকনো পাতার মর্মরে বাজে কত সুর বেদনায়
আকাশে বাতাসে নিষ্ফল আশা হাহাকার হয়ে রয় ...

বড় হয়েও গানটি শোনা হয়েছে বহুবার।

গানের সুর ও কথায় এক ভিন্ন রকম স্বাদ-যেন অন্য কোথাও ভাসিয়ে নিয়ে যায় মন। তবে অনেক জনপ্রিয় এ গানের অর্থ আরো বেশি করে উপলব্ধি করতে পারলাম-চল‍ার পথে ক’দিন আগে ভাগ্যবিড়ম্বিত এক কিশোর ও এক তরুণের সান্নিধ্যে এসে।

তাদের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটিয়ে জীবনের অজানা অনেক বাস্তবতাকে জানা গেল কাছ থেকে।

সাহেদ বাবুঃ বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কাকরধা গ্রামের সদ্য দাখিল পরীক্ষা দেওয়া টগবগে তরুণ সাহেদ বাবু। স্বপ্ন ছিল জীবনে অনেক বড় হওয়ার। কঠোর বাস্তবতার কাছে হার মেনে পড়াশুনা সাঙ্গ করে এখন সে রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে শ্যামলী পরিবহনের ৩ নং কাউন্টারের কলারম্যান। সামান্য উপার্জনে কোনোরকম বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে সে।

সাহেদের বাবা শাহজাহান হাওলাদার ঢাকায় কসমেটিকসের দোকান দিয়েছিলেন। ভালোই চলছিল সংসার। তখন সাহেদের বয়স ৪ বছর। হঠাৎ করেই মারা যান তার মা সুফিয়া বেগম। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সৎ মা শুরু থেকেই সহ্য করতে পারতেন না সাহেদ ও তার অপর দুই ভাইকে। অনেক সংগ্রাম করে স্থানীয় পাটকাঠি নেছারিয়া আলিম মাদ্রাসা থেকে এ বছর দাখিল পরীক্ষা দেয় সে।

সৎ মায়ের নির্দয় আচরণ সইতে না পেরে সাহেদ পরীক্ষা দিয়েই পাড়ি জমায় ঢাকায়। দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের সহযোগিতায় সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে সামান্য রোজগারের এই চাকরি জোটে। প্রতিদিনের মজুরি হিসেবে যা পায়, তা দিয়ে মেসে থেকে খেয়েই শেষ হয়ে যায়। পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার মতো কোনো সুযোগ আর দেখতে পাচ্ছে না সাহেদ।

সাহেদ বলছিল, এক সময় বড় আর্মি অফিসার হওয়ার স্বপ্ন দেখতো সে। নিজের অনিশ্চিত জীবনের কথা যখন মনে হয়, তখন চোখের জল গড়ায় সাহেদের। কাউকে বলতে পারে না সে, ব্যস্ত নগরে কেই বা শুনবে তার কথা।।
_______________________.........__________________

জীবনঃ একই দিনে দেখা হয় এক ছিন্নমূল কিশোরের সঙ্গে। ডান হাত কাটা ওই কিশোরের নাম জীবন। কথা বলে জানা গেল, তার জীবনের দুঃখের গল্প।
শৈশবে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের গ্রামের বাড়ি থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী বাস টার্মিনালে আসে জীবন। কিছুদিন যেতেই বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করলে অনিশ্চিত হয়ে পড়ে জীবনের ভবিষ্যৎ। বাবার দেখাদেখি মাও বিয়ে করে অন্যত্র চলে যায়। সৎ মায়ের সংসারে শিশু জীবনের কপালে খাবার আর আদরের পরিবর্তে জোটে অনাদর আর অবহেলা। রোজগারের জন্য এক সময় ৫ বছর বয়েসেই বাবা নিজেই ঘর থেকে বের করে দেয় জীবনকে।

বেঁচে থাকার প্রয়োজনে বাসে-ট্রেনে বাদাম বিক্রি শুরু করে শিশু জীবন। সারাদিন বাসে বা ট্রেনে বাদাম বিক্রি করে যা পায়, তাই দিয়ে কোনোরকম খাওয়ার টাকা জোগাড় হয়। রাতে ঘুমানোর জন্য বেছে নেয় রেল স্টেশনের প্লাটফরম। এভাবেই চলছিল তার বেঁচে থাকার যুদ্ধ। কিন্তু একদিন দুর্ভাগ্য ভর করে জীবনের ওপর।

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেনের দুই বগির সংযোগস্থলে বসে ঘুমিয়ে পড়েছিল সারাদিনের ক্লান্ত জীবন। ট্রেন চলতে শুরু করলে হঠাৎই ......
সুত্র- View this link
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×