somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

সূর্বনার দুই প্রেমিক

২০ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সূর্বনা আর মারুফের বিয়ে হয়েই গেল।
খুব অল্প সময়ে সুন্দর সাজানো গোছানো সংসার হয়ে গেল। মারুফ ভালো চাকরী করে। অফিস শেষ হলেই মারুফ বাসায় চলে আসে। মারুফ জানে, বাসায় সূর্বনা একা। এখন আর মারুফ অফিস শেষে আড্ডায় যায় না। অনেক রাত পর্যন মারুফ আর সূর্বনা বেলকনিতে বসে গল্প করে। দেখতে দেখতে তাদের সংসার জীবন ছয় মাস পার করলো। আর সমস্যা হতে শুরু করলো। বিরাট সমস্যা। মানুষের জীবনে আনন্দ বা শান্তি দীর্ঘস্থায়ী হয় না।

বিয়ের পর মেয়েরা সন্তানের জন্য অস্থির হয়ে যায়।
সূর্বনা বাচ্চা চায়। মারুফ বাচ্চা চায় না। আসলে মারুফের সমস্যা আছে। সে কোনো দিনই বাপ হতে পারবে না। বিয়ের আগে অবশ্য সে তার এই সমস্যার কথা জানতো না। যাই হোক, ডাক্তার দেখানো হলো। ডাক্তার স্পষ্ট করে বলে দিলো- মারুফ বাপ হতে পারবে না। সূর্বনা খুব কাদে। কাদতেই থাকে। অবশ্য কাদলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে না। মারুফ সূর্বনাকে কোনো শান্তনা দিতে পারে না। তার হৃদয়য়ের গভীরে ভীষন কষ্ট। শেষমেষ সূর্বনা সিদ্ধান্ত নিলো, এতিমখানা থেকে তারা একটা বাচ্চা নিবো। এবং এই বাচ্চাকেই নিজের বাচ্চার মতো করে বড় করবে।

এতিমখানায় অনেক অনুরোধ করে একটা বাচ্চা আনা হলো।
সূর্বনা সারাদিন বাচ্চাকে নিয়ে ভীষন ব্যস্ত থাকে। সূর্বনা এখন অনেক খুশি। তার বেশ ভালো সময় কাটছে। বাচ্চাটার নাম সে রেখেছে মূসা। এদিকে মারুফের মেজাজ প্রচন্ড খারাপ। মারুফ কেন জানি বাচ্চাটাকে সহ্যই করতে পারে না। বাচ্চাটা কাদলেও মারুফ ফিরে তাকায় না। কোলে নেয় না, আদর করে না। একদিন সূর্বনা বলল, তুমি মূসাকে আদর করো না কেন? মারুফ বলল, আমার খূশি। এই বাচ্চা আমার না। এটাকে আমার দুই চক্ষে দেখতে ইচ্ছা করে না। ও কাদলে ইচ্ছা করে গলা টিপে ধরি।

সুখের সংসারে আগুন লেগে গেলো।
একদিন মারুফ সূর্বনার সাথে তুমুল ঝগড়া করলো। এমনকি রাগের মাথায় সূর্বনাকে খুব মারলো। ঝগড়ার মূল কারন মূসা। মারুফ বলেছে, মূসাকে যেখান থেকে এনেছো সেখানে ফেরত দিয়ে আসো। এই অত্যাচার আর সহ্য হয় না। সূর্বনা মূসাকে এতিম খানায় ফেরত দিতে চায় না। মূসাকে নিয়ে ঝগড়াঝাটি প্রায় রোজই হতে থাকলো। সূর্বনাও প্রায় রোজই মারুফের হাতে থাপ্পড়, কিল, গুসি খেতে লাগলো। একদিন বাধ্য হয়ে সূর্বনা মূসাকে এতিমখানায় ফেরত দিয়ে দিলো। ফেরত দিয়ে এসে বাসায় সারাদিন বসে কাদলো। খুব কাদলো। সব আল্লাহর ইচ্ছা।

মারুফ একদিন অফিস থেকে এসে দেখে সূর্বনা কাদছে।
মারুফের খুব মায়া হলো। মারুফ বললো, দেখো আমরা দুইজন খুব মিলেমিশে থাকবো। অনেক আনন্দ করবো। দরকার নেই আমাদের বাচ্চা কাচ্চা। চলো আজ বাইরে থেকে ঘুরে আসি। রাতে বাইরে খাবো। সূর্বনা আর মারুফ রাতে বাইরে খেলো। রিকশা করে অনেকক্ষন ঘুরে বেড়ালো। মুভি দেখলো। সূর্বনাকে অবাক করে দিয়ে মারুফ একটা চুন্ডি শাড়ি কিনে দিলো। সে রাতে তাদের অনেক আদর সোহাগ হলো। কিন্তু সূর্বনার ভালো লাগে না। তার একতা বাচ্চা চাই। নিজের একটা বাচ্চা। বাচ্চা ছাড়া কোনো আনন্দই আনন্দ না। তার বাসায় কাজ করে নাসিমা বুয়া তারও দু'টা বাচ্চা।

এভাবে দুই বছর পার হয়ে গেল।
একদিন সূর্বনা কঠিন এক সিদ্ধান্ত নিলো। সে মারুফকে ডিভোর্স দিবে। এবং সে সত্যি সত্যি ডিভোর্স দিয়ে দিলো। মারুফ সূর্বনা আলাদা হয়ে গেল। এভাবে ছয় মাস পার হয়ে গেল। সূর্বনার মনে শান্তি নেই। একদিন সূর্বনার বড় ভাই বললেন, বোন তুই আবার নতুন করে জীবন শুরু কর। তুই আবার বিয়ে কর। আমার বন্ধু কামাল তোকে বিয়ে করতে রাজী। কামাল ভালো ছেলে। হৃদয়বান মানুষ। অত্যন্ত হাসিখুশি প্রানবন্ত পুরুষ। প্রথম প্রথম সূর্বনা না করলেও শেষমেষ ভাইয়ের পছন্দে সে কামালকে বিয়ে করে ফেলল। বিয়ের পর বুঝলো কামাল আসলেই ভালো একজন মানুষ।

পৃথিবীতে ভালোবাসা অনেক বড় অস্ত্র।
কামাল তার স্বচ্ছ পবিত্র ভালোবাসা দিয়ে সূর্বনার মন জয় করে নিলো। প্রচন্ড হৃদয়বান একজন মানূষ কামাল। দারুন ভদ্র, অমায়িক মানুষ। সূর্বনা আর কামালের জীবন বেশ ভালো কাটছে। সূর্বনা কামালের ভালোবাসা পেয়ে সাবেক স্বামী মারুফকে পুরোপুরি ভুলে গেল। কামাল বেশ আমুদে মানুষ। ছুটির দিনে তাদের বাসায় বন্ধু বান্ধব, আত্মীয়স্বজন লেগেই থাকে। খুব আড্ডা হয়, গান বাজনা হয়। এক বছরের মাথায় সূর্বনার একটা ছেলে সন্তান হয়। আদর ভালোবাসায় সন্তান বড় হতে থাকে। সূর্বনা তার সন্তানের নাম রাখে মূসা। এদিকে মারুফের খবর কেউ রাখে না। সূর্বনার বিয়ের দিন মারুফ আত্মহত্যা করে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:২৮
১৮টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×