১। আমার বন্ধু সালাউদ্দিন।
এই গাধাকে সারা জীবন দেখেছি রাস্তায় মেয়ে দেখলেই হা করে তাকিয়ে থাকতো। অতি কুৎসিতভাবে তাকিয়ে থাকতো। অনেক বলে- কয়ে সালাউদ্দিনকে ফেরাতে পারি নি। এখন সালাউদ্দিন বিয়ে করেছে। এখন সে আর কোনো মেয়েদের দিকে তাকায় না। কিন্তু সালাউদ্দিনের বউ এর দিকে লোকজন তাকিয়ে থাকে। বলা যায় কুৎসিত ভাবেই তাকিয়ে থাকে। যারা রাস্তাঘাটে মেয়েদের দিকে তাকায়- কুৎসিত ভাবেই তাকায়। বড় নোংরা লাগে তখন পুরুষ জাতীর চোখ মুখ। যাই হোক, সালাউদ্দিন যখন তার বউকে নিয়ে রাস্তায় বের হয় তখনও লোকজন তাকিয়ে থাকে।
গত পরশু সালাউদ্দিনের সাথে দেখা।
সে খুব আক্ষেপ নিয়ে বলল, দোস্ত তোর ভাবীকে নিয়ে কোথাও বের হলেই লোকজন বিছছিরি ভাবে তাকিয়ে থাকে। ব্যাপারটা আমার মোটেও ভালো লাগে না। আরে এভাবে তাকিয়ে থাকার কি আছে? লোকজন এরকম কেন রে?!
আমি বললাম, একসময় তো তুমি মেয়েদের দিকে খুব কুৎসিত ভাবে তাকিয়ে থাকতে। এইটা তোমার পাপের শাস্তি। প্রকৃতি কাউকে ক্ষমা করে না।
২। আমার পাশের বাসায় থাকেন বাশার ভাই।
বাশার ভাই চমৎকার ভালো মানুষ। বাংলায় অনার্স- মাস্টার্স করে এখন বেশ ভালো চাকরী করছেন। বাশার ভাই দেখতে বেশ সুন্দর। কথাও বলেন খুব সুন্দর করে। বাশার ভাই বিয়ে করবেন। তার জন্য ব্যাপক হারে মেয়ে খোজা হচ্ছে। কিন্তু মনের মতো মেয়ে পাওয়া যাচ্চে না। কারো চুল কোকড়ানো। কোকড়ানো চুল বাশার ভাইয়ের পছন্দ না। কেউ বেটে। বেটে মেয়ে বাশার ভাইয়ের একেবারেই অপছন্দ। কেউ হাসলে দাতের মাড়ি দেখা যায়। কোনো মেয়ে হাসলে তার দাতের মাড়ি দেখা গেলে বাশার ভাইয়ের খুব মেজাজ খারাপ হয়। এভাবে দেখতে দেখতে বাশার ভাই ৭৭ জন মেয়ে দেখে ফেললেন। তার কোনো মেয়েই পছন্দ হয় না।
আমি প্রায়ই বাশার ভাইয়ের সাথে আড্ডা দিতে যাই।
আড্ডা দেওয়ার প্রধান কারন হলো- বাশার ভাই খুব সুন্দর করে কথা বলেন। এবং তিনি দারুন বুদ্ধিমান একজন মানুষ। একদিন গেলাম তার সাথে দেখা করতে তিনি বললেন- ১১৯। আমি বললাম ১১৯ মানে কি বাশার ভাই? তিনি বললেন, ১১৯ মানে ১১৯ টা মেয়ে দেখেছি গত দেড় বছরে। কোনো মেয়েকেই আমার পুরোপুরি পছন্দ হয় নি। কোনো না কোনো সমস্যা আছেই। আবার একদিন বাশার ভাইয়ের বাসায় গেলাম- তিনি বললেন, ১৪৪। যাই হোক, ১৭৭ নম্বর মেয়ে তার পছন্দ হলো। এবং বিয়েও হয়ে গেল। সেই বিয়েতে আমি ছিলাম। বেশ ধূমধাম করে বিয়ে।
বাশার ভাইয়ের বউ কেমন হলো?
সব মানুষকেই আল্লাহ বানান। মানুষের চোখ মুখের উপর মানুষের হাত নেই। সব আল্লাহ পাকের ইচ্ছা। কেউ কালো, কেউ মোটা, কেউ সুন্দর, কেউ মলিন, কেউ মায়াময়, কেউ মায়াহীন। আমাদের বাশার ভাইয়ের বউ- দেখতে একেবারেই সুন্দর না। একবার তাকালে আর দ্বিতীয় বার তাকাতে ইচ্ছা করে না। হাসলে মাড়ি দেখা যায়। এবং দাত গুলো যেন মুখের বাইরে এসে পরে। চুল কোকড়া।, শ্বেতী রোগীর মতো গায়ের রঙ। গলার ভয়েস পুরুষ লোকের মতোন। বাশার ভাই এত এত মেয়ে বাছাই করে শেষমেষ এমন একটা মেয়ে বিয়ে কেন করলেন আমি বুঝতে পারলাম না।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:২৫