somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

নিজের কথা

২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ছোটবেলা থেকেই আমি কিছু হতে চাই নি।
এই জন্য জীবনে কিছু হতে পারি নি। ছোটবেলা থেকেই বাচ্চারা কত কিছু হতে চায়- ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট, শিক্ষক, পুলিশ ইত্যাদি কত কি। কিন্তু আমি কিছুই হতে চাই নি। কেউ জিজ্ঞেস করলে বলতাম- জানি না। দেখি কি হই। ঠিক নাই। আপাতত আমাকে টিভি দেখতে দেন। আমাকে খেলতে যেতে দেন। সারাদিন খেলাধূলা নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। বাপ-মাও কিছু বলতো না। তারা দেখতে ছেলে নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে। বাসায় শিক্ষকের কাছে পড়তে বসছে। এটাই যথেষ্ঠ। এযুগের ছেলেমেয়েরা অনেক বুদ্ধিমান এবং স্মার্ট। তারা ছোটবেলা থেকেই জীবনের লক্ষ্য স্থির করে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। ছোটবেলা লক্ষ্য স্থির না করার কারনে- আজ আমার এই অবস্থা। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট ইত্যাদি কিছুই হতে পারলাম না। অবশ্য সে জন্য আমার কোনো আফসোসও নেই। যা আছি, যেমন আছি ভালো আছি। ভাবতে অবাক লাগে- ত্রিশ বছর সেই কবেই পার করে ফেলেছি। আর ত্রিশ বছর কি বাচবো? বাচলেও সুস্থ ভাবে বেচে থাকতে পারবো?

যেহেতু আমার টাকা নেই।
তাই ইচ্ছা থাকলেও ব্যবসা করতে পারবো না। তাই এখন আমার ছোট ছোট ব্যবসা করতে ইচ্ছা করে। টাকাও বেশি লাগবে না। এখন আমার রাস্তায় সিদ্ধ ডিম বিক্রি করতে ইচ্ছা করে। অবশ্য 'সিদ্ধ ডিম' এটা শুধু শীত কালের ব্যবসা। তিন রকমের ডিম থাকবে। ফার্মের মূরগীর ডিম, দেশী মূরগীর ডিম আর হাসের ডিম। যার যেটা ভালো লাগে সেটা খাবে। পনের টাকা পিস। প্রতিদিন একশ' ডিম বিক্রি করতে পারলে খরচ বাদ দিয়ে, চোখ বন্ধ করে ৭০০ টাকা ইনকাম হবে। যেহেতু ফুটপাতে ব্যবসা করবো তাই এক শ' টাকা দিতে হবে স্থানীয় থানার পুলিশকে। পুলিশকে টাকা না দিলে ফুটপাতে বসতে দিবে না। আমার ভাবতেই ভালো লাগে- কাস্টমার আসবে সুন্দর করে ডিম ছিলে, ডিম দুই ভাগ করে লবন দিয়ে দিব। অলরেডি আমি এক ডিমওয়ালার কাছ থেকে হাতে কলমে পরামর্শ নিয়েছি।

ডাবের ব্যবসাও মন্দ না।
ভালো লাভ হয়। ঢাকা শহরের মানুষ এখন অনেক সচেতন। তারা ডাবের দাম বেশি হলেও ডাব খায়। তাছাড়া আমি চালাক মানুষ। কোনখানে কোণ এলাকায় ডাব ভালো বিক্রি হবে তা আমি জানি। ডাব নিয়ে আমার বেগ পেতে হবে না। একটা ভ্যান গাড়ি ভাড়া করবো। সদরঘাটের আরত থেকে একশ' ডাব কিনবো। ভ্যানে করে সারাদিন ঘুরে ঘুরে ডাব বিক্রি করবো। একশ' ডাব বিক্রি করতে পারলে চোখ বন্ধ করে কমপক্ষে এক হাজার টাকা থাকবে। মাসে ত্রিশ হাজার টাকা। অনেকে সারাদিন চাকরী করেও মাসে ত্রিশ হাজার টাকা পায় না। স্বাধীন ব্যবসা। নিজের ব্যবসা। কেউ হুকুম চালাতে পারবে না। সহকর্মীরা বদমাইশি করার সুযোগ পাবে না।। অবশ্য আমি ডাব কাটতে জানি না। এটা কঠিন কিছু না। মুহুর্তের মধ্যে শিখে নিতে পারবো। সকলের কাছে দোয়া চাই।

শীতকালে পিঠার ব্যবসাটাও বেশ ভালো চলে।
ভাপা আর চিতই পিঠা। সন্ধ্যার পর লাইন লেগে যায় পিঠার দোকান গুলোতে। পিঠা বিক্রেতা একা হিমসিম খায় পিঠা বানাতে বানাতে। পিঠার কাস্টমার বেশি। সবাই আগে চায়। কেউ দেরী সহ্য করতে পারে না। আমি একসাথে পাচটা মাটির চুলা লাগাবো। ভাবতেই ভালো লাগছে- খিলগাও রেলগেট চৌরাস্তার মাথায় আমার পিঠার দোকান। বেশ ব্যস্ত রাস্তা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লোকজন যাওয়া আসা করতেই থাকে। পথচারীরা আমার কাছ থেকে পিঠা কিনে খাবে। আমি ভাপা আর চিতই পিঠার দাম নিবো দশ টাকা করে। চিতই পিঠার সাথে তিন পদের ভরতা থাকবে। শূটকি, মরিচ আর ধনে পাতা ভরতা। চিতই পিঠা ভরতা ছাড়া মজা লাগে না। ভরতা টা ফ্রি থাকবে। ঠিকভাবে ব্যবসা করতে পারলে সারাদিনে এক হাজার টাকা থাকবে। মাসে ত্রিশ হাজার। মন্দ নয়। হে হে

ব্যবসার অভাব নাই দুনিয়াতে।
অভাব হলো টাকার। চায়ের ব্যবসাতে ভালো লাভ হয়। চায়ের ব্যবসা করার ইচ্ছাও আমার আছে। এটা আমার অনেক পুরাতন ইচ্ছা। অনেক রকমের চা দোকানে রাখবো। আদা চা, দুধ চা, তেতুল চা, জলপাই চা, লেবু চা- যার যেটা ভালো লাগে, খাবে। চা ছাড়াও দোকানে কেক, রুটি, কলা, বিস্কুট থাকবে। সারাদিনে চায়ের দোকানে বেচাকেনা মন্দ নয়। সারাদিন লোকজন আসবেই। চায়ের দোকান কখনও খালি থাকে না। মধ্যদুপুরে মানুষ চা খায়। চায়ের সাথে সিগারেট খাবে। এই ব্যবসা ঠিকভাবে করতে পারলে মাসে ত্রিশ থেকে চলিশ হাজার টাকা লাভ করতে পারবো। তাছাড়া আমার মাথায় বুদ্ধি আছে। এবং আমি পরিশ্রমী। ব্যবসা করে কিভাবে লাভ করতে হবে তা আমি জানি। খুব শ্রীঘই শুরু করবো ইনশাল্লাহ।

কেউ কেউ হয়তো বলবেন-
লেখাপড়া শিখে শেষমেষ এই ব্যবসা। ছিঃ। নাক ছিটকানো লোকের অভাব নেই এই সমাজে। অথচ না খেয়ে থাকলে কেউ এগিয়ে আসবে না। তারা এটা বুঝবে না- ছেলেটা চুরী-ছিনতাই করছে না। সৎভাবে খেয়ে-পরে বেচে থাকার জন্য ব্যবসা করছে। পরিশ্রম করছে। সিদ্ধ ডিমের ব্যবসা করেই অর্থাৎ ছোট ছোট ব্যবসা করেই আমি বড় হবো। জীবইনে একলাফে বড় হবার ইচ্ছা আমার নেই। ধীরে ধীরে আমার ব্যবসার পরিধি বাড়বে। একসময় আমি বড় ব্যবসায়ী হয়ে যাবো। আকিজ গ্রুপের মতো আমার বড় প্রতিষ্ঠান হবে। আমার প্রতিষ্ঠানে অনেক মানুষ কাজ করবে। দীর্ঘদিন ধরে মন মানসিকতা বিক্ষিপ্ত হয়ে আসছে। এর থেকেও বেড়িয়ে আসতে হবে। নিজেকে বুঝাই ''দেরী হোক, যায় নি সময়''। সবার কাছে দোয়া প্রার্থী।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৪০
২৯টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হেঁটে আসে বৈশাখ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০০


বৈশাখ, বৈশাখের ঝড় ধূলিবালি
উঠন জুড়ে ঝলমল করছে;
মৌ মৌ ঘ্রান নাকের চারপাশ
তবু বৈশাখ কেনো জানি অহাহাকার-
কালমেঘ দেখে চমকে উঠি!
আজ বুঝি বৈশাখ আমাকে ছুঁয়ে যাবে-
অথচ বৈশাখের নিলাখেলা বুঝা বড় দায়
আজও বৈশাখ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×