somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

তিনটা ভৌতিক বা অলৌকিক ঘটনা

২৬ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১। দশ বছর আগের কথা।
একদিন রাস্তায় একটা মোবাইল পাই। ঠিক রাস্তায় না। রমনা পার্কে। আমি রমনা পার্কে গেলে যে বেঞ্চে বসি। সেই বেঞ্চে একটা পুরোনো কমদামী মোবাইল পড়ে থাকতে দেখি। মোবাইলের রঙ টং সব নষ্ট হয়ে গেছে। আশেপাশে খোঁজ নিয়ে মোবাইলের মালিককে খুঁজে পেলাম না। প্রায় দেড় ঘন্টা পার্কে বসে থাকলাম। কিন্তু মোবাইলের মালিক আর ফিরে এলো না। অগত্যা আমি মোবাইলটা নিয়ে বাসায় ফিরে এলাম। মোবাইলটা ড্রয়ারে রেখে দিলাম। আমি যদি ব্যোমকেশ বা মিসির আলি হতাম তাহলে বলে দিতে পারতাম মোবাইলটা কার। দেখতে দেখতে বেশ কয়েকদিন পার হয়ে গেল। মোবাইলটা কুড়িয়ে এনে ভুল করেছি।

অনেক রাত হয়ে গেছে। ঘুম আসছিলো না।
মোবাইলটা ড্রয়ার থেকে বের করলাম। মোবাইলের ভেতর কোনো সিম কার্ড নেই। মোবাইলটা নেড়েচেড়ে দেখলাম-যদি কিছু উদ্দার করতে পারি। কোনো কিছুই উদ্দার করতে পারলাম না। মোবাইলটা বালিশের কাছে রেখে আমি বই পড়তে থাকলাম এবং কখন যেন ঘুমিয়ে পড়লাম। গভীর ঘুম। একসময় ঘুম ভেঙ্গে গেলো। দেখি মোবাইল বাজছে। না আমার মোবাইল না। যে মোবাইলটা পার্কে পেয়েছি। আজিব ব্যাপার! সিম নেই কিন্তু মোবাইলে ফোন আসছে। মোবাইলটা বেজেই চলেছে। আমি প্রচন্ড ভয় পেলাম। মোবাইলটা ছুড়ে রাস্তায় ফেলে দিলাম। আমি জানি কেউ এই ঘটনা বিশ্বাস করবেন না। কিন্তু মাঝে মাঝে ব্যাখ্যা করা যায় না এমন ঘটনা ঘটে।



২। একদিন মধ্যদুপুর বেলা।
আমি একা ফুলার রোড দিয়ে হাঁটছি। বেশ ক্ষুধা পেয়েছে। পকেটে টাকা নেই। চারিদিকে কড়া রোদ। স্বচ্ছ রোদ। তবে বাতাস আছে। রোদটা তেমন গায়ে লাগছে না। দুপুর বলেই রাস্তায় লোকজন একেবারেই নেই। আমার কোথাও যাবার নেই। আমার কোনো তাড়া নেই। অথচ কি করবো? কই যাবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। এদিকে প্রচন্ড ক্ষুধা লেগেছে। অবশ্য নীলক্ষেত গেলে খাওয়ার ব্যবস্থা হয়ে যাবে। সেখানে ভাই ভাই নামে একটা রেস্টুরেন্ট আছে। এই রেস্টুরেন্ট আমাকে বাকিতে খাবার দেয়। ওদের খাবারও বেশ স্বাদ। যাবো নাকি ভাই ভাই রেস্টুরেন্টে? সমস্যা হলো রেস্টুরেন্টে আগের অনেক টাকা বকেয়া পরে আছে। নিজের কাছেই লজ্জা লাগে। না যাবো না। চক্ষু লজ্জা বলে একটা কথা আছে।

হঠাত দেখি একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
ফুলার রোডের সবচেয়ে বড় গাছটার সামনে। সাদা অফ হ্যোয়াইট শাড়ি পরা। পুরো শাড়িতে সাদা সুতার কাজ করা। আমি এত সুন্দর মেয়ে আমার জীবনে দেখি নাই। যেনে একটা সাদা পরী। কি সুন্দর করে চোখে কাজল দিয়েছে। মেয়েটা আমাকে বলল, আপনি কি ক্ষুধার্থ? আমি বললাম, হ্যা। চলুন আমার সাথে। মেয়েটাকে আমাকে ধানমন্ডি স্টার কাবাবে নিয়ে গেলো। কাচ্চি খাওয়ালো। আমি বেশ আরাম করে খেলাম। মেয়েটা বলল, পেপসি খাবেন? আমি বললাম, খুব ঠান্ডা যেন হয়। আরাম করে পেপসি খেলাম। রাস্তায় বের হয়ে একটা বেনসন ধরালাম। নিজেকে বেশ সুখী মানুষ বলে মনে হচ্ছে। সিগারেট শেষ করার আগেই দেখলাম মেয়েটি নেই। আশেপাশে খুব খুজলাম সাদা পরীকে আর পেলাম না। আমি জানি আমার এই ঘটনাও কেউ বিশ্বাস করবে না। এরকম ঘটনা বহু মানুষের জীবনে ঘটে যার ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না।



৩। সিলেট যাচ্ছি ট্রেনে করে।
শীতের রাত। খুব শীত। এত শীত যে ঠান্ডা বাতাস তীরের মতো এসে গায়ে বিধে যেন। আখাউড়া স্টেশনে ট্রেন থামলো। তখন অনেক রাত। আনুমানিক রাত দুইটা তিনটা হবে। ভাবলাম ট্রেন চলতে শুরু করার আগে এক কাপ গরম চা খেয়ে নিই। বেশির ভাগ চায়ের দোকানই বন্ধ। দরিদ্র লোকজন ছেঁড়া কাঁথা, কম্বল গায়ে দিয়ে এখানে-ওখানে শুয়ে আছে। তাদের পাশ দিয়ে একটা চায়ের দোকানে গেলাম। চায়ের দোকানদারেরও চোখে ঘুম। আমাকে দেখে বললেন, চা খাবেন স্যার? আমি বললাম, তাড়াতাড়ি চা দাও। ট্রেন ছেড়ে দিবে। দোকানদার বলল, ট্রেন ছাড়তে দেরী আছে। এতক্ষনে আপনি দশ কাপ চা খেয়ে নিতে পারবেন। আমি বললাম, তাহলে আমি একই জলবিয়োগ করে আসি। দোকানদার বলল, যান। ডান দিক দিয়ে সামনে যান।

জন বিয়োগ করে এসে দেখি ট্রেন চলে গেছে।
মন খারাপ করে আখাউড়া স্টেশনে বসে আছি। পরের ট্রেন আসবে ভোর ছয়টায়। খুব শীত। চারিদিকে অনেক কুয়াশা। এমন সময় কোথা থেকে একটা মেয়ে এসে আমার পাশে বসলো। মেয়েটা দারুন সুন্দরী। নীল রঙের একটা শাড়ি পরা। গায়ে পাতলা একটা শাল। মাথা ভর্তি চুল। চোখে কাজল আছে। মেয়েটা বলল, আপনিও কি আমার মতো ট্রেন মিস করেছেন? আমি হেসে ফেললাম। মেয়েটা বলল, বাহ আপনার হাসি তো খুব সুন্দর! মেয়েটার সাথে নানান বিষয় নিয়ে গল্প বলতে থাকলাম। মেয়েটা মন দিয়ে আমার গল্প শুনে যাচ্ছে। কখনও হাসছে। মেয়েটা ভিষন সুন্দর করে হাসে। হাসিটা এসে একদম বুকে লাগে। ভোর হতেই মেয়েটা অদৃশ্য হয়ে গেল। আমার চোখের সামনেই হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। আমি জানি আমার এঘটনাও আপনারা বিশ্বাস করবেন না। এমন কি কেউ আমাকে এরকম ঘটনা বললে আমি নিজেও বিশ্বাস করতাম না। এজন্যই বলি জগতে অনেক কিছু ঘটে যা ব্যখ্যা করা যায় না।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:১০
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×