করোনার টিকা এখন পর্যন্ত নিতে পারি নি।
রেজিষ্টেশন করেছি। এক মাস হলো। ঘটনা কি? এত দেরী হচ্ছে কেন? অবশ্য শেখ হাসিনা যখন বলেছেন, সবাই টিকা পাবে। তাই আমি নিশ্চিন্ত। এমনও হতে পারে সরকার থেকে লোক বাসায় এসে টিকা দিয়ে যাবে। যেভাবে ভোটের সময়, ভোটের কাগজ বাসায় এসে দিয়ে যায়। আমি কখনও দুপুরে খেয়ে ঘুমাই না। ভাতঘুমের আমার অভ্যাস নেই। অথচ গতকাল ঘুমিয়ে গেলাম। এবং স্বপ্ন দেখলাম। আমি হাসপাতালে গিয়েছি করোনার টিকা নিতে। তখন একজন মেয়ে ডাক্তার বলল, টিকা দেওয়া শেষ। আর একটা টিকাও অবশিষ্ট নেই। তখন আমি কান্না শুরু করলাম। আমার কান্না দেখে ডাক্তারের মায়া হলো। শেষে তিনি আমাকে একটা ওষুধ দিয়ে বললেন, এটা খেয়ে নিন। আমি বললাম, ওষুধ দিচ্ছেন কেন? আমি টিকা নিতে চাই। ডাক্তার বললেন, এটাই আপনার টিকা।
পৃথিবীতে নিজের ইচ্ছে মতো সব হয় না।
বেশির ভাগ সময় বৈরী পরিবেশে মানুষকে দৈনন্দিন জীবন কাটিয়ে যেতে হয়। বয়স বাড়ে, হাড়ের ক্ষয় শুরু হয়, শরীরের কলকজ্বা আর আগের মতো থাকে না। এই-ই নিয়ম কিন্তু এসব কথা কাউকে বলে বুঝানো যায় না। আমি কতোটূকু আনন্দ পেলাম, কতোটুকু দুঃখ পেলাম বা কতোটুকু আঘাত পেলাম তা কি স্কেল দিয়ে মাপা যাবে? নাকি ওজন করা যাবে? ধোঁকা ফাঁকিবাজির মাঝে একসাথে বসবাসের ভান করার চেয়ে সম্পর্ক ভাঙ্গা অনেক ভালো।
মানুষের মন বহু বিচিত্র।
একজন মানূষের সাথে আরেক জন মানুষের কোনো মিল থাকে না। কোনো এক মঞ্চ নাটকে নায়িকা বলেছিল- সেই তত সুখী, যারা অভিনয় করে মিথ্যা কথা বলতে পারে। মানুষ নিজেই বোধ হয় অতলে তলিয়ে যাবার পথটি বোকার মতো তৈরী করে নেয় পৃথিবীটা কী চমৎকার। লাইফ ইজ সো বিউটিফুল! এখানে ভালোবাসার রং বদল হতেই থাকে। একদিন ফুরিয়ে আসবে আমাদের জীবনের। চক্র মানুষের একদিন ফুরাবেই, এই তো নিয়ম! তবু সারাটা জীবন কি অবহেলায়, কী হেলাফেলায় জীবন কাটিয়ে দিচ্ছি!
আমি কেন জানি অনেক কিছু আগে থেকেই বুঝতে পারি।
আমি বুঝতে পারি আমার প্রিয় মানুষদের সাথে আমার সম্পর্ক খারাপ হয়ে যাবে। বুঝতে পারি জীবনে আমি উন্নতি করতে পারবো না।কিন্তু তাতে কারো কোনো ক্ষতি হবে না। শুধু আমার নিজের ছাড়া। আমি ছোটবেলা থেকেই দেখেছি কারো সাথেই আমার মিলে না, তাই আমি নিজের মতোই একলা একলা ঘুরে বেড়াই। আমি বুঝতে পারছি না, আমি কার জন্য, ঠিক কিসের জন্য বাঁচব। সারাদিন ভেবেছিলাম কোথাও আমার কোনো পথ নেই, কোথাও শান্তি নেই, অপমানের শেষ নেই, দুঃখের কমতি নেই এই সব চিন্তা এক মুহুর্তেই মিথ্যা হয়ে গেল। আমার আছে অনন্ত আকাশ। আমাকে কেউ বেদনা, অপমান,অন্যায়ের মধ্যে বন্দি করে রাখতে পারে এমন শক্তি বিশ্বব্রহ্মান্ডের কোনো রাজা মহারাজার নেই।
স্বপ্ন দেখে ঘুম ভাঙ্গলো সন্ধ্যায়।
স্বপ্নে দেখলাম করোনার টিকা নিয়েছি। ঠিক টিকা না। ডাক্তার আমাকে একটা ট্যাবলেট দিলেন। সেটা নাকি টিকার চেয়েও শক্তিশালী। স্বপ্নটা এত গভীর ছিলো- ঘুম ভাঙ্গার পরও বুঝতে পারি নি- স্বপ্ন দেখেছি না বাস্তব! ডাক্তারের রুমে গেলাম। সেখানে তিনজন মেয়েকে দেখলাম সাদা এপ্রোন পরা। তাদের গলায় স্টেথোস্কোপ। তিন জন মোবাইলে মন দিয়ে যেন কি দেখছে। আমি গিয়ে বললাম, ম্যাডাম আমাকে করোনার টিকা দিন। তিন জনই আমাকে দেখে খুব বিরক্ত হলো। তাঁরা বলল, টিকা নাই। সব শেষ। আপনি তিন মাস পড়ে আসুন। আমি বললাম, এটা কেমন কথা! আমি রেজিস্টেশন করেছি। এই দেখুন কাগজ। ডাক্তার বললেন, আপনি যান প্লীজ। বিরক্ত করবেন না। আমি কান্না শুরু করলাম। ডাক্তারের মায়া হলো তাঁরা আমাকে টিকার বদলে একটা ট্যাবলেট দিলেন। বললেন, এটা টিকার চেয়েও শক্তিশালী। ট্যাবলেট টা এক আঙুল সমান লম্বা। আমি বললাম, এটা গলা দিয়ে নামবে কিভাবে? ডাক্তার বললেন, তাহলে পানিতে গুলিয়ে খেয়ে নিবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:২৯