
গতকাল রাতে তিনটায় বিছানায় গিয়েছি।
রাতে খুব বেশি খেয়ে ফেলেছিলাম। হাঁসফাঁস লাগছিলো। ভাবলাম ছাদে যাই কিছুক্ষন হাঁটাহাঁটি করি। কিন্তু ছাদে গেলাম না। মনে হলো ছাদে গেলে অশরীরী কারো সাথে দেখা হয়ে যাবে। কিছুটা ভয় লাগলো। একটা মুভি দেখা শুরু করলাম। নায়ক অন্ধ। তাকে ত্রিশ জন লোক ঘিরে ধরেছে। সবার হাতে দা, ছুরি, লাঠি, চাপাতি। তাঁরা নায়ককে ঘিরে ধরেছে। নায়িকা দূরে দাঁড়িয়ে আছে। বারবার সে দেবতা শিবকে ডাকছে। রাস্তায় অনেক মানুষ জমে গেছে। না জানি কি হয়? মুহুর্তের মধ্যে নায়ক ত্রিশ জনকে মেরে মাটিতে শুইয়ে দিয়েছে। অথচ নায়ক অন্ধ। মুগ্ধ হয়ে এই ফালতু মুভি দেখলাম। সময়ের অপচয় করা হলো।
টিভি অফ না করেই ঘুমিয়ে গেছি।
পাশের রুমে সুরভি আর আমার কন্যা। রাত তিনটা। সোফার উপরেই ঘুমিয়ে গেছি। গভীর ঘুম। ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখা শুরু করলাম। স্বপ্নে দেখি আমি মরে গেছি। একজন ডাক্তার ডেকে আনা হয়েছে। ডাক্তার বলছে, ঘুমের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে। মসজিদ থেকে মরার খাট আনা হয়েছে। আমাকে সেখানে শুয়ে রাখা হয়েছে। সুরভি খুব কান্না করছে। সে কাঁদতে কাঁদতে ফিট হচ্ছে। আমার ছোট কন্যা ফারাজা। সে জানে না মৃত্যু কি? সে আমাকে ডাকছে 'বাবা' 'বাবা'। বাইরে। তার হাতে একটুকরো পাউরুটি। আমি মরে গেছি। অথচ সব দেখতে পাচ্ছি। শুনতে পাচ্ছি। আমার ভাইদের মধ্যে কিছুটা দিশেহারা ভাব। কেউ একজন বলল, আছরের ওয়াক্তে মাটি দিয়ে দাও। কান্নাকাটি থামাও। কোরআন পড়ো। মাদ্রাসা থেকে পোলাপান চলে এসেছে। তাঁরা সমানে কোরআন পড়ে যাচ্ছে।
একজন বলল আত্মীয়স্বজন সবাইকে খবর দেওয়া হয়েছে?
লাশ কিন্তু বেশিক্ষন রাখা যাবে না। আমি বললাম, সামু ব্লগের লোকজনদের খবরটা দিন। দীর্ঘদিন তাদের সাথে ছিলাম। আমার মৃত্যুর খবরটা তাদেরও জানা দরকার। কেউ আমার কথা শুনলো না। আমার সারা শরীর ঢাকা। শুধু মুখটা দেখা যাচ্ছে। অনেকে আমাকে দেখছে। নানান রকম কথা বলছে। 'লোকটা ভালো ছিলো'। 'এত অল্প বয়সে মরে গেলো'! এক মহিলা বললেন, 'মুখটা কেমন হাসি হাসি। মাশাল্লাহ। আল্লাহ বেহেশত নসিব করুক'। সবাই আমাকে এক পলক করে দেখছে। আমার যথেষ্ঠ বিরক্ত লাগছে। মনে মনে ভাবছি আছরের ওয়াক্ত কখন আসবে! এত এত মানুষের নাটক আর ভালো লাগছে না। জন্মের সময়ও অনেক দিকদারি, মৃত্যুর সময়ও অনেক দিকদারি। শান্তি নাই। আজিব দুনিয়া।
আমাকে মসজিদের পেছনে নিয়ে যাওয়া হলো।
আমাকে এখন গোসল করানো হবে। দুইজন মানুষ মিলে আমাকে গোসল করালো। সাদা কাপড় দিয়ে আমাকে ভালো করে মুড়ে দিলো। আমার লাশ রাখা হলো মুসজিদের সামনে। আছরের নামাজ শেষে আমার জানাজা হবে। জানাজা হলো। আমাকে এখন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কবরস্থানে। মাটি গর্ত করা হয়েছে। বাঁশ ফালি ফালি করে কাটা হয়েছে। আমার তিন ভাই মিলে আমাকে কবরে নামালো। সব প্রক্রিয়া শেষ হতে ৫০ মিনিট সময় লাগলো। সবাই আমাকে অন্ধকার কবরে রেখে বাসায় চলে এলো। কবরে আমার ভালো লাগছে না। এমন সময় দুইজন ব্যাক্তি এলো। একজন বলল- বল তোর রব কে? আমি বললাম, সামনে থেকে যা। নইলে থাপ্পড় খাবি।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




