
একদিন দেখলাম বাবা মা আলাপ করছে।
ছেলে বড় হচ্ছে। ওর মুসলমানি করা দরকার। এক শুক্রবার বাসায় হাজম (হাজম মানে যারা ছেলেদের মুসলমানি করায়) এলো। এক মিনিটের মধ্যে সে আমার নুনু কেটে দিলো। মুসলমানির আগে বেশ ভয় পাচ্ছিলাম। কারন বন্ধুদের কাছ থেকে মুসলমানি নিয়ে নানা রকম কথা শুনেছিলাম। সত্য কথা বলি, ভয়ে কলিজা কেঁপে উঠেছিলো। হাজম কিভাবে আমাকে মুসলমানি করালো জানি না। কারন আমার মুখ অন্য দিকে ঘুরিয়ে রাখা হয়েছিলো।
যাইহোক, মুসলমানি শেষ হলো।
আমি বিছানায় উলঙ্গ হয়ে শুয়ে আছি। বেশ লজ্জাকর অবস্থা। একটা কাপড় দিয়ে যে লজ্জাস্থান ঢেকে রাখব, সেই উপায় নাই। নুনুতে কিছু লাগলেই জ্বলে। এর মধ্যে লোকজন আমাকে দেখতে আসে। যেন কোনো উৎসব। মুড়ি, চিড়া আর মোয়া দিয়ে ঘর ভরে গেছে। সবাই নুনুর দিকে তাকিতে থাকে। লজ্জায় আমি শেষ। একদিন দুপুরবেলা পাশের বাসার সোনিয়া এসে হাজির। উফ কি লজ্জা ! কি লজ্জা! মিথ্যা বলব না, সোনিয়াকে আমার বেশ লাগতো। সোনিয়া আমাকে দেখলেই খেপাতো। বলতো, তোর নুনু দেখেছি। দেখেছি। আমার খুব রাগ লাগতো। ইচ্ছা করতো সোনিয়াকে একটা থাপ্পড় দেই।
মুসলমানি হয়েছে। সাত দিন শুয়ে থাকতে হবে।
আমি ছিলাম অস্থির প্রকৃতির ছেলে। সারাদিন দৌড়ঝাপ করতাম। এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় ঘুরে বেড়াতাম। এখন এই আমাকে ন্যাংটা হয়ে শুয়ে থাকতে হচ্ছে। মনে মনে আল্লাহর উপর আমার খুব রাগ হলো। আল্লাহ চাইলে তো মুসলমানি করিয়েই দুনিয়াতে আমাকে পাঠাতে পারতেন। তাহলে দুনিয়াতে এসে এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হতো না। তখন জানতাম না, এখন জানি- **মুসলমানি** হল- পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগের চামড়া কিছুটা কেটে ফেলা। এটাকে আরবি ভাষায় খতনা বলা হয়।
মুসলমানি হওয়ার পরই ঝামেলা শেষ না।
মুসলমানির সময় হাজম একটা সাদা কাপড় পুড়িয়ে নুনুতে লাগিয়ে দিতো। সেই পোড়া কাপড় প্রতিদিন হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে দিতে হতো। তখন একটু একটু করে পোড়া কাপড়টা ছিড়ে আসতো। উফ কি যে যন্ত্রনা। যাই হোক, সাত দিনের মধ্যে মোটামোটি ঝামেলা শেষ। যদিও ভালো করে প্যান্ট পড়তে ১৫ দিন সময় লেগে ছিলো। কারন কোনো কাপড় নুনুতে লাগলেই জ্বলতো। ধর্মীয় কারণে মুসলমান ও খ্রিস্টানরা খতনা করিয়ে থাকে। কিছু কিছু রোগ হলে যেমন ফাইমোসিস, প্যারাফাইমোসিস হলে খতনা বা মুসলমানি করাতে হয়।
মুসলমানি কমপ্লিট। আব্বা ঘোষনা দিলেন।
বিরাট এক অনুষ্ঠান করবো। আত্মীয়স্বজন সবাইকে দাওয়াত দিয়ে খাওয়াবো। আব্বা আবার এসব কাজে ওস্তাদ। কার্ড ছাপানো হলো। কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করা হলো। বাবুর্চি ঠিক করা হলো। এক শুক্রবার আমার সুন্নতে খাতনার অনুষ্ঠান হলো। খাবারের মেন্যু কি ছিলো আজ আর মনে নাই। তবে অনেক মানুষ এসেছিলো সেটা স্পষ্ট মনে আছে। আমি অনেক খেলনা গিফট পেয়েছিলাম। আমাকে দুধ ও দুবলা দিয়ে গোছল করানো হয়েছিলো। পায়েস খাওয়ানো হয়েছিলো। তারপর এক গ্লাস দুধ। আমাকে প্রিন্সকোট পরানো হয়েছিলো।
এখন পোলাপানের মুসলমানি নিয়ে কোনো সমস্যা নাই।
হাসপাতালে যায়। ডাক্তার দুই মিনিটে কাজ সেরে ফেলে। যার মুসলমানি হয় সে টেরও পায় না। কষ্ট ছিলো আমাদের সময়। আমাদের সময় হাজমকে ৫ শ' টাকা দিলেই সে খুশি। সাথে একটা নতুন লুঙ্গি দিলে তো কথাই নেই। এখন বেসরকারি হাসপাতালে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা লাগে মুসলমানি করাতে। গত বছর আমাদের আরিশকে করালাম। মেয়েদেরও কষ্ট আছে। তাদের নাক ও কান ফুটানো হয়। একসময় সুই গরম হয়ে নাক ও কানে ফুটা করানো হতো। নইলে মেয়েরা নাকফুল আর কানে দুল পড়বে কি করে? এখন অবশ্য নাক ও কান ফুটো করা কোনো সমস্যাই না। পার্লারে গেলেই হলো। ২০ সেকেন্ডের মধ্যে কাজ শেষ।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০২২ দুপুর ১:৪২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




