somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

মানুষ সকলের সাথে মিলেমিশে থাকতে শিখবে কিভাবে?

৩১ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃ আমার তোলা।

এই যুগটা একেবারে আলাদা।
একসময় মানুষ সহজ সরল ছিলো। মানবিক ছিলো। একজনের বিপদে আরেকজন এগিয়ে যেতো। ১৯৪৭ সালের পর মানুষ খুব দ্রুত বদলে যেতে শুরু করে। বদলাতে বদলাতে মানুষ এখন নিষ্ঠুর এবং অমানবিক হয়ে গেছে। কাজেই এ যুগে কারো সাথে মিলেমিশে থাকা যায় না। সম্ভব না। আপন মার পেটের ভাই বোনের সাথেও মিলেমিশে থাকা যায় না। দ্বন্দ লেগেই আছে। ঘরে বাইরে সব জায়গায় দ্বন্দ। কারো মধ্যে ছাড় দেওয়ার মানসিকতা নেই। আপন ভাইবোন ছাড়াও বাবা মায়ের সাথেও দ্বন্দ লেগে আছে। প্রতিটা ঘরে ঘরে একই কাহিনী। এযুগের মানুষ জানে না তার পাশের ফ্ল্যাটের লোকজন কেমন আছে। জানতে চায় না। দিন দিন মানুষ বড় আত্মকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে।

বর্তমান সময়ের মানুষ ঘর থেকে বাইরে বের হলেই অমানুষে পরিনত হয়।
যে পিতা তার পরিবারের কাছে আদর্শবান, হৃদয়বান- সেই পিতাও রাস্তায় বের হলে অমানুষ হয়ে যায়। আপনি সকালে অফিসে যাবেন, বাসে উঠতে হলে আপনাকে যুদ্ধ করতে হবে। কেউ একজন কোনো রকমে বাসে উঠতে পারলে সে আর অন্য কাউকে সুযোগ দেবে না। বাসের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকবে। হাজার অনুরোধ করেও তাকে সরানো যাবে না। অফিসে গিয়েও শান্তি পাবেন না। অফিস পলিটিক্স আপনাকে দৌড়ের উপর রাখবে। তখন চাকরী কি করে বাচাবেন এই চিন্তায় আপনাকে অস্থির হয়ে থাকতে হবে। মানুষ অন্যায় করবে, অবিচার করবে- সব দেখে শুনেও এই সমাজে চুপ করে থাকতে হয়। সবাই চুপ করে থাকে। সমাজের খারাপ ব্যাপার গুলো এখন অলিখিত নিয়মে পরিনত হয়েছে। সবাই চুপ।

বাজারে যাবেন মানুষ আপনাকে ঠকাবে।
ফল কিনবেন, মাংস কিনবেন মাপে কম দিবে, সবাই যেন ঠকানোর জন্যই বসে আছে। ব্যবসায়ীরা মনে করেন কাউকে ঠকাতে পারলেই বুঝি জিতে গেলাম। সমাজে বেশির ভাগ মানুষের মানসিকতা এরকম। জিততে হলে ঠকাতে হবে। যে 'মানুষ', 'মানুষ'কে ঠকাতে চায় তার সাথে কিভাবে মিলেমিশে থাকা যায়? কাজেই মানুষের কাছ থেকে দূরে থাকাই ভালো। বর্তমান সমাজের সব মানুষ মন্দ। এই সমাজে কোনো ভালো মানুষ নেই। যাদেরকে ভালো 'মানুষ' বলে মনে করছেন, তাঁরা ভালোর মুখোশ পড়ে আছে। এই সমাজে কেউ ভালো না। মসজিদের ইমাম ভালো না, মন্দিরের পুরোহিত ভালো না, গির্জার ফাদার ভালো না। স্কুলের শিক্ষক ভালো না। ডাক্তার, লেখক, ব্লগার, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী কেউ ভালো না। তাছাড়া এই সমাজের কেউ কারো সাথে মিলেমিশে থাকতে চায় না।

কথায় বলে, বোবার কোনো শত্রু নেই।
এই সমাজে টিকে থাকতে হলে, ভালো থাকতে হলে- বোবা হয়ে যেতে হবে। অন্যায় অবিচার দেখেও না দেখার ভান করতে হবে। এখন একজন মানুষের সাথে আরেকজন মানুষের দীর্ঘদিন সম্পর্ক থাকে না। এর কারন কি? এর কারন হচ্ছে- কেউ কারো ভালো সহ্য করতে পারে না। বাঙ্গালী বড্ড হিংসাপ্রবন। এই সমাজের লোকজন- কারো ক্ষতি হয়েছে, কেউ বিপদে আছে- শুনলে খুশি হয়। তালি দেয়। এখন আপনিই বলুন সমাজে এরকম মানুষের সাথে মিলেমিশে থাকা যায়? সম্ভব? দিনের পর দিন- মানুষের নোংরামি, বদমাশি, কপতটা, হিংসা, অতি নিম্ম মানসিকতা, হারামিপনা, তেলামি, চাটুকারিতা গুলো আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি। দেখে দেখে মানুষের প্রতি আমার ঘৃণা জন্মে গেছে। তাই মানুষের কাছ থেকে আমি দূরে থাকি। এখন- ভালো আছি।

এই সমাজে কেউ কারো না।
মানুষের লোভ, হিংসা, আত্মকেন্দ্রিকতা, হিংসাত্মক মনোভাব, নিম্ম মানসিকতা, রেষারেষি, কুটিলতা জটিলতার কারণে- একান্নবর্তী পরিবার গুলো ভাঙতে ভাঙতে আজ আর একান্নবর্তী পরিবার চোখে দেখা যায় না। সবাই আলাদা হয়ে গেছে। সবাই বদলে গেছে। এযুগের মানুষ তার নিজের পরিবারের বাইরে কারো কথা ভাবে না। চিন্তা করে না। আজ যে বন্ধু, কাল সে শত্রু। এজন্য এযুগে সত্যিকারের ভালো মানুষ নেই। মহৎ মানুষ নেই। হৃদয়বান মানুষ নেই। তাই কারো সাথে মিলেমিশে থাকা সম্ভব নয়। হাজার চেষ্টা করলেও সম্ভব না। যারা মিলেমিশে আছে, তাঁরা উপরে উপরে মিলে আছে। ভিতরে ভিতরে একজন আরেকজনের শত্রু। সুযোগ পেলেই ছোবল দিবে। তাই মন্দ মানুষের সাথে মেশার চেয়ে একা থাকা ভালো।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ১:৫৩
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৈয়দ কুতুবের পোষ্ট: ভারতের করণীয় কি কি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৩



বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক ভালো রাখার জন্য ভারতের করণীয় কি কি?

০) শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো।
১) বর্ডার থেকে কাঁটাতারের ফেন্চ তুলে নেয়া।
২) রাতে যারা বর্ডার ক্রস করে, তাদেরকে গুলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বদেশ প্রত্যার্বতন : আমি আশাবাদী হতে চাই

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৩৪

স্বদেশ প্রত্যার্বতন : আমি আশাবাদী হতে চাই
আজ ২৫ তারিখ, ২৫শে ডিসেম্বর ২০২৫ সাল (প্রকৃতির এক অদ্ভূদ খেয়াল) ।



৬ হাজার ৩১৪ দিন পর তারেক জিয়া বীরের বেশে অসংখ্য মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

খাম্বার পরবর্তী অধ‍্যায় ,নাকি ১০% বদল হবে‼️অমি খোয়াব ভবনে ঘুমিয়ে , হাওয়া ভবনের আতঙ্কে আতঙ্কিত॥

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৮



খালেদা জিয়ার অসুস্থতার নাটক ছিল তারেক জিয়ার দেশে ফেরার রাজনৈতিক ট্রাম্পকার্ড। কথায় আছে,' দুষ্টু লোকের মিষ্টি ভাষা '। বাংলাদেশের রাজনীতিতে দূর্নীতিবাজ ও মাফিয়া গডফাদার তারেক রহমানের দেশে ফেরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

খালেদার ১টি প্ল্যান ছিলো, মহা-ডাকাতের ১টি প্ল্যান আছে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:২৩



২০১৪ সালের ভোটের আগে খালাদা বলেছিলো যে, তার কাছে ১টা প্ল্যান আছে, যা ১ বছরের মাঝে বেকার সমস্যা ও বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করে দিবে। তিনি প্ল্যানটি প্রকাশ করেননি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে গুমের ঘটনা: শেখ হাসিনার শাসনকালের একটি কালো অধ্যায়

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৪৯

বাংলাদেশে গুমের ঘটনা: শেখ হাসিনার শাসনকালের একটি কালো অধ্যায়

গুমের শিকার ব্যক্তিদের অতি ক্ষুদ্র কক্ষের ছবিটি বিবিসি ডটকম থেকে নেওয়া।

পরিচিতি

বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×