
সেই সময় কোনো অফিস ছিলো না। কলকারখানা ছিলো না। মিল ফ্যাক্টরী ছিলো না। সংবাদপত্র ছিলো না। স্কুল কলেজ ছিলো না আরবের। বেশির ভাগ মানুষ মাছ ধরতো। ভেড়া পালতো। গহনা তৈরি করতো। চামড়ার পোষাক তৈরি করতো। তবে খেজুর উৎপাদন হতো অনেক। নবীজি কয়েকদিন অন্যের ছাগল চরিয়েছেন। নবীজির নিজের ছাগল ছিলো না। কিছু অর্থের বিনিময়ে অন্যের ছাগল চড়াতেন। অনেকে বলেন, নবীজি ব্যবসা করতেন। ঠিক কিসের ব্যবস্থা তার স্পষ্ট প্রমান মেলে না। ব্যবসার উদ্দ্যেশে তিনি সিরিয়া, ইয়েমেন, বসরা ইত্যাদি অঞ্চলে গিয়েছেন। নবীজি তার বংশ থেকে পাচটি উট পেয়েছিলেন। এবং একখন্ড জমি।
খাদিজা নামে এক ধনী বয়স্ক মহিলা ছিলেন। নবীজি তার সাথে ঘুরতেন। বিনিময়ে অর্থ পেতেন। এই খাদিজা ঠিক কি ধরনের ব্যবসা করতেন তার সঠিক তথ্য কোথাও নেই। নবীজির সাথে এই মহিলার ভালোবাসা হয়ে যায়। একসময় তাঁরা বিয়ে করে ফেলেন। তাদের সংসারে ছয় জন সন্তান আসে। ছয় সন্তানের মধ্যে দুজন জন্মের কয়েকদিন পর মারা যায়। বাকি সন্তানেরা দীর্ঘ হায়াত পাননি। উল্লেখ খাদিজার আগে একবার বিয়ে হয়েছিলো। খাদিজা ঘর সংসারে মন দিলেন। নবীজি ব্যবসায় মন দিলেন। যাইহোক, একসময় নবীজি ধর্ম প্রচার নিয়ে এত ব্যস্ত ছিলেন যে অন্য কোনো কাজ করার আর সময় পাননি। কাবা ঘর নির্মান নিয়ে নবীজি ভীষন ব্যস্ত ছিলেন। কাবা ঘর থেকে মূল্যবান সম্পদ চুরী হয়ে যাচ্ছিলো। তখন কাবা ঘরে ছাদ ছিলো না।
আরবের লোকদের নোংরা জীবনযাপন আর অরাজাকরতা দেখে নবীজী যথেষ্ঠ বিরক্ত হলেন। তাই নবী হেরা গুহায় ধ্যান করতে শুরু করলেন। তখন নবীজির স্ত্রী খাদিজা বেঁচে ছিলেন। তিনি দুই মাইল হেটে এসে হেরা গুহায় নিয়মিত খাবার দিয়ে যেতেন নবীজিকে। তখন তো আর রিকশা, সিএনজি বা পাঠাও, উবার ছিলো না। অবশ্য নবীজি বেশির ভাগ সময় খাবার খেতেন না। গরীব মিসকিনদের দিয়ে দিতেন। রমজান মাসে নবীজি টানা একমাস হেরা গুহায় থাকতেন। যাইহোক, নবীজির পেশায় ফিরে যাই। সেই সময় আরবে পশুর চামড়া বিক্রি হতো। তরোয়াল এর বেশ চাহিদা ছিলো। অবশ্য তখন কোনো ব্যবসায়ী শান্তিতে ব্যবসা করতে পারতো না। খুব ডাকাতের উৎপাত ছিলো। মক্কা-মদীনায় নবীজিকে বহু লোক পছন্দ করত, ভালবাসতো, শ্রদ্ধা করত। তাঁরা যে কোনো বিপদে আপদে নবীজির কছে দৌড়ে চলে আসতেন।
নবীজি চাইতেন প্রতিটা এলাকায় মসজিদ নির্মান হোক। এবং মসজিদের পাশে থাকবে বাজার। তাহলে ব্যবসা ভালো হবে। নামাজ শেষে তিনি বলতেন, মাপে কম দিবে না। কাউকে ঠকাবে না। সুদ এর কারবার থেকে দূরে থাকো। জমি চাষ করো। সময় মতো পানি দাও। তাহলে ভালো ফসল পাবে। নবীজি যুদ্ধ করতেন। যুদ্ধে জয়ী হয়ে অনেক সম্পদ অর্জন করতেন। সেসব সম্পদ নিজের জন্য সামান্য রেখে যাকাত হিসেবে বিলিয়ে দিতেন। নবীজির সংগ্রহে অনেক গুলো উট ছিলো। এমনকি নবীজি নিজের জমি অন্যকে বর্গা দিতেন। নবীজি আরাম আয়েশে নিজের জীবন বিলিয়ে দেননি। কারন একটা জীবন তিনি অর্থে কষ্টে পার করেছেন। খাদিজা কে বিয়ের পর তার ভাগ্য ফিরে। নবীজি মাটিতে ঘুমাতেন। প্রতিদিন আসরের নামাজ শেষে নবীজি তার সাহাবীদের সাথে গল্প করতেন। হুজাইফা নামে এক সাহাবী ছিলেন। নবীজিকে খুব পছন্দ করতেন। এই হুজাইফা নবীজির ব্যাক্তিগত সচিব ছিলেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:২২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



