
আজ নভেম্বর মাসের প্রথম দিন।
বাংলা কার্তিক মাসের ১৬ তারিখ। আর আরবী 'রবি উস সানী' মাসের ৫ তারিখ। মাস, তারিখ নিয়ে আমি চিন্তিত নই। আমার কাছে আল্লাহর প্রতিটা দিনই গুরুত্বপূর্ন। যাইহোক, বনানীতে একটা রেস্টুরেন্ট আছে। নাম হচ্ছে 'পাগলা বাবুর্চি'। অদ্ভুত নাম। ঢাকা শহরের মানুষ অদ্ভুত ব্যাপার স্যাপার খুবই পছন্দ করে। আমি গেলাম পাগলা বাবুর্চি রেস্টুরেন্টে। আমি খেতে পছন্দ করি। তার মানে এই না যে আমি প্রচুর খাই। আমি খুবই সামান্য খাই। সেই সামান্য খাবারটুকু অবশ্যই স্বাদ হতে হবে। পাগলা বাবুর্চি রেস্টুরেন্টে সকালে নাস্তা করলাম। ওদের খাবারের স্বাদ আর বেলি রোডের 'নবাবী ভোজ' রেস্টুরেন্টের খাবারের স্বাদ আমার কাছে একরকম লাগলো।
আপনারা কি ভর্তা খান?
চিংড়ি মাছের ভর্তা আমার ভালো লাগে। সেদিন সুরভি চিংড়ি মাছের ভর্তা করেছিল। সাথে আবার ধনেপাতা দিয়েছিলো। সেই রকম স্বাদ হয়েছিলো। গরম ভাতের সাথে খেতে দারুন ভালো লাগলো। আপনি যদি মিনিকেট চালের সাথে চিংড়ি ভর্তা খান, তবে তেমন স্বাদ পাবেন না। আপনাকে খেতে হবে নাজির শাইল চাল দিয়ে। তাহলেই আসল স্বাদ পাওয়া যাবে। নাজির শাইল চাল কিন্তু তিন রকমের আছে। হাস্কি নাজির দিয়ে খেলে হবে না। শুধু নাজির শাইল দিয়ে খেতে হবে। বর্তমানে বাজারে নাজির শাইল চাল কেজি ৭০/৭২ টাকা করে। ভর্তার আসল রহস্য ভাতে- এটা আমার আবিস্কার। কাজেই যে ভর্তা দিয়েই ভাত খান, খেয়াল রাখবেন চালটা যেন ভালো হয়। এবং গরম ভাত দিয়ে খেতে হবে। ধোয়া উঠা গরম ভাত।
গত শুক্রবার এক বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছি।
সুরভি যায়নি। আমি ছোট কন্যা ফারাজাকে নিয়ে গিয়েছি। সাধারণত বিয়ের অনুষ্ঠানে ছোট বাচ্চাদের বাবা মা খাইয়ে দেয়। আমি এই কাজটা করি না। আমি ফারাজাকে প্লেটে খাবার বেড়ে দিয়েছি। সে আমার পাশে বসে খেয়েছে। এবং বলেছে বাবা 'মজা'। তাকে খেতে সব দিয়েছি। বিয়ের বাড়ির জর্দাও খেয়েছে। জর্দার উপরে ছোট ছোট মিষ্টি থাকে সে-ই মিষ্টিও ফারাজা খেয়েছে। এবং সে একাএকা খেয়ে ভীষন খুশি হয়েছি। এখানে যদি সুরভি থাকতো- তাহলে সে নিজের হাতে মেয়েকে খাওয়াতো। মেয়ে খেতে চাইতো না। মেয়ে ছোটাছোটি করত। সুরভি মেয়ের পেছনে ছুটতো। ফারাজা খাবার মুখ থেকে ফেলে দিতো। নানান তালবাহানা। ফারাজা আমার সাথে কোথাও গেলে শান্তি পায়, আরাম পায়। সুরভি তো কোল থেকেই নামাতে চায় না।
গতকাল রাতে পাশের বাসায় দাওয়াত ছিল।
কোনো অনুষ্ঠান না। এমনিই দাওয়াত। খেতে গেলাম। বিরাট আয়োজন। খাওয়ার পর দিয়েছে- দুধ সেমাই, দই, আর চার রকমের মিষ্টি। আমি সামান্য খেলাম। ওদের পোলাউ টা ভালো হয়েছে। ঝরঝরে হয়েছে। বাসা বাড়িতে বেশির মহিলারা পোলাও টা ভালো রান্না করতে পারে না। আমার একটা স্বভাব হলো পোলাউ ঝরঝরে না হলে আমি খাই না। একবার গাজীপুরের মাওনা নামে এক গ্রামে গিয়েছি। মাটির চুলায় রান্না করেছে। পোলাউ ঠিকঠাক ছিলো। কিন্তু রোষ্ট খুব শক্ত। এত শক্ত যে দাঁত দিয়ে ছেঁড়া যায় না। আমি স্পষ্ট বলে দিয়েছি- রোষ্ট ভালো হয়নি। খুব শক্ত। হয়তো উনি রাগ করেছেন, মুখের উপর এরকম কথা বলে দেওয়াতে। আমি বলেছি, বলেই এই মহিলা ভবিষ্যতে যখন রান্না করবেন, তখন খেয়াল করবেন, রোষ্ট ঠিকঠাক আছে কিনা।
আমার ছোট ভাইয়ের বউ ব্যাংকে চাকরী করে।
অদ্ভুত সব রান্না করে। একটা উদাহরণ দেই। আলু সিদ্ধ করে। সিদ্ধ করা আলু টুকরো টুকরো কাটে। সেটার মধ্যে ভাজা কালিজিরা ছিটিয়ে দেয়। তারপর সেই আলু লুচি দিয়ে খায়। আমি মুখে দিয়ে দেখেছি অতি অখাদ্য। অথচ আমার ভাই খায় আর বলে খুব মজা। মজা। ছোট ভাই বলে, এই খাবারটা ইটালিতে খুবই জনপ্রিয়। আমার ধারণা সে তার বউকে খুশি করার জন্য মজা মজা বলে। সুরভি রান্না করুক, আর আমার মা রান্না করুক অথবা অন্য কেউ- খাবার স্বাদ না হলে আমি স্পষ্ট করে বলে দেই। বলে দেওয়াই উচিৎ। তাহলে যে রান্না করেছে সে সর্তক থাকবে। হ্যাঁ, আমি জানি, রান্না করতে কষ্ট আছে। যাইহোক, আমার ধারনা যে সব মানুষ রান্নাকে একটা শিল্প মনে করে তাদের রান্না সব সময় ভালো হয়।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:১৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



