somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আমাদের শাহেদ জামাল- (ছেচল্লিশ)

২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃ আনন্দবাজার পত্রিকা।

মোবাইল ফোন বাজছে। বেজেই চলেছে।
রাত তিনটায় শাহেদ জামালের ঘুম ভাঙ্গলো। তার ঘুম ভাঙাতে সে খুশি। কারন সে এক ভয়ানক দুঃস্বপ্ন দেখছিল। স্বপ্নে দেখছিলো- একদল লোক রাস্তায় বের হয়েছে। তাদের হাতে তরোয়াল, রামদা, চায়নিজ কুড়াল। তাদের মাথায় পাগরী। সাদা আলখাল্লা পরা। আলখাল্লায় আচকান জড়ানো। মুখে দাঁড়ি। তাঁরা সামনে যাকেই পাচ্ছে তাকেই কুপিয়ে মারছে। ঘটনা চক্রে শাহেদ জামাল এরকম একটা দলের সামনে পরে যায়। এতজনের সাথে শাহেদ জামালের একা লড়াই করা সম্ভব না। শাহেদ জামাল ঝেড়ে দিলো দৌড়। শাহেদ জামাল ছোটবেলা থেকেই দৌড়ে ভালো। স্কুলে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সে সব সময় প্রথম হতো। পুরস্কার হিসেবে পেতো কাপ পিরিজ। ঘরের সোকেসে কাপ পিরিজ গুলো এখনও সাজানো আছে।

এত রাতে কে ফোন করলো!
নাম্বার দেখে মনে হচ্ছে বিদেশ থেকে ফোন এসেছে। শাহেদ ফোন ধরলো। ফোন এসেছে রাশিয়া থেকে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ভ্লাদিম ফোন করেছেন। সে খুবই বিনয়ের সাথে বলল, শাহেদ জামালকে রাশিয়া যেতে হবে। তাঁরা চায় শাহেদকে মহাকাশে পাঠাবে। মহাকাশে একটা স্যাটেলাইট বিগড়ে গেছে। যে কোনো সময় সেটা পৃথিবীর উপর আছড়ে পড়বে। তাতে পৃথিবীর ক্ষতি হবে। এখন শাহেদ জামাল মহাকাশে গিয়ে সেই স্যাটালাইট ঠিক করবে অথবা সেটা নষ্ট করে দিবে যেন সেটা কোনো দেশের উপর না পরে। সবচেয়ে ভালো হয় সেটা ভারত মহাসাগরের উপরে ফেলতে পারলে। তাহলে কারো প্রানহানি হবে না। আপাতত দৃষ্টিতে খুব কঠিন কাজ মনে হলেও, আহামরি কোনো কঠিন কাজ নয়। মানুষের জন্য অসম্ভব কিছুই না।

শাহেদ বলল, আপনারা বোধহয় ভুল করছেন।
আমি মহাকাশ, মহাযান এসব সম্পর্কে কিছুই জানি না। ভ্লাদিম বললেন, পৃথিবীর সব মানুষের ডাটা আমাদের সংরক্ষনে আছে। আমরা জানি কোন মানুষ কি রকম, তাদের চিন্তা ভাবনা সম্পর্কে আমাদের ধারনা আছে। আমাদের ডাটা বলছে, আপনি অন্যরকম। আপনার মেধা উন্নত। আপনি সবার থেকে আলাদা। রাশিয়া মনে করছে পৃথিবীর আসন্ন বিপদে আপনিই উদ্দার করতে পারবেন। আমাদের মহাকাশযান আপনার জন্য প্রস্তুত। যাওয়ার আগে আপনাকে এক ঘন্টা হাতে কলমে কিছু শিখিয়ে দিলেই হবে। মন্ত্রী ভ্লাদিম বললেন, আপনি রেডি হোন। কিছুক্ষনের মধ্যে উড়োজাহাজ আপনাকে নিতে আসবে। শাহেদ জামালের মাথা কাজ করছে না। ঠিক এমন সময় শাহেদ জামালের মোবাইলে আরেকটা ফোন আসে।

শাহেদ জামাল ফোন ধরলো।
ফোনটি এসেছে আমেরিকার নাসা থেকে। ফোন করেছেন জন এডাম। এডাম নাসার প্রধান পরিচালক। তিনি বললেন, শাহেদ আপনাকে আগামীকাল মহাকাশে পাঠানো হবে। সেখানে একটা মহাকাশ যান ও স্যাটেলাইট মুখোমুখি সংঘর্ষ হবার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। এই সংঘর্ষ বন্ধ করতে হবে। নইলে পৃথিবীবাসীর বড় বিপদ হবে। শাহেদ বলল, মিঃ এডাম রাশিয়া থেকে ফোন এসেছিলো। জন এডাম শাহেদ জামালকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, আমরা সব জানি। আসলে রাশিয়া চাচ্ছে- তাঁরা পৃথিবীর আসন্ন বিপদ কাটাতে। তাহলে তাদের নাম হবে। এবং নাসাকে তুচ্ছ করা হবে। এজন্য জনাব শাহেদ আপনি প্রস্তুত হোন। আপনার জন্য আমেরিকান রকেট অপেক্ষা করে আছে। মহাকাশ থেকে ফিরে সে আপনি হয়ে যাবেন বিশ্ব নায়ক।

মসজিদে ফযরের আযান হচ্ছে।
আকাশ একটু একটু করে ফর্সা হতে শুরু করেছে। শাহেদ জামাল এক কাপ চা বানিয়ে ব্যলকনিতে এসে দাঁড়ালো। শাহেদ জামাল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। পৃথিবীর আসন্ন বিপদে সে চুপচাপ বসে থাকবে না। মানুষ দেশের জন্য কাজ করে। আর সে কাজ করবে সারা বিশ্বের জন্য। তবে সে তার পরিবারকে কিছুই জানাবে না। গোপনে সে চলে যাবে। শাহেদ তার মার কাছ গিয়ে কিছুক্ষন বসলো। মা গভীর ঘুমে। শাহেদ নীলাকে ফোন দিলো। নীলা ফোন ধরলো না। সে-ও নিশ্চয়ই গভীর ঘুমে। মোবাইলের সাউন্ড অফ করা। শাহেদ জামালকে এখনই বের হতে হবে। তবে শাহেদ রাশিয়া যাবে না। সে যাবে আমেরিকা। আমেরিকার হয়ে সে কাজ করবে। রাশিয়া থেকে আমেরিকা ভালো। তাঁরা মানবিক। বিশ্বে তাদের অবদান সবচেয়ে ভালো।

শাহেদ বিজ্ঞানের ছাত্র না।
কিন্তু বিজ্ঞানের প্রতি তার দারুন আগ্রহ আছে। সে আধুনিক টেকনোলিজি সম্পর্কে খোজ খবর রাখে। স্যাটেলাইট সম্পর্কে শাহেদ অল্পবিস্তর জানে। মানুষের তৈরি উপগ্রহকে বলা হয় কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট। রকেট সম্পর্কে সে জানে। জানে মহাকাশ সম্পর্কে। যদিও মহাকাশ হলো অপার রহস্যময়। পৃথিবীর আসল রহস্য লুকিয়ে আছে দুই জায়গায়। এক, মহাকাশ ও দুই, সমুদ্রের গভীরে। একদিন হয়তো মানুষের হাতে সব রহস্যের সমাধান এসে যাবে। ঈশ্বরের চেয়ে মানুষ বেশি ক্ষমতাবান হয়ে যাবে। এই অভিযানে যেতে শাহেদ জামালের মোটে ভয় করছে না। ছোটবেলা থেকেই তার স্বপ্ন ছিলো- একদিন সে মহাকাশে যাবে। অন্তত অসীম সেই মহাকাশ। কত না রহস্যময়! শাহেদ দারুন রোমাঞ্চ বোধ করছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:০৮
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×