প্রথম কথা হলো এই বর্তমান যুগে এসে ১৪ শ' বছর আগের নিয়ম কানুন মেনে চলা বোকামি হবে। ১৪ শ' বছর আগে মানুষ জ্ঞান বিজ্ঞানে উন্নত ছিলো না। বিশেষ করে মরুভুমির দেশ গুলো। তাই তাঁরা বেশির ভাগ কথাই ভুলভাল বলে গেছেন। এখন তাদের কথাবার্তা জাস্ট রুপকথা বলা যেতে পারে। দেখুন, দেশ কিন্তু ধর্মের বিধানে চলে না। দেশ চলে সংবিধান অনুযায়ী। কাজেই বর্তমান জীবনে আপনাকে সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকার জন্য ধর্ম থেকে দূরে থাকতে হবে। সেই সময় আরবের লোকজন জানতে পারেনি- সক্রেটিসের কথা, প্লেটো বা এরিস্টটলের কথা। তাদের জন্মের বহু আগে এই মহান পন্ডিতদের ইতিহাস। তাদের জানতে পারলে, চিনতে পারলে- আরবদের চিন্তা ভানায় পরিবর্তন আসতো। পরিবর্তন আসতো তাদের ধর্মগ্রন্থ গুলোতেও।
আজকের এই আধুনিক পৃথিবী মানুষের তৈরি।
দীর্ঘ সময় পাড়ি দিয়ে মানুষ আজকের সভ্যতা গড়ে তুলেছে। কোনো নবী বা রাসূল এই আধুনিক পৃথিবী তৈরি করে দিয়ে যান নি। আধুনিক বিজ্ঞান তৈরি করে দিয়ে যাননি। তাদের অলৌকিক ক্ষমতা দিয়ে ইন্টারনেট, ল্যাপটপ বা মোবাইল তৈরি করে দিয়ে যাননি। একসময় চুলে উকুন হলে বলা হতো- ন্যাড়া হয়ে যাও, তিন দিন রোজা রাখো। বরকি জবো করো। এখন কিন্তু চুলে উকুন হলে ন্যাড়া হওয়ার দরকার পড়ে না। রোজা রাখারও দরকার পড়ে না। বরকি জবো দেওয়ারও প্রয়োজন পড়ে না। তাই আপনাকে চলতে হবে, আধুনিক নিয়মে। ১৪ শ' বছর আগের নিয়ম কানুন আগলে রাখলে আপনি অকালেই ঝড়ে যাবেন। পড়ে যাবেন। অন্ধকারে রয়ে যাবেন। টানা এক বছর কালিজিরা বা মধু খেলে আপনার অসুখ ভালো হবে না। আপনাকে ভালো ডাক্তার দেখাতে হবে। ওষুধ খেতে হবে।
যারা ইবাদত করছেন, তাঁরা পরকালের ভয়ে ইবাদত করছেন।
তাঁরা মনে করেন মৃত্যুর পর অন্য এক দুনিয়া আছে, সেই দুনিয়াই আসল দুনিয়া এবং সেই দুনিয়া অনন্ত কাল থাকবে। এরকমই তাদের বুঝানো হয়েছে। আসলে তাঁরা কোরআন এবং হাদীসের বাইরে যেতে পারেননি। এই দুই গ্রন্থই আকড়ে থেকেছেন। সারা বিশ্ব তো এই দুই গ্রন্থ দিয়ে চলছে না। কিন্তু মুসলিম জাতি পুরনো ধ্যানধারনা ত্যাগ করতে পারছে না। একটা ছোট ঘটনা বলি- এক ছোট বাচ্চা জানালার গ্রীল ধরে উপরে উঠেছে। হঠাত বাচ্চাটা গ্রীল থেকে ফ্লোরে পড়ে যায়। বেশ ব্যথা পায়। তখন বাচ্চার ধার্মিক পিতামাতা এবং আত্মীয়স্বজন বলছে, এটা শয়তানের কাজ। এই বাচ্চার প্রিয় খেলা জানালার গ্রীল ধরে উপরে উঠা-নামা। কখনও সে নীচে পড়ে যায়নি। সেদিন তাকে শয়তান ধাক্কা মেরে ফেলেছে। তারপর বাসায় সোনা রুপার পানি ছিটানো হয়। দোয়া পড়ে চারিদিকে ফু দেওয়া হয়। ফু'য়ের এমন পাওয়ার শয়তান বাবাগো মাগো বলে পালিয়ে যায়। ধার্মিকদের এই সব ঘটনা আমাকে বিনোদন দেয়।
দেখুন আপনার ভালো না লাগলে ইবাদত করবেন না।
আপনি ইবাদত করলে ঈশ্বরের কোনো উপকার হবে না। বা সমাজ সংসারের কোনো উপকার হবে না। কিন্তু আপনি যদি কাজ করেন, পরিশ্রম করেন- তবে সমাজ, সংসারের উপকার হবে। ইবাদর করলে টাকা পয়সা পাবেন না। অথবা আপনার সংসার অটোমেটিক চলে যাবে না। ধার্মিকেরা বলে রিজিকের মালিক আল্লাহ। কথাটা ঠিক নয়। আসল সত্যটা গরীব মানুষেরা ভালো করেই জানেন। যাদের ঘরে খাবার আছে তাঁরা মানেন রিজিকের মালিক আল্লাহ। মূরগীর রোষ্ট মুখে নিয়ে আহ্লাদ করে বলেন রিজিকের মালিক আল্লাহ। কিন্তু যাদের ঘরে দিনের পর দিন খাবার নেই তাঁরা জানেন রিজিকের মালিক আল্লাহ নন। এবং এই সমস্ত দরিদ্র পরিবার গুলো সব সময় রেগে থাকেন তাদের উপর যারা বলেন, রিজিকের মালিক আল্লাহ। তাহলে তাদের রিজিক কই? তাদের রিজিকের কথা আল্লাহ ভুলে গেছেন? অবশেষে তাঁরা খাবারের জন্য জনে জনে হাত পাতে, রেস্টুরেন্টের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন, চুরী করেন, ছিনতাই করেন। অথবা এমনও হতে পারে প্রভু তাদের রিজিক রেখেছেন চুরী-ছিনতাইয়ে।
বর্তমান পৃথিবীতে কোন ধর্মের লোক বেশি জানেন?
আমি বলে দিচ্ছি বর্তমান পৃথিবীতে ধর্মহীন লোক বেশি। ধর্মহীনদের নাস্তিক বলা হয়। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ বা খিস্টান থেকে নাস্তিক সবচেয়ে বেশি এই বিশ্বে। কারন মানুষ বুঝে গেছে ধর্ম আকড়ে থাকলে না খেয়ে মরতে হবে। পরকালের লোভে পড়ে মানুষ বর্তমান জীবনটা নষ্ট করতে চায় না। মানুষ জানে তার জীবন একটাই। এক জীবনের যতটুকু পারা যায় জীবন উপভোগ করে নিতে হয়। নাস্তিকরা (জ্ঞানীরা) বলেন ধর্ম নামক কুসংস্কার থেকে দূরে থাকুন, ভালো থাকুন। একজন মানবিক মানুষের, একজন হৃদয়বান মানুষের ধর্মের প্রয়োজন পড়ে না। একজন শিক্ষিত রুচিশীল আধুনিক মানুষের ধর্মের প্রয়োজন পড়ে না। যারা বদ, ভন্ড, লোভী, নারীবিদ্বেষী, সুযোগ সন্ধানী তাদের প্রয়োজন ধর্ম নামক আফিম। ভালো মানুষের ধর্ম লাগে না। ভালো কাজ করতে ধর্ম লাগে না। নীতি ও সৎ জীবনযাপন করতে ধর্ম লাগে না।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:২১