somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

সেদিনও বৃষ্টি ছিল

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃ আমার তোলা।

ওরা আসে। হ্যাঁ অবশ্যই আসে।
গভীর রাতে। তখন চারিদিক অন্ধকার। ঝিঁঝিঁ পোকা সমানে ক্লান্তিহীন ভাবে ডাকতেই থাকে। পাতায় পাতায় ঘষা লেগে মিহি একটা শব্দ হয়। বইতে থাকে শীতল বাতাস। তক্ষক বিশ্রী ভাবে ডেকে ওঠে। অলস প্যাঁচা একবার ডেকেই ঝিম ধরে বসে থাকে। বাদুড়েরা লিচু গাছে ঝুলে থাকে। কোনো ক্লান্তি নেই। তখন কোলা ব্যাঙ ডাকে। অনেক দূর থেকে সে শব্দ বাতাসে ভেসে এসে শরীরে কাঁপন ধরায়। শব্দ বড় রহস্যময়। শব্দ দিয়েই তো এই পৃথিবী সৃষ্টি। সৃষ্টি হয় ঈশ্বরের। ঈশ্বর আসলে সব কিছুতেই আছেন। সংগীতে আছেন। নৃত্যে আছেন। নীরবতায় আছেন। আকাশে আছেন। বাতাসে আছেন। জমিনে আছেন। মরু ভূমিতে আছেন। ঈশ্বর নানান ভঙ্গিমায় সবর্ত্র আছেন। অনুভব করতে চাইলে করা যায়। শাহেদের চিন্তা ভাবনায় বাঁধা পড়লো।

শাহেদ জামাল বাস থেকে নামলো।
বাসের চাকা পাংচার হয়েছে। সারাই করতে আধা ঘন্টা সময় তো লাগবেই। জায়গাটা বেশ। দূরে পাহাড় দেখা যাচ্ছে। হয়তো দূর নয় কাছেই। মেঘ উড়ে উড়ে যাচ্ছে। চারিদিক সবুজ। আশেপাশে কোনো বাড়িঘর নেই। সময় তখন বিকেল চারটা। দুপুরে খাওয়া হয়নি। শাহেদ একটা হোটেল খুজছে। কিছু দূর যেতেই একটা হোটেল চোখে পড়লো। দরিদ্র হোটেল। শাহেদ হাত ধুয়ে খেতে বসলো। বলল, যা আছে দাও। খুব ক্ষুধা পেয়েছে। গরম ধোয়া ভাত দেখে শাহেদ ভীষন অবাক হলো। বলল, বিকেল চারটায় গরম ভাত! ম্যানেজার বলল, আপনি আসবেন তাই। গরম ভাতের সাথে আছে পাহাড়ি মোরগ। খেতে বেশ। গরম ভাত দেখলেই শাহেদ জামালের তার মায়ের কথা মনে পড়ে। মা সব সময় গরম ভাত খেতে দিতেন।

শাহেদ দেখলো মেয়েটা চায়ের দোকানে বসে আছে।
শাহেদ এই মেয়েকে চিনে। মেয়েটার নাম অঞ্জনা। তাঁরা একই বাসের যাত্রী। অঞ্জনা শাহেদের পাশের সিটেই বসেছিলো। মেয়েটার চুল শাহেদকে যন্ত্রনা দিয়েছে। বারবার তার চোখে মুখে এসে লেগেছে। অবশ্য অঞ্জনা বারবার স্যরি বলেছে। শাহেদে জানে মেয়েটা তার বোনের বাসায় যাচ্ছে। মেয়েটা শাহেদকে হাত উঁচু করে ডাকলো। শাহেদ বলল, এখানে হোটেল আছে। আপনি খেয়ে নিতে পারেন। মেয়েটা বলল, আমি খেয়েছি। বাসা থেকেই খাবার নিয়ে এসেছি। অঞ্জনা বলল, যদি আপনার সমস্যা না হয়- আপনি আমাকে পৌঁছে দিবেন। কারন রাস্তায় দুবার চাকা পাংচার হয়েছে। অনেক দেরী হয়ে গেছে। আর একটু পর ঝুপ করে অন্ধকার নামবে। আমি অন্ধকার ভয় পাই। শাহেদ বলল, আমাকে ভয় লাগছে না? মানুষের চেয়ে ভয়ঙ্কর তো আর কিছু নেই।

বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সন্ধ্যা ঘনায়মান।
পাহাড় এলাকায় হুটহাট বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। আবার হুটহাট থেমে যায়। শাহেদ আর অঞ্জনা একটা বিশাল অশ্বথ গাছের নিচে এসে দাঁড়িয়েছে। কোনো লাভ হয়নি- অঞ্জনা অনেকখানি ভিজে গেছে। শাড়ি ভিজে লেপটে আছে। অঞ্জনা দেখতে বেশ সুন্দর। মেয়েটার সবই সুন্দর। চোখ, নাক, ঠোঁট, কোমর, কোমরের ভাঁজ। হাতের আঙ্গুল, চুল। হাঁটার ভঙ্গি। মেয়েটা নীলার থেকেও বেশি সুন্দর। ইশ্বর যদি বলে- শাহেদ তুমি কি ফুল চাও? না অঞ্জনা নামের এই মেয়েটাকে চাও? শাহেদ চোখ বন্ধ করে বিনা দ্বিধায় বলতো- আমি অঞ্জনাকে চাই। ফুলের চেয়েও কিছু কিছু মানুষ বেশি সুন্দর হয়। ঠিক এরকম একটা মেয়েকে দেখে সুন্দর বর্ননা দিতে পারতেন লেখকেরা। শাহেদ মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে! শাহেদের একটা অন্যায় ইচ্ছা করছিলো। অঞ্জনা বলল, এভাবে তাকিয়ে থেকে লাভ নাই।

অঞ্জনা হেসে বলল- হ্যাঁ এভাবে তাকিয়ে লাভ নাই।
আমার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। একমাস পর আমার বিয়ে। আমার হবু স্বামী বিশাল জাহাজ চালায়। জাহাজের নাম স্টিভ অস্টিন। সে এখন সেন্টোসা আইল্যান্ডে আছে। বিয়ের পর আমিও স্বামীর সাথে জাহাজে জাহাজে ঘুরে বেড়াবো। আমি একা বাসায় থাকতে পারবো না। হবু স্বামী রাজী হয়েছে। শাহেদ বলল, থামুন। এতসব কথা আমি শুনতে চাই না। অঞ্জনা বলল, বলা দরকার। নইলে আপনি আমার সাথে প্রেম করতে চাইবেন। আমি ভাই প্রেম ভালোবাসার মধ্যে নাই। শাহেদ হেসে ফেলল। অঞ্জনা বলল, কাঙালেরা শাকের ক্ষেত দেখলে ঝাঁপ তো দেবেই। শাহেদ বলল, আমি ঝাঁপ দিবো না। কারন, অনেক আগেই আমি নীলা নামের এক মেয়েকে ভালোবাসি। আমি তাকেই বিয়ে করবো। কাজেই আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। ঠিক তখন- ড্রাইভার হর্ন দিলো। চাকা ঠিক হয়ে গেছে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১:৩৯
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×