
আমাদের এলাকায় এক দূর্নীতিবাজ আছেন।
সে এক মন্ত্রীর মাধ্যমে সীমাহীন টাকা দূর্নীতি করেছে। সেই মন্ত্রী অবশ্য এখন নেই। সে এখন আমেরিকাতে আছেন। অনেক বয়স তার। যাইহোক, এই মন্ত্রীর কল্যানে পাঁচজন লোক কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। এই পাঁচজন দূর্নীতিবাজ থেকে তিনজন গ্রেফতার হয়েছে। একজন পতলতক এবং একজন হচ্ছেন আমাদের অঞ্চলের। তাকে গ্রেফতার কেন করা হচ্ছে না আমি জানি না। অনেকে বলেন, তাকে একবার গ্রেফতার করা হয়েছিলো- উনি নগদ দুই কোটি টাকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন। এবং একজনকে তিন কোটি টাকা দিয়েছেন। এখন তিনি বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মানুষজনকে ন্যায় নীতির কথা বলেন। কোটি কোটি টাকা খরচ করে উনি সরকারী দলের একটা পদ কিনেছেনে। যুবলীগের একটা পদ দুই কোটি টাকা!
উনি হঠাত করে এত টাকার মালিক কিভাবে হলেন এই প্রশ্ন তাকে কেউ করে না।
উনি গ্রামের অনেক দরিদ্র মানুষের জমি দখল করেছেন। শুধু দখল না সাদা কাগজে সিগনেচার নিয়ে রেখেছেন। আগামী নির্বাচনে তিনি এমপি নির্বাচন করবেন। এবং আমি নিশ্চিত উনি জয়ী হবেন। লোকটা বুদ্ধিমান। লোকটার সবচেয়ে ভালো অভ্যাস হলো- টাকা নিয়ে কৃপণতা করেন না। যেখানে দশ টাকা দিলে কাজ হয়, সেখানে উনি দুইশ' টাকা দিয়ে দেন। উনি নিজ গ্রামে স্কুল করেছেন, মাদ্রাসা করেছেন। এবং উনি প্রতি সপ্তাহে গ্রামে যান। মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোজ নেন তাঁরা কেমন আছেন। কেউ অসুস্থ হলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। উনি এখনও এমপি হন নাই। কিন্তু উনি গ্রামে গেলেই তার বাসায় সাত জন পুলিশ পাহারা দেয় সারারাত। গ্রামের দরিদ্র লোকেরা তার কাছে হাত পাতে। তিনি সকলে টাকা দেন।
বর্তমানে উনার টিভি চ্যানেল আছে।
দৈনিক পত্রিকা আছে। এছাড়া আছে ১৩ রকমের ব্যবসা। অথচ তার বাবা ছিলেন একজন কৃষক। অন্যের জমি চাষসবাস করতেন। সেই লোকের ছেলে আজ সীমাহীন টাকার মালিক। তিনি দুইবার ওমরা করেছেন। তিনবার হজ্ব করেছেন। এখন সব জায়গায় তার একটাই কথা- ''আমি আমার এলাকার মানুষের সেবা করতে চাই। আমৃত্যু আমি মানুষের সেবা করে যেতে চাই। আপনারা আমাকে আপনাদের সেবা করা আমাকে বঞ্চিত করবেন না''। আমার মাঝে মাঝে তাকে বলতে ইচ্ছা করে- যেহেতু আপনার শুধু মানুষের সেবা করার ইচ্ছা তাই আমার একটু সেবা করে দেন। আমার পা খুব চাবায় একটু টিপে দেন। মনে মনে বলি। সামনে গিয়ে বলার সাহস নেই। আল্লাহ্ বলেছেন, আমি মানুষকে বুঝেই সম্পদ দান করি। যে যতটুকু প্রাপ্য ও ধারন করতে পারবে- তাকে আমি ততটুকু দেই।
এরকম দুর্নীতিবাজ প্রতিটা অঞ্চলে আছে।
সরকার এদের চিনে, জানে। কিন্তু এদের গ্রেফতার করবে না। এইসব দূর্নীতিবাজ টকশো'তে অংশ নেয়। অনেক ন্যায় নীতির কথা বলে। দেশ প্রেমের কথা বলে। মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে। ধর্মের কথা বলে। সরকারের গুণগান করে। সাংবাদিকেরা তাদের কাছে গিয়ে হাত কচলায়। উনি সাংবাদিকদের বলে দিয়েছেন, কষ্ট করে তোমাদের আসার দরকার নেই। সাংবাদিকদের জন্য নিয়মিত বিকাশে টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দুদকের কর্মকর্তাদের বাসায়ও এটা-সেটা পাঠাতে হয়। তিনি এতটাই দয়ালু অনেককে তিনি সিঙ্গাপুরের প্লেনের টিকিট দেন যাওয়া আসার। বহু পাতিনেতা তার কাছে এসে হাত চুলকায়। তিনি কাউকে নিরাশ করেন না। তাঁরা সবচেয়ে বড় গুণ তিনি সবাইকে খুশি করতে জানেন। অনেকের টাকা আছে কিন্তু খরচ করতে জানেন না।
আজকাল উনি টাকা দিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হচ্ছেন।
হুজুরেরা না চাইলেও তিনি মাদ্রাসার জন্য টাকা দিচ্ছেন। এতিমখানায় টাকা দিচ্ছেন। গ্রামের গন্য মান্য ব্যাক্তিদের নিজ বাসায় ডেকে এনে খাওয়াচ্ছেন। গ্রামের অনেক বেকার ছেলেকে জোর করে ধরে এনে তার অফিসে চাকরি দিয়েছেন। গ্রামে যারা তাকে মানে না। সম্মান করে না। তাদের তিনি কঠিন করে টাইট দিয়েছেন। প্রত্যেকের নামে মামলা দিয়ে দিয়েছেন বেনামে। যারা তার কাছে এসে পা ধরে মাফ চেয়েছে, তাদের তিনি ক্ষমা করে দিয়েছেন। যারা ক্ষমা চায়নি, তাদের কোটকাচারি করতে করতে তাদের জীবন শেষ। এই লোক আগামীতে দেশের এমপি হবেন। তারপর মন্ত্রী হবেন। কেউ তাকে ঠেকাতে পারবে না। নো নেভার। ভালো লোক মন্ত্রী এমপি হতে পারে না। আমি গ্রামে গিয়ে দেখেছি- আমাদের পুরো গ্রাম তার পোস্টার আর ব্যানার দিয়ে ভরা।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুন, ২০২৩ রাত ১২:৪৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




