somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আজ আমাদের বিবাহ বার্ষিকী

২২ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমি কোনো বিশেষ দিন-তারিখ মনে রাখতে পারি না।
বিয়ের তারিখ, জন্ম তারিখ এমনকি মৃত্যু তারিখও আমার মনে থাকে না। সুরভির আবার এইসব দিন তারিখ সব মনে থাকে। সেই দিনকার সমস্ত ঘটনা সুরভি সব বলে দিতে পারে। আজ যে আমাদের বিবাহ বার্ষিকী আমার একদম মনে ছিলো না। আজ রাতে বাসায় ফিরতে দেরী হয়ে গেছে। এক কাজে উত্তরা গিয়েছিলাম। সেখানে একটা মিষ্টির দোকান দেখলাম। কি মনে করে সব রকমের একটা করে মিষ্টি কিনে নিলাম। ছোট কন্যা ফারাজা মিষ্টি খেতে পছন্দ করে। যদিও আজ মিষ্টি কেনার কথা ছিলো না। ফারাজার জন্য আপেল কেনার কথা ছিলো। কন্যা আপেল খুব পছন্দ করে।

বিজয় স্মরনীর সিগনালে গাড়ি থামলো।
এক অল্প বয়সী মেয়ে খুব অনুনয় বিনয় করে বলল- স্যার ফুল নেন। টকটকে লাল গোলাপ। মেয়েটার কাছ থেকে কি মনে করে, ফুল কিনে নিলাম। সাধারণত আমি ফুল কিনি না। যাইহোক, বাসায় মিষ্টি ও ফুল নিয়ে ফিরলাম। সুরভি খুব খুশী। বলল, আমি জানতাম তোমার মনে আছে। কেন শুধু শুধু বলো তোমার কোনো বিশেষ দিন তারিখ মনে থাকে না! আমি মুখটা হাসি হাসি করে সুরভির দিকে তাকালাম। আর মনে করতে চেষ্টা করলাম আজ কয় তারিখ। আজ কি কোনো বিশেষ দিন? হুট করে মনে পড়লো আজ ২২ নভেম্বর। আজ আমাদের বিবাহ বার্ষিকী। মিষ্টি ও ফুল কিনে বড় বাঁচা বেঁচে গেছি!

ভাগ্যক্রমে আজ বেঁচে গেলাম।
আমি সব সময় এইভাবে বেঁচে যাই। কন্যা মিষ্টি খাওয়ায় ব্যস্ত। সুরভি ফুল হাতে নিয়ে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে। অদ্ভুত ব্যাপার হলো- আজ আমার একটা শাড়ি কিনতে ইচ্ছে করছিলো সুরভির জন্য। হয়তো আমার অবচেতন মন আমাকে তাড়া দিচ্ছিলো। যাইহোক, এই মাত্র রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ করলাম। খেতে বসে দেখি আজ সুরভি অনেক কিছু রান্না করেছে। একদম বিয়ে বাড়ির খাবার। ফারাজা এখনও ঘুমায়নি। সুরভি তার বোনের সাথে মোবাইলে কথা বলছে। এই ফাঁকে আমি লিখতে বসেছি। ইদানিং ফারাজা রাত তিনটার আগে ঘুমায় না। আমি কন্যাকে গল্প বলতে বলতে- ঘুমিয়ে যাই, সুরভি ঘুমিয়ে যায় কিন্তু কন্যা জেগে থাকে। আমি সকাল আট টায় ঘুম থেকে উঠি। ফারাজা ঘুম থেকে উঠে সকাল ১১ টায়। আজ একটা শাড়ি কেনা খুব দরকার ছিলো।

দশ বছর হয়ে গেলো বিয়ে করেছি।
আমরা বেশ ভালো আছি। আনন্দ নিয়ে আছি। আমরা ঝগড়া করি না। দুজন দুজকে বুঝি। বিয়ের দিনের কথা মনে পড়ছে। সুরভি আমার কথা তার বাবাকে জানালো। সুরভির বাবা বলল, ছেলে পত্রিকা অফিসে কাজ করে। দরকার নেই এই ছেলেকে বিয়ে করার। সুরভি আমাকে বলল, আমাকে ভুলে যাও। আমার ভীষন মন খারাপ। একদিন আব্বা বলল, কিরে মন খারাপ ক্যান? সুরভির বাবার কথা বললাম। আব্বা বলল, এটা কোনো ব্যাপার না। আমি সুরভির বাবার সাথে কথা বলব। আব্বা কথা বলল। সব ঠিকঠাক হয়ে গেলো। সুরভির বাবা আমার আব্বাকে বলল, আপনাকে দেখেছি, আপনার সাথে কথা বলেছি। ব্যস যথেষ্ঠ। সব ঠিকঠাক হয়ে গেলো। কিন্তু আমার সুপারম্যান বাবা করোনায় মারা গেলো।

আব্বা ধুমধাম করে বিয়ের আয়োজন করে ফেলল।
বিয়ে হয়ে গেলো। দেখতে দেখতে দশটা বছর পার করে ফেললাম! কত দ্রুত সময় চলে যায়! আমি কোনো দিনই সুরভির উপর স্বামীগিরি ফলাই নাই। ধর্মীয় বিধি নিষেধ আরোপ করি নাই। জোর করে বোরকা পরাই নাই। সুরভি যখন তার বাবার বাড়ি যায়, আমি নিজে গিয়ে তাকে দিয়ে আসি। আমরা দুজন শুধু স্বামী স্ত্রী নই। আমরা দুজন দুজনের বিশ্বস্ত বন্ধু। আমাদের সম্পর্কের মধ্যে কোনো জটিলতা নেই। স্বচ্ছ পবিত্র সম্পর্ক আমাদের। আমাদের সংসারটা সুরভি নিজের হাতে সাজিয়েছে। কি রান্না হবে, জানালার পর্দা কেমন হবে, বিছানার চাঁদর অথবা ব্যলকনিতে কত পাওয়ারের লাইট লাগবে সব সুরভির ডিপার্টমেন্ট। আমরা ভালো আছি।

সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১:৪০
২২টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

পঁচে যাওয়া বাংলাদেশ আর্মি

লিখেছেন রিয়াজ হান্নান, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:২৫


একটা দেশের আর্মিদের বলা হয় দেশ রক্ষা কবজ,গোটা দেশের অব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে বহিরাগত দুশমনদের আতংকের নাম। ছোটবেলা থেকে এই ধারণা নিয়ে কয়েকটা জেনারেশন বড় হয়ে উঠলেও সেই জেনারেশনের কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×