somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

শহর জীবন, গ্রামীন জীবন

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পুরো দেশের দুষ্ট লোকজন ঢাকা শহরে এসে উপস্থিত হয়।
তাই শহর গুলোর গজব অবস্থা। শহরে আপনি গাছপালা পাবেন না। মাটির রাস্তা পাবেন না। নির্মল বাতাস পাবেন না। খেলার মাঠ পাবেন না। সাতার কাটার জন্য পুকুর পাবেন না। ধানক্ষেত পাবেন না। রাখাল পাবেন না। কৃষক পাবেন না। খালবিল পাবেন না। দেশি মাছ পাবেন না। দেশী মূরগীর ডিম পাবেন না। বিশুদ্ধ বাতাস, বিশুদ্ধ খাবার গ্রামে আছে। গ্রামে আছে গ্রামীণ জীবনের সহজ সরল গল্পের গুলো। আর শহরে আছে শুধু যান্ত্রিকতা। আমার তো এই শহরে দম বন্ধ হয়ে আসে। শহরের মসজিদ গুলো ঝাকঝমক। গ্রামের মসজিদ গুলোতে দারিদ্রতার ছাপ স্পষ্ট।

গ্রাম মানেই আনন্দ। গ্রামের মানুষ এখনো অনেক সহজ সরল।
এমপি এবং চেয়ারম্যানরা গ্রামের পরিবেশ নষ্ট করেছে মিটিং মিছিল করে। এছাড়া হুজুরেরা ওয়াজ মাহফিল করে গ্রামের পরিবেশ নষ্ট করেছে। এখন গ্রামে সবার হাতে স্মার্ট ফোন। ওয়াইফাই। ইন্টারনেটে অবাধ রঙিন দুনিয়া। কেউ সঠিক কাজে ইন্টারনেট ব্যবহার করে নিজেকে উন্নত করছে। কেউ কেউ নিজের সুন্দর সময় অপচয় করছে। গ্রামের সমস্যা হলো প্রচুর হাসপাতাল আর ক্লিনিক নেই। ফার্মেসী নেই। সুপার শপ নেই। বড় বড় শপিং মল নেই। অসুস্থ রোগীদের ভ্যান গাড়িতে করে গঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের অনেক কষ্ট। আসলে গ্রামে কিছু সুবিধা আছে। কিছু সমস্যাও আছে। ঠিক কিছু সুবিধাও আছে শহর ও গ্রামে।

যদিও গ্রাম আর গ্রাম নেই। মাটির রাস্তা নেই।
খালবিল নেই, হাওর বাওর নেই। মাইলের পর মাইল ধানক্ষেত নেই। প্রচুর গাছপালা নেই। হাট বসে না। নৌকা বাইচ হয় না। স্কুলের ছেলেরা বিকেলে ফুটবল খেলে না। মা খালারা উঠানে বসে একে অন্যের উকুন বাছে না। চাল গুড়ো করার জন্য ঢেকি নেই। গ্রাম এখন হয়ে গেছে শহরের মতোন। মাটির চুলায় কেউ রান্না করে না। সকলে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করে। এখন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল হয়েছে, বিউটি পার্লার হয়েছে, কমিউনিটি সেন্টার হয়েছে, ফাস্ট ফুডের দোকান হয়েছে। শহরে যান্ত্রিকতার ছোয়া গ্রামে এসে পড়েছে। গ্রামে শান্তি নেই। শহরে শান্তি নেই। শান্তি নেই মানুষের মনে। বাংলাদেশের কোনো মানুষই আসলে ভালো নেই। অথচ সরকার বলছে দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে। যদি উন্নত দেশে যাওয়ার সহজ সুযোগ থাকতো তাহলে এই পোড়া দেশে কেউ থাকতো না। কেউ না। শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশে একা বাস করতেন।

গ্রামের পলিট্রিক্স ভীষণ নোংরা।
ক্ষমতাবানরা অসহায় ও দরিদ্রদের উপর অনেক অন্যায় অত্যাচার করে। গ্রামে নদীর পাড়ে চ্যাংড়া পোলাপান মদ, গাঞ্জা খায়। গার্লস স্কুলের সামনে দাড়িয়ে বখাটেগিরি করে। আর বদ লোকেরা পুকুরে বিষ ঢেলে মাছ মেরে ফেলে, ফসল নষ্ট করে দেয়, ফসলি জমিতে গবাদি পশু ছেড়ে দেয়। অর্থাৎ দুষ্ট লোক সব জায়গায় আছে। ঢাকাতে আছে, গ্রামে আছে। নবীজির দেশ মক্কা মদীনায়ও আছে। তবে আশার কথা হচ্ছে শহর এবং গ্রামের সব মানুষ গুলোই খারাপ না। অল্প কিছু ভালো মানুষ এখনও আছে। ভালো করে তাকিয়ে দেখুন। দেখতে পাবেন। আমার বাড়ি বিক্রমপুর। মুন্সিগঞ্জ। পদ্মা নদীর কাছে আমার গ্রাম। আমাদের গ্রামে দুষ্ট লোকের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এজন্য গ্রামে কম যাই।

আমি একটা গ্রাম চিনি। সহজ সরল সুন্দর গ্রাম।
শহরে থাকতে থাকতে আমি যখন বিরক্তি হয়ে যাই। তখন আমি সেই গ্রামে যাই। গ্রামের নাম রসুলপুর। রসুলপুরের পাশেই ওয়াবদা নদী। নদীর পাশে সুন্দরবন। এই গ্রাম, একদম খাটি গ্রাম। মাটির রাস্তা। অজস্র গাছপালা। খাল-বিল আছে। নদীর টাটকা মাছ বারো মাস পাওয়া যায়। প্রাইমারি স্কুল আছে। কলেজ আছে একটা কিন্তু অনেক দূরে। সমস্যা হলো এই গ্রামে মিষ্টি পানির অভাব। এবং খুব ঝড় বৃষ্টি হয়। অবশ্য সরকার সাইক্লোন বিল্ডিং করে দিয়েছে। গ্রামের মানুষ গুলো মোবাইল চার্জ করতে বাজারে আসে। একটা মোবাইল চার্জ করতে দশ টাকা করে নেওয়া হয়। একটা মাত্র ফার্মেসী আছে। ফার্মেসীতে একজন পল্লী ডাক্তার বসেন। তার নাম ডাক্তার শাহজাহান তালুকদার। তার সাথে আমার বেশ ভালো খাতির। শাহজাহান তালুকদারের একটা ফনিক্স সাইকেল আছে।

এই গ্রামের প্রতিটা মানুষ আমায় চিনে।
তারা টাকা পয়সায় দরিদ্র। কিন্তু তাদের মন বিশাল। আমি ডাক্তার তালুকদারের ফার্মেসীর বারান্দায় বসে থাকি। বাসী পত্রিকা পড়ি। গ্রামের লোকজন সারাদিন জমিতে কাজ করে সন্ধ্যায় আসে। আমি তাদের দেশ বিদেশের খবর জানাই। বিজ্ঞানের অগ্রগতির কথা জানাই। টেকনোলজি সম্পর্কে জেনে গ্রামের সহজ সরল মানুষ গুলো ভীষণ অবাক হয়। ছোট বাচ্চারা আসে তাদের ম্যাজিক দেখাই। বাচ্চারা ভীষণ অবাক হয়! খুশিতে হাত তালি দেয়। আমি তাদের বিস্কুট খেতে দেই। বড়দের চা খাওয়াই। মাঝে মাঝে নৌকায় করে সুন্দরবনের কাছে যাই। মিথ্যা বলব না বাঘ কখনও দেখিনি। তবেই প্রচুর পাখি ও হরিণ দেখেছি। আমি সুন্দরবন থেকে মধু আনি।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১:২৪
১৫টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যা হচ্ছে বা হলো তা কি উপকারে লাগলো?

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:২৮

৫ হাজার মৃত্যু গুজব ছড়াচ্ছে কারা?

মানুষ মারা গিয়েছে বলা ভুল হবে হত্যা করা হয়েছে। করলো কারা? দেশে এখন দুই পক্ষ! একে অপর কে দোষ দিচ্ছে! কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×