
আমি যে এলাকায় বাজার করি-
সেই বাজার ভেঙ্গে দিয়েছে সিটি করপোরেশন। ছোটবেলা থেকেই আমি এই বাজারে নিয়মিত বাজার করি। কমপক্ষে এই বাজারের বয়স ৫০ বছর। বাজারের সমস্ত বিক্রেতারা আমাকে চিনে, আমিও তাদের চিনি। দীর্ঘদিন ধরে আমি এই বাজারেই বাজার করি। বিশাল বাজার। এক বাজারেই সব পাওয়া যায়। মাছের বাজার আছে, মূরগীর বাজার আছে, কামার, কুমার, তাতী। এক বাজারেই সব পাওয়া যেতো। অসংখ্য দোকান। অন্যান্য বাজার থেকেই এই বাজারে জিনিসপত্রের দাম কিছুটা কম। আমি ছোটবেলা থেকেই এই বাজারে বাজার করি। বাজার করতে আমার ভালো লাগে। বহু পুরাতন বাজারটা ভেঙ্গে দিয়েছে। অসংখ্য ব্যবসায়ী একদিনের মধ্যে বেকার হয়ে গেলো। এত এত দোকানদার এখন কোথায় যাবে?
বাজার ভাঙ্গার কাহিনী হচ্ছে-
সিটি করপোরেশন বলছে বাজারের জায়গাটা তাদের, এদিকে রেলওয়ে বলছে জায়গাটা তাদের। দুইপক্ষ কোর্টে গেলো। মামলা চললো দীর্ঘদিন। গত তিন মাস ধরেই শুনছি বাজার ভেঙ্গে দিবে। ভেঙ্গে দিবে। সেদিন বাজারে গিয়ে দেখি বাজার ভেঙ্গে দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা তাদের মালসামান সরাতে সময় পর্যন্ত পায়নি। সিটি কর্পোরেশন পুরো বাজার ভেঙ্গে ফেলল। এখন এখানে বিশাল এক বিল্ডিং হবে। বিল্ডিং এ বাজারের পুরাতন দোকানদারদের কিছু দোকান দেওয়া হবে। আর বিল্ডিং এর কাজ শেষ হতে ২/৩ বছর লাগবে। ব্যবসায়ীদের মন খারাপ। কেউ কেউ রেলওয়ের কলোনীর চিপায় চাপায় অস্থায়ী হবে দোকান খুলেছে। আমাকে দেখেই তারা ডাকলো। তাদের মন ভীষন খারাপ। এখন বাজার করতে আমাকে দূরে যেতে হবে।
আমার পায়ে ব্যথা। টানা তিন দিন ধরে ব্যথা।
হাটলেই ব্যথা করে। শুয়ে বা বসে থাকলে ব্যাথা করে না। কেন ব্যথা করছে সেই কারনটা খুজে পাচ্ছি না। যদি সিড়ি থেকে পা পিছলে পড়ে যেতাম, তাহলে একটা কথা ছিলো। তিন দিন ধরে খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটছি। এখনও ডাক্তারের কাছে যাইনি। একটু সমস্যা হলেই ডাক্তারের কাছে দৌড়ে যাবো আমি এমন মানুষ না। গত দশ বছর ডাক্তারের কাছে যাইনি। যাইহোক, সেদিন ইনকাম টেক্স অফিসে গিয়েছি। ৩১ তারিখ কাগজ জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিলো। সেদিন আমার হাটাহাটিটা অনেক বেশি হয়ে গিয়েছিলো। রাস্তায় জ্যাম থাকার কারনে গন্তব্যে হেঁটে হেঁটে গিয়েছি। আর জুতটা টাইট ছিলো। এরপর থেকেই পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা। ছোট ভাইয়ের বন্ধু আছে, ডাক্তার। সে আবার আমার মহা ভক্ত। আগামীকাল তার চেম্বারে যাবো।
আজ শুক্রবার। দুপুরে তেহারি খেলাম।
এই তেহারি আমাদের বাসায় রান্না হয় নাই। ঘটনা হলো- আমাদের এলাকায় একলোক বাড়ি করছে। সাত তলা বাড়ি হবে। বাড়িতে লিফট থাকবে। সেই লোক তার বাড়ির ছাদ ঢালাই দিয়েছে। এই উপলক্ষ্যে তেহারী রান্না করেছে তিন ডেগ। আমাদের বাসায় বড় দুই বোল পাঠিয়েছে। রান্না ভালো হয়েছে। একদম আসল স্বাদ। মাংসের পরিমান ভালো ছিলো। দুপুরে প্রচুর তেহারি খেলাম। এই লোকের ঢাকায় আরো তিনটা সাত তলা বাড়ি আছে। একসময় এই লোক সৌদিতে আতর, তজবি আর জায়নামাজ বিক্রি করতো হাজীদের কাছে। সুরভি বাসায় নেই। সে তার বাবার বাড়ি গেছে। এক সপ্তাহ সেখানে থাকবে। ফারাজা ফোন দিয়ে বলছে, বাবা আসো। আমরা রিকশায় করে ঘুরবো। কন্যা গাড়ির চেয়ে রিকশা বেশি পছন্দ করে।
এবছর আমি বইমেলাতে যাবো না।
বানিজ্য মেলাতেও আমি যাই নাই। লোকজন পাগলের মতো তিন শ' ফিট যাচ্ছে। ছবি তুলছে, টিকটক করছে। বিকেলের দিক থেকেই ভিড় হতে শুরু করে। আমি বুঝি না সরকার নতুন রাস্তা করেছে, সেখানে গিয়ে কেন ছবি তুলতে হবে, টিকটক ভিডিও করতে হবে? টিকটক মানুষকে কুলাঙ্গার বানিয়ে দিচ্ছে। কতিপয় টিকটকারদের আমার জুতা দিয়ে মারতে ইচ্ছা করে। মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব, সেই মানুষ কেন এতটা নিলর্জ হবে। বর্তমান প্রজন্ম নিয়ে আমি হতাশ। এরা জাতিকে কিছু দিতে পারবে না। মেট্রোরেল, টার্নেল, সেতু, রাস্তাঘাট সব বিদেশীরা এসে করে দিয়ে যাচ্ছে। দেশের লোকজন কোরআন হাদীস নিয়ে ব্যস্ত। কোরআন হাদীস দিয়ে তারা দেশ ও দশের উপকার করতে পারছে না।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


