somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

বিক্রমপুর এলাকার কাঠের বাড়িঘর

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমার বাড়ি মুন্সিগঞ্জ। শ্রীনগর।
যদিও আমি বলি- বিক্রমপুর। সত্য কথা বলতে পুরো মুন্সিগঞ্জ এলাকায় এখন আগের মতো শত শত কাঠের বাড়িঘর নেই। বেশির ভাগ বাড়ি এখন পাকা দালান। কেউ কেউ তো বিশাল রাজকীয় বাড়ি করেছেন, একদম গুলশান ধানমন্ডি এলাকার আধুনিক বাড়ি গুলোর মতোণ। একসময় আমাদের বাড়িটা কাঠের ছিলো। দোতলা বাড়ি। কাঠের সিড়ি ছিলো। সেই সিড়ি দিয়ে দোতলায় উঠতাম। দোতলায় একটা কেবিন ছিলো। আমি গ্রামে গেলে সে কেবিনে থাকতাম। ছোট একটা কেবিন। ছোট একটা জানলা। আমরা ঢাকা থাকতাম। দাদা দাদী আর দুই চাচা এক ফুপু গ্রামে থাকতেন। আব্বার সাথে আমি প্রায়ই গ্রামে যেতাম। বিশাল এক পুকুর ছিলো আমাদের। এখন একান্নবর্তী পরবার গুলো ভাগ হতে- হতে বড় বড় বাড়ি গুলো কয়েক টুকরো হয়ে গেছে। এক বাড়ির ভিতর দিয়ে আরেক বাড় যেতে হয়।

এখন ঢাকা থেকে আমাদের গ্রামে যেতে সময় লাগে ৭৫ মিনিট।
কিন্তু একসময় গ্রামে যেতে সময় লাগতো ৭/৮ ঘন্টা। ইঞ্জিনওলা নৌকায় বসে থাকতে হতো টানা ৩/৪ ঘন্টা। ভট ভট শব্দ আর রোদে খুব কষ্ট হতো। প্যাক কাঁদা মাড়াতে হতো। যাইহোক, এখন আমাদের গ্রামের বাড়িটা আগের সেই কাঠের দোতলা বাড়ি নেই। এখন পাকা করা হয়েছে। রান্না হয় গ্যাসের চুলায়। একসময় পুরো মুন্সিগঞ্জ এলাকায় ছিলো- কাঠের দোচালা, চৌচালা ঘরবাড়ি। বিক্রমপুর এলাকায় কাঠের বাড়ির সংখ্যা এখন খুবই কম। তবে সিরাজদিখান এলাকায় গেলে অনেক কাঠের বাড়ি দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু বেশির ভাগই পাকা বাড়ি। গ্রাম আর গ্রাম নেই। শহর হয়ে গেছে। বিউটি পার্লার আছে, কমিউনিটি সেন্টার আছে, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল আছে, ফাস্ট ফুডের দোকান আছে। গ্রামে গেলে গ্রামের আমেজ পাওয়া যায় না। যাইহোক, শুনেছি জাপানে অনেক কাঠের বাড়ি আছে। এর কারণ সম্ভবত ভূমিকম্প। মুন্সিগঞ্জে টিন ও কাঠের বাড়ির কারণ হচ্ছে- পদ্মানদী।

কাঠের বাড়ি মানুষ তৈরি করতো কারণ- পদ্মানদী।
সর্বনাশা পদ্মানদী সব দখল করে নিতো। পাড় ভাঙতে ভাঙতে পুরো গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে যেতো। এজন্য কাঠের বাড়ি তৈরি করে লোকজন থাকতো। নদী ভাঙতে শুরু করলে বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া যেতো সহজেই। এখনও সপ্তাহে একদিন রেডিমেট কাঠের বাড়ি বিক্রির হাঁট বসে। এসব কাঠের বাড়ির দাম- দেড় লাখ টাকা থেকে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। এসব বাড়ি বানাতে সাধারণত লোহা কাঠ ব্যবহার করা হয়। লোহা কাঠ একসময় মিয়ানমার থেকে আসতো। শুনেছি, এখন আসে নাইজেরিয়া থেকে। বাংলাদেশে চট্রগ্রাম থেকে যে পরিমাণ লোহা কাঠা সে, সেটা চাহিদার চেয়ে অনেক কম। টিন ও কাঠ দিয়ে বাড়ি বানানোর কারিগর গুলো অত্যন্ত দক্ষ। এখন আমি গ্রামে গিয়ে আনন্দ পাই না। মাটির রাস্তা কম। গাছপালা কম। সবার হাতে স্মাট ফোন। বেশির ভাগ লোক বাইক চালিয়ে বাজারে যায়।

কাঠের বাড়ি গুলোর বৈশিষ্ট্য হলো- জানালা, দরজা, দেয়াল কাঠামো, মেঝে কিংবা ছাদ- ঘরের প্রত্যেকটি অংশ আসবাবপত্রের মতো আলাদা আলাদা খুলে দেশের যেকোনো প্রান্তে বহন করে নেওয়া যায় খুব সহজে। ৮৫ সালের পর থেকে পুরো বিক্রমপুর এলাকায়- রেডিমেট কাঠের বাড়ির চাহিদা কমতে থাকে। লোকজন আধুনিক পাকা বাড়ি করতে শুরু করে। তবে টিন ও কাঠ দিয়ে বানানো বাড়ি গুলো দেখতে অনেক সুন্দর। অনেক মজবুত। যাইহোক, এখন সরকারের উচিৎ পদ্মানদীর দিকে নজর দেওয়া। নদী যেন আর কারো বাড়িঘর নিয়ে না যেতে পারে। প্রতি বছর অসংখ্য গ্রাম তলিয়ে যায়। যথাসময়ে ব্যবস্থা নিলে- নদী ভাঙন রোধ করা সম্ভব। নদী আমাদের শত্রু নয়। নদী আমাদের সম্পদ। কিন্তু অযোগ্য অদক্ষ মন্ত্রী এমপিদের কারনে সাধারন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নদী ভাঙন এর কারনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ গুলো অসহায় জীবনযাপন করে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:২৪
১২টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণপরিষদের সাথে বিএনপির সখ্যতার কারণ কি ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭


বিএনপির নেতাদের সাথে গণপরিষদের নেতাদের ঘন ঘন সাক্ষাতের বিষয়টি মিডিয়াতে প্রচারিত হচ্ছে।বিষয়টি প্রথম আলোচনায় আসে যখন বিএনপি হাই কমান্ড থেকে পটুয়াখালী -৩(দশমিনা-গলাচিপা) আসনের নেতাকর্মীদের কাছে চিঠি দেয়া হয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কি অন্ধকার?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫২



সুকান্তর একটা কবিতা আছে, দুর্মর।
"সাবাস, বাংলাদেশ, এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়:, জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়।" মানুষের ভবিষ্যৎ বলা সহজ কিন্তু একটি দেশের ভবিষ্যৎ কি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০


২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২১

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

ট্রাম্প হচ্ছে একজন আপাদমস্তক বিজনেসম্যান। কমলা হ্যা্রিস যেহেতু ইন্ডিয়ান বংশোদ্ভূত তাই ইন্ডিয়ান ভোটার টানার জন্য সে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে টেনে জাস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসকন

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৭


INTERNATIONAL SOCIETY FOR KRISHNA CONSCIOUSNESS যার সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ISKCON এর বাংলা অর্থ হল আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ। যে সংঘের ঘোষিত উদ্দেশ্য হল মানুষকে কৃষ্ণভাবনাময় করে তোলার মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রকৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×