
একদিন রাতে জিবরাইল (আ) এসে, আমাদের নবীজিকে বললেন-
আপনাকে আজ আসমানে নিয়ে যাবো। তাড়াতাড়ি অজু করে নিন। নবীজি যখন আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলেন, তখন নবীজি আসমানে জিকির করতে শুনেছেন। অসংখ্য জ্বীনরা জিকির করছে। জ্বীনদের জিকির শুনে নবীজি মুগ্ধ হলেন। আমরা জানি, আল্লাহপাক জ্বীন এবং ইনসান তৈরি করেছেন। জ্বীন বিশ্বাস করতে হবেই। নইলে আপনার নাম মুসলমান থেকে কাটা যাবে। জ্বীনদের খালি চোখে দেখা যায় না। অণুবীক্ষণযন্ত্র দিয়েও দেখা যাবে না। যে জিনিস নাই, সেটা দেখা যাবে কি করে! যাইহোক, মানুষের মতো জ্বীনদেরও একটা জাত আছে, জাতি আছে। আমি জ্বীনদের গুনগান করতে লিখতে বসি নাই। আসল কথায় আসি- আমার বাসায় গত কয়েকদিন ধরে একটা জ্বীন আসে। সে নানান রুপ ধরে আসে। জ্বীনরা অনেক রকম রুপ ধারণ করতে পারে। কুকুর বিড়ালের রুপও ধারণ করতে পারে।
অনেক বছর আগে রানা প্লাজা নামে এক বিল্ডিং ভেঙে পড়ে।
বিল্ডিং এর ভিতরে অসংখ্য মেয়েরা কাজ করছিল। চাপা পড়ে অসংখ্য মানুষ মারা যায়। জ্বীন তখন এদের সাহায্য করতে আসেনি। কিছুদিন আগে বিমান দূর্ঘটনায় স্কুলের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের করুন মৃত্যু হয়, জ্বীনরা সাহায্য করতে আসেনি। পদ্মাসেতু তৈরির সময় জ্বীনরা সাহায্য করতে আসেনি। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন রেকর্ড আছে, জ্বীন মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করেছে? অথচ আল্লাহ জ্বীন জাতি তৈরি করেছেন। জ্বীন জাতি কেন মানুষের কল্যাণে আসবে না? অথচ আল্লাহ বলে দিয়েছেন, কেয়ামতের পর হাশরের ময়দানে মানুষের সাথে সাথে জ্বীনদেরও বিচার হইবে। যাইহোক, আমাদের বাসার যে জ্বীনটা এসেছে তার গল্প করি। আমাদের বাসার জ্বীনটা অনেক রকম রুপ ধারণ করতে পারে! সুন্দরী রমনী, ভিক্ষুক, কুকুর এবং বিড়াল। জ্বীনদের ক্ষুধা পেলে বিড়াল রুপ ধরে রান্না ঘরে গিয়ে খায়।
আমি গত একমাস ধরে আমাদের বাসায় অন্য রকম কিছু একটা অনুভব করছি।
সেদিন রাত একটা বাজে। সুরভি এবং ফারাজা গভীর ঘুমে। আমিও ঘুমিয়ে ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেছে। আর ঘুম আসছে না। সিগারেট খাওয়ার জন্য ছাদে গেলাম। আমি ছয় তলায় থাকি। কাজেই ছাদে যাওয়ার জন্য আমাকে কষ্ট করতে হয় না। ছাদের দরজা খোলার আগেই আমি নুপূরের আওয়াজ পেলাম। যেন কেউ পায়ে নূপুর পড়ে নাচছে। এত রাতে ছাদে নূপুর পড়ে কে নাচছে! আমি ভীতু মানুষ নই। ছাদের দরজা খুললাম। ছাদ পুরোপুরি অন্ধকার নয়। আশেপাশের বাড়িঘর থেকে কিছু আলো এসেছে। সেই আলোতে দেখলাম, একটা মেয়ে নাচছে। এটা কোনো পরী নয়, এটা জ্বীন। আমি ভেবে পেলাম না, জ্বীন এত রাতে আমাদের ছাদে এসে নাচবে কেন? এর সমস্যা কি? নাচানাচি না করে ঘরের কাজ করলেও তো উপকার হয়। থালাবাটি ধুয়ে দিক, কাপড় ধুয়ে দিক। বুয়া আসে না চারদিন ধরে। আচ্ছা জ্বীনরা দেশ বা সমাজের কোনো কাজে লাগে?
আমি একটা জ্বীনকে লাথথি দিয়েছি।
এতে নিশ্চয়ই আমার গুনাহ হইবে। আমাদের বাসায় কোনো বিড়াল নেই। কিন্তু মাঝে মাঝে আমি একটা বিড়াল দেখি। সাদা একটা বিড়াল। এই বিড়ালটা আসলে একটা জ্বীন। এই জ্বীন বিড়াল কোথা থেকে আসে আমি জানি না। দিনের বেলা একে দেখা যায় না। শুধু রাতের বেলা আসে। বাড়ির কেউ এই বিড়ালটাকে দেখেনি। এটা শুধু আমার চোখেই পড়ে। বাসার সবাইকে জিজ্ঞেস করেছি, বিড়ালটির কথা। তারা কেউ বিড়াল দেখেনি। এই জ্বীন বিড়ালকে শুধু আমি দেখি। সেদিন বৃষ্টি হচ্ছিল। রাত তখন সাড়ে বারোটা। আমি সিড়িতে বসে সিগারেট খাচ্ছিলাম। তখন জ্বীন বিড়ালটাকে দেখি। বিড়ালটা লুকিয়ে লুকিয়ে আমাকে দেখছে। আমি বললাম, এই তুই আমাদের বাড়িতে কি করিস? জ্বীনকে তুই করে বলছি, আল্লাহপাক গুনাহ দিবেন কিনা জানি না। জ্বীন বিড়ালটা সিড়ি দিয়ে নিচে নামতে চেয়েছিল। আমি সিড়িতে বসা। আমার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়, আমি জ্বীন বিড়ালকে একটা লাথথি দেই। লাথথি খেয়ে বিড়ালটি মিউ মিউ করে। হয়তো জ্বীন বিড়ালটা আমাকে শালার পো বলে গালি দিলো।
ভেঙে যাওয়া কূলা ছাই ফেলতেও কাজে লাগে।
জ্বীন কি কাজে লাগে? জ্বীন শুধু মানুষের ক্ষতি করে, অকল্যাণ করে। জ্বীন সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে ছোট ছোট বাচ্চাদের। সেদিন এক বাচ্চা একাএকা খেলা করছিল। বাচ্চাটার প্রিয় খেলা ছিল, জানালার গ্রিল বেয়ে উপরে উঠা আর নিচে নামা। এই খেলা বাচ্চা প্রতিদিন খেলে। একদিন বাচ্চাটা স্কুল থেকে এসে গ্রিল বেয়ে উঠা নামা খেলা খেলছে। এক জ্বীন বাচ্চাটাকে ফেলে দেয়। বাচ্চার মাথা ফেটে যায়। বদমাশ জ্বীনের আরেকটা ঘটনা বলি, ছোট ছোট দুই বাচ্চা স্কুল থেকে বাসায় ফিরছে। হেটে হেটে। হঠাৎ জ্বীন কুকুরের রুপ ধরে বাচ্চা দুটাকে কামড়ে দেয়। বাচ্চা দুটার সারা শরীর ছিন্নভিন্ন করে দেয়। বাচ্চা দুটা প্রায় মৃত্যুর মুখে। এই বদমাশ জ্বীনকে লাথথি মেরে আমি নিশ্চয়ই ভালো কাজ করেছি। জ্বীন জাতি মানুষের কোনো কল্যাণ করে না, এই বিষয়ে আমি নিশ্চিত। এই যে মাঝ নদীতে লঞ্চ ডুবে যায়, অসংখ্য মানুষ মারা যায়, এটা জ্বীনের কাজ। খুন, ধর্ষণ, চুরী ডাকাতি এগুলো আসলে মানুষ করে না। দুষ্ট জ্বীনরা মানুষের রুপ ধরে মন্দ কাজ গুলো করে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০২৫ দুপুর ২:০৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



