somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জঙ্গি হামলা এবং আমার ভাবনা

০৩ রা জুলাই, ২০১৬ রাত ২:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিন্দা জানাই এদের যারা ইসলামের নাম নিয়ে অন্যায়ভাবে নিরীহ মানুষ হত্যা করে। কিন্তু একটা প্রশ্ন আমার সব সময় মনে থেকেই যায় এরা কি সত্যিই ইসলাম প্রচারে জিহাদ করছে? নাকি বিদেশী ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মকে কলুষিত করার অপপরিকল্পনার অংশ এটি? আমার কেন যেন মনে হয় এটা অবশ্যই একটি অপপরিকল্পনার অংশ কারন প্রতিটা মুসলমান অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যাকে পছন্দ করে না। আর কুরআন হাদিসও এমন কিছু বলে না যে তোমরা ভিন্ন ধর্মের মানুষকে হত্যার মাধ্যমে ইসলামের প্রচার বা প্রতিষ্ঠা করো।

যখন বলা হয় ইসলামী জঙ্গি গোষ্ঠী অমুক হত্যা করেছে, অমুক নিরীহ মানুষকে জিম্মি করেছে, অন্য ধর্মের মানুষকে কুপিয়েছে তখন প্রথমত দোষ যায় ইসলামের উপর কারন অন্য ধর্মের মানুষরা জানে না কুরআন হাদিসে কি আছে। তারা মুসলমানদের আচার-আচরন দেখেই সিদ্ধান্ত নেয় এই ধর্মটি কেমন। কিন্তু বর্তমান সময়ে ইসলামের নাম নিয়ে যে জঙ্গিপনা দেখা যাচ্ছে তা স্পষ্টত ইসলামকে বিতর্কিত করছে। যার মধ্য দিয়ে কোন সুফল তো মুসলমানরা পাচ্ছেই না। বরং অন্যদিকে বিভিন্ন জায়গায় মুসলমানরা বিভিন্ন সমস্যায় পরছে।
ইসলাম কল্যানের পথ। এই কল্যান যেমন পার্থিব জীবনের তেমনি পরকালিন সফলতাও নির্দেশ করে। কিন্তু ইসলাম কোন ভাবেই মানুষকে এটা বোঝায় না যে অন্যায়ভাবে নিরীহ মানুষ হত্যা করা জায়েজ।

ইসলাম মানুষকে মধ্যম পন্থা অবলম্বনের শিক্ষা দেয়। আর মধ্যম পন্থা কখনোই সন্ত্রাস হতে পারে না। সন্ত্রাসীদের কোন জায়গা নেই ইসলামে। ইসলাম ন্যায় ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করেছে যুগের প্রয়োজনে আল্লাহ্‌ ইচ্ছায়।

আজকের বিশ্ব রাজনীতির দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় ইসলামী দেশগুলোকে জঙ্গিবাদী রাষ্ট্র প্রমান করে কিভাবে অন্যায়ভাবে তাদের উপর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে। সেই রাজনীতি বাইরে বোধয় আমরাও না। তারা চাইতেই পারে এই মুসলিম অধ্যষিত রাষ্ট্রে শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট করে, শান্তি প্রতিষ্ঠার বার্তা নিয়ে আগ্রাসন চালাতে। আর সেই পরিকল্পনার অংশ হিসাবে গুলশানের এমন ঘটনা ঘটাতেই পারে। আমরা জানি, আল কায়দা,আইএস কাদের পৃষ্ঠপোষকতায় জন্ম লাভ করছে। আবার কারা-ই এই ইস্যু নিয়ে সেই দেশগুলোকে ধ্বংসের দ্বোড়গোড়ায় পৌছে দিয়েছে।

এতকথা বলার একমাত্র কারন অন্য ধর্মের মানুষকে ইসলামের অবস্থান সম্পর্কে আমার ব্যক্তিগত মত তুলে ধরা। কারন অনেকেই এই ভেবে বসে আছেন হয়তো ইসলাম এমন ধর্ম যা অন্য ধর্মের মানুষ হত্যার অনুমতি দেয়। আপনাদের বলে রাখি আল্লাহ্‌ আল-কুরআনে মুসলমানদের অন্য ধর্মের মানুষ যেসব দেবদেবী প্রার্থনা করে তাদের গালি দিতে নিষেধ করেছেন। তাহলে যে ধর্ম মুসলমানদের অন্য ধর্মের দেব-দেবীদের গালি দিতে নিষেধ করে সেই ধর্ম কিভাবে অন্য ধর্মের মানুষকে হত্যার অনুমতি দিতে পারে?
ইসলাম অবশ্যই জিহাদের অনুমতি দেয় কিন্তু সেই জিহাদ অবশ্যই ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে। যারা অন্যায়ভাবে মুসলমানদের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়। কিন্তু এর মানে এই নয় যে কোন জায়গায় অন্যধর্মের নিরীহ মানুষ পেলেই হত্যা করতে হবে।

বাংলাদেশে কিছু সন্ত্রাসী বিদেশীদের জিম্মি করে যে হত্যা করলো তার মাধ্যমে তারা কি সুফল পেলো বা মুসলমানরা সারা পৃথিবীতে কি সুবিধা পেয়েছে এমন প্রশ্নই তোলা যায়। শুধুমাত্র আল্লাহু আকবর বলেই আক্রমন করলে ইসলামী জঙ্গি হয়ে যায় না। ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের নীল নকশার অংশ হিসাবে এমন ঘটনা ঘটাতেই পারে। তাই বলছি দাঁড়ি টুপিওয়ালা মানুষ দেখলেই জঙ্গি ভাবার কারন নেই। মাদ্রাসায় পড়েই কেউ জঙ্গি শিক্ষা পায় না। বরং প্রকৃত ইসলামী শিক্ষাই আমাদের ভাল মানুষ হিসাবে গড়ে উঠতে সহায়তা করতে পারে।

দেশ আজ গভীর ষড়যন্ত্রের মধ্যে আছে। একদিকে যেমন আমেরিকার পূর্বপরিকল্পিত নীল নকশা অন্য দিকে প্রতিবেশী রাষ্ট্রে প্রভুসূলভ আচরন। এই দুই-ই দেশের জন্য মহা বিপদ ডেকে আনছে। আমরা শান্তিপ্রিয় জাতি। তবে অন্যায় কোনভাবেই আমরা মেনে নেই নাই আর মেনে নিবো না। যুদ্ধ জয়ের জাতি কখনোই কারো কাছে মাথা নত করে না। এই দেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ যুগযুগ ধরে পাশাপাশি বসবাস করে আসছে আর অতীতেও এমন সম্পর্ক বজায় থাকবে।ইনশাল্লাহ ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুলাই, ২০১৬ রাত ২:২৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×