চরমপন্থা যে পথেই হোক তা সমাজ এবং রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তেমনি চরমপন্থা নির্মূলে পেশিশক্তির প্রয়োগ সমান ভাবে সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। কারন চরমপন্থা যারা অবলম্বন করে তারা সানন্দে মৃত্যুকে আলিঙ্গন জানাতে পারে। তখন মৃত্যুর ভয় তাদের ভীত করে না বরং তারা আরো বেশি আগ্রাসী হয়ে উঠে। উদাহরণ হিসাবে ধরা যায় আল কায়দা। আমেরিকার মত শক্তিধর রাষ্ট্র দীর্ঘ সময় ধরে চেষ্টা করেছে তাদের সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে তাদের নির্মূলের কিন্তু সেই চেষ্টার কোন ভাল ফল আসেনি। বরং আল কায়দার দ্বারা বিভিন্ন রাষ্ট্র বিভিন্ন সময়ে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যা দিনের পর দিন বিস্তার লাভ করছে।
চরমপন্থায় যারা বিশ্বাসী তারা একধরনের আদর্শিক চিন্তা ধারন করে। তাদের এই আদর্শিক চিন্তা নির্মূলে তাদের যুক্তি ভ্রান্তি তা তাদের কাছে পৌছে দেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু আমরা যদি সেই ভ্রান্তিকে তাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা না করে তাদের নির্মূলের চেষ্টা করি তাহলে সেটা হবে আমাদের দিক থেকে চরমপন্থা। আর আমার মনে হয় চরমপন্থাকে চরমপন্থা দ্বারা নির্মূল করা সম্ভব নয়।
চরমপন্থিরা এক ধরনের মানষিক বিকারগ্রস্ততার মধ্যে বসবাস করে। তাদের চিকিৎসার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয়। তবে সেই চিকিৎসার ব্যবস্থা রাষ্ট্রকেই করতে হবে। রাস্তার কুকুর গুলা যা পথচারীকে বিনা কারনে কামড়ে দেয়। তাদেরও হত্যা করা দেখে সমাজের মানুষ কষ্ট বোধ করে। তেমনি একজন মানুষ যে ধরনের ভুলের মধ্যেই বসবাস করুক না কেন তাকে হত্যাও মানুষকে চরমভাবে ব্যথিত করে।
সহমর্মিতা, সহনশীলতার সমন্বয়ে একধরনের কৌশল গ্রহন করা উচিত রাষ্ট্রের। যে কৌশল খারাপ মানুষকে ভাল মানুষে রুপান্তর করতে সহায়তা করবে। এর মাধ্যমে সমাজের যত অসংগতি আছে তা নূন্যতম করার প্রচেষ্টা নিতে হবে। শিক্ষাকে বাস্তবধর্মী করতে হবে। যাতে এই শিক্ষা মানুষকে মানবিক চিন্তার জগতের প্রসারণ ঘটায়। ধর্মকে মানুষের অবশ্য বাধ্যতামূলক করার প্রচেষ্টা, মানুষের মানুষিক বিকারগ্রস্ততা হ্রাস করতে সহায়তা করতে পারে।
বর্তমান সময় বাস্তবতায় দ্বিধাবিভক্তির রাজনীতিকে উস্কে দেওয়া হচ্ছে। একশ্রেনীর মানুষ অন্য শ্রেনীর মানুষকে সহ্য করতে পারছে না। এই ধরনের অবস্থার অবসান ঘটা উচিৎ। অন্যায়কে মূল্যায়ন করা উচিৎ নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। কারন পক্ষপাতমূলক আচরন সমাজকে দ্বিধাবিভক্ত করে। তাই রাষ্ট্রের নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি অবশ্যই সমাজে প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।
আজ বিশ্ব রাজনীতি আগ্রাসী এবং ধ্বংসাত্মক। শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো দূর্বল রাষ্ট্রের উপর অন্যায়ভাবে হস্তক্ষেপ করছে যা সারা পৃথিবীকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। এক্ষেত্রে বিশেষ একটা ধর্মের মানুষকে টার্গেট করা হচ্ছে। যা সমস্ত পৃথিবীকে অস্থিতিশীল করছে।
তাই সর্বশেষে বলা যায়, এই ধরনের চরমপন্থা নির্মূলে স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদী কৌশল অবলম্বন করতে হবে। সেই ক্ষেত্রে সার্বিক বাস্তব অবস্থা আমলে আনতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:১৫