বর্তমান সভ্য সমাজের মানুষ একটা কুকুর বা একটা বিড়াল পুষতে যতটা না ভালবাসে তার থেকে অনেক গুন বিরক্ত হয় একটা অনাথ অসহায় মানুষকে কুকুর বা বিড়ালের ন্যায় পুষতে। এর মাধ্যমেই বোঝা যায় সত্যিকার অর্থে মানুষ তার স্বজাতীয়কে কতটা ঘৃনা করে। আজকে রাস্তায় কত মানুষ প্রভুহীন কুকুরের ন্যায় পড়ে থাকে কিন্তু তাদের দেখার কেউ থাকে না।
কিছু দিন আগে বাসে যাচ্ছিলাম পরীক্ষা দিতে তখন একটা ছেলে আমার দিকে তাকিয়ে রাস্তার দিকে অঙ্গুল দেখিয়ে বলছিল, ভাই ঐ লোকগুলোকে ক্রসফায়ারে মারা উচিৎ। তাকে জিজ্ঞাস করলাম কেন ভাই? বললো, ঐ লোকগুলোর ভাল হবার সুযোগ নেই। সারাদিন যে কয় টাকা ইনকাম করে তাই দিয়ে নেশা করে। দেখছেন না কি অবস্থা শরীরের। আমিও তাকিয়ে দেখলাম রাস্তায় যে লেড়ি কুত্তা ঘুরে বেড়ায় তাদের মত অবস্থা। সারা শরীরে কিছু নেই। আছে কঙ্কালসার দেহ।
সত্যিই ছেলেটি বলেছিল ওদের বাঁচার অধিকার নেই। কেন বাঁচবে তারা? সৃষ্টিকর্তা তাদের যে অবস্থায় রাস্তায় ফেলে রেখেছেন তাতে করে মনে হয় না পৃথিবীতে তাদের দিকে তাকানোর মত কোন মানুষ আছে। আমাদের সভ্য সমাজ একটা কুকুরকে হাজার লাখ টাকা খরচ করে কিনতে পারে, তাদের খাওয়ানো জন্য উন্নত খাবারের আয়োজন করতে পারে, কিন্তু অনাথ মানুষের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে না।
আমরাই বোধয় একমাত্র প্রানী যারা সভ্য বলে দাবি করি। কিন্তু আমাদের প্রতিটা কাজ অসভ্য মানুষের পরিচয় বহন করে।
আজ সমাজের যত অন্যায় তার জন্য এই সমাজের মানুষ দায়ী। আর যতই ক্রসফায়ার করে সেই সব উগ্রবাদীদের হত্যা করি কখনোই তা নির্মূল সম্ভব হবে না। কারন এই সব উগ্রবাদীদের জন্ম হয় এই সমাজের ভ্রান্ত নীতির কারনে। তাই ক্রসফায়ার করে এদের নির্মূল করা যাবে না। সামাজিক অসংগতি দূর হলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে এরা বিলুপ্তি হবে।
তাই এখন প্রয়োজন সমাজের রোগগুলো চিহ্নিত করা এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। আর যদি সেই চিকিৎসা করতে সময়ক্ষেপণ করা হয় তবে তা সমস্ত সমাজে ছড়িয়ে পড়বে। যা আমাদের জন্য হবে আত্মঘাতী।। ।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১২:১৫