somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টিপাইমুখ বাঁধ আর শঙ্কা বাস্তবায়নের অপেক্ষা!

১৯ শে নভেম্বর, ২০১১ সকাল ১১:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অবশেষে সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে টিপাইমুখ চুক্তি করেই ফেলল ভারত। আর আমাদের নতজানু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভুমিকা যে কি ছিল তা আমাদের উড়াল মন্ত্রী কি একটু পরিষ্কার করবেন? অন্তত এখন? নাকি এখনো তিনি বেস্ত থাকবেন তার হিল্লি দিল্লি সফর নিয়ে।

টিপাইমুখ বাঁধ কি

টিপাইমুখ বাঁধ, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ১০০ কিলোমিটার উজানে ভারতের বরাক নদীর ওপর নির্মিতব্য (২০০৯) একটি বাঁধ। টিপাইমুখ নামের গ্রামে বরাক এবং টুইভাই নদীর মিলনস্থল। এই মিলনস্থলের ১ হাজার ৬০০ ফুট দূরে বরাক নদীতে ৫০০ ফুট উঁচু ও ১ হাজার ৬০০ ফুট দীর্ঘ বাঁধ নির্মাণ করে ১ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে ভারত সরকার কাজ শুরু করেছে । অভিন্ন নদীর উজানে এই বাঁধ ভাটির বাংলাদেশের পরিবেশ আর অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে এমত আশঙ্কা করেন বিশেষজ্ঞরা৷টিপাইমুখ বাঁধ

ড্যাম ফিচার

বরাক ও টুটভাই নদীর মিলনস্থল থেকে ৫০০ মিটার ভাটিতে এবং অমলসিধ থেকে ২০০ কি.মি. উজান
প্রকার : মাটির ড্যাম, অভ্যন্তরভাগ পাথর নির্মিত
উচ্চতা : ভূমি থেকে ১৬১ মিটার, সমুদ্র সমতল থেকে ১৮০ মিটার দৈর্ঘ্য : ৩৯০ মিটার
পানি ধারণক্ষমতা : ১৬ বিলিয়ন ঘনমিটার সর্বোচ্চ রিজার্ভ লেভেল : ১৭৮ মিটার
নির্মাণ ব্যয় : ১,০৭৮ কোটি ভারতীয় রুপি সমগ্র প্রকল্পের মোট ব্যয় : ৫১৬৩.৮৬ কোটি ভারতীয় রুপি

বহুমূখী এই প্রকল্পটির প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল মূলত বরাক উপত্যকায় পানি ধারণের মাধ্যমে ২,০৩৯ বর্গকি.মি. এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ। পরবর্তীকালে এই ড্যামের মাধ্যমে সম্ভাব্য জলবিদ্যুৎ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫০০ মেগাওয়াট, যার মধ্যে ৪১২ মেগাওয়াট ফার্ম জেনারেশন। টিপাইমুখ ড্যামের মাধ্যমে বরাকের পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে কাছার সমতলে সেচ প্রদানের ব্যবস্থা করাও এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। হাইড্রো ইলেকট্রিক প্রকল্পের কাজ ২০১২ সালের মধ্যে শেষ হবার কথা।

ভূ-তাত্ত্বিক অবস্থান

টিপাইমুখ বাঁধ প্রকল্পের ভূ-তাত্ত্বিক অবস্থান খুব গুরুত্বপূর্ণ। বরাক উপত্যকার নিচে চ্যুতিটি বরাক ও এর অন্যান্য শাখা-প্রশাখাগুলোর গতি-প্রকৃতি নির্ধারণ করে। প্রস্তাবিত ড্যামটির অবস্থান তাইথু ফল্টের উপর যা ভূ-তাত্ত্বিকভাবে সক্রিয় এবং ভবিষ্যতে ভুমিকম্পের কেন্দ্র হতে পারে। এছাড়া, সঞ্চরণশীল ইন্ডিয়ান ও বার্মিজ প্লেট এই অঞ্চলকে বিশ্বের অন্যতম একটি ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে পরিণত করেছে। রিক্টার স্কেলে ৭ এর উপরের মাত্রার অন্তত দুটি ভূমিকম্প টিপাইমুখের ১০০ কি.মি. ব্যাসার্ধের মধ্যে অনুভূত হয়েছে গত ১৫০ বছরে; যার মধ্যে সর্বশেষটির উপকেন্দ্র ছিল টিপাইমুখ থেকে মাত্র ৭৫ কি.মি. দূরে, ১৯৫৭ সালে। উপরন্তু ইন্দো-বার্মা রেঞ্জে টেকটনিক প্লেটের সঞ্চারণের ফলে এ অঞ্চলে মাটির অল্প গভীরে উৎপন্ন ভূমিকম্পের প্রবণতা বেশি। এই ধরনের কম্পনগুলোর তীব্রতা কম হলেও বেশি বিধ্বংসী। বিভিন্ন গবেষণায় পূর্ববর্তী ভূমিকম্পের রেকর্ড, ভূত্বাত্তিক ডাটা এবং টেকটনিক প্লেট সঞ্চারণের ইতিহাস তাই এ আশঙ্কাই ব্যক্ত করে যে, টিপাইমুখ ড্যামটি ভূমিকম্পের জন্য সবচেয়ে বিপদজ্জনক একটি অঞ্চলে অবস্থিত।

টিপাইমুখ বাঁধের প্রভাব

অস্ট্রেলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অফ সাউথে পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে গবেষণারত জান্নাতুন নাহারের এক গবেষণা রিপোর্টে জানা গেছে, ভারতের মনিপুর রাজ্যের পাহাড় থেকে নির্গত হয়ে ৯৪৬ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে বরাক, সুরমা, কুশিয়ারা, মেঘনার অভিন্ন নদীপ্রবাহ ভোলা জেলা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। এর ২৭৭ কিলোমিটার ভারতের এবং বাকি ৬৬৯ কিলোমিটার বাংলাদেশের মধ্যে। ওই গবেষণা রিপোর্টে জানা গেছে, বাংলাদেশের ১/৬ অংশজুড়ে বিরাজমান উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিশাল হাওরাঞ্চলে টিপাইমুখ বাঁধের কারণে ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দেবে, যা এক ফসলি হাওরাঞ্চলের কৃষিকে ধ্বংস করে ফেলবে। ভাটির দেশ হিসেবে শুধু বাংলাদেশই নয়, বরং এ প্রকল্পের ফলে খোদ ভারতেরই ২৭ হাজার ২৪২ হেক্টর বনভূমি বিনষ্ট হবে। আসাম, মনিপুর ও মিজোরামের ৩১১ বর্গকিলোমিটার ভূমি প্লাবিত হবে, যার অধিকাংশই আদিবাসী অধ্যুষিত।

বাঁধের উজানে প্রভাবঃ
খুব সাধারণ ভাবে দেখলে একটি বাঁধের কারনে এর উজানে নিম্নরূপ প্রভাব পরিলক্ষিত হয়ঃ
সৃষ্ট কৃত্রিম জলাধার বিপুল পরিমান এলাকাকে পানির নিচে নিমজ্জিত করে, ফলে আগে যেখানে শুষ্ক এলাকা ছিল তা জলাভূমিতে পরিনত হয়।এর ফলে অনেক মানুষের ঘরবাড়ি আবাদী জমি পানির নিচে তলিয়ে যায়। সেই সাথে বিপূল পরিমান বনভূমি ও অন্যন্য উদ্ভিদ পানির নিচে তলিয়ে যায়। এই সব উদ্ভিদ পচে গিয়ে বিপূল পরিমান কার্বন পরিবেশে নিঃসরণ করে যা কিনা প্রকারান্তরে বায়ুমন্ডলে গ্রীন হাউস গ্যাস বাড়ায়।

আগে যেখানে ছিল নদী সেখানে আজ জলাধার, ফলে পানির উপরিতলের ক্ষেত্রফল বেড়ে যায় অনেক গুনে। পানির উপরিতলের ক্ষেত্রফল যত বাড়ে এর স্বতঃ বাষ্পীভবন(ইভ্যাপরেশন) এর হার তত বাড়ে। সুতরাং আগে নদী থেকে যে পরিমান পানি বাষ্প উপরে উঠে যেত এখন তার থেকে অনেক বেশী পরিমান স্বতঃবাষ্পীভূত হবে। এর পরিমান নেহায়েত কম নয়, এক হিসেব মতে আমেরিকার হোভার ড্যামের কারনে সৃষ্ট লেক মেড থেকে বাৎসরিক ৩৫০ বিলিয়ন গ্যালন পানি কমে যায় এবং এটি প্রকারান্তরে নদীর পানির প্রবাহকে কমিয়ে দেয়।


বাস্তুসংস্থান বিপর্যয়
বাঁধের বোধকরি সবচাইতে বড় প্রভাব হল বাস্তুসংস্থান বিপর্যয়। বাঁধের উজানে স্বাভাবিক ভাবেই একটি স্থলজ বাস্তু সংস্থান ছিল। সেটি সম্পূর্ণ ভাবে বিনষ্ট হয়ে আমরা কৃত্রিম ভাবে একটি জলজ বাস্তুসংস্থান তৈরী করছি। এতে করে অনেক প্রজাতির স্থলজ প্রানী বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।
অনেক প্রজাতির মাছ আছে যারা বছরের একটি বিশেষ সময়ে ভাটি থেকে উজানে চলে যায়। বাঁধের কারনে মাছের এই অভিভাসন সম্পূর্ণ রূপে বিনষ্ট হয় ফলে প্রকারান্তরে এর উৎপাদন কমে যায় বা নিঃশেষ হয়ে যায়।
নদীর প্রবাহে শুধু পানি থাকেনা, বরং এটি বয়ে নিয়ে চলে বিপূল পরিমান পলি।বাঁধ হলে এর উজানে নদীর গতিবের প্রায় শুন্য হয়ে যায়। ফলে নদীর পানির পক্ষে এই পলিকে আর ধরে রাখা সম্ভব হয়না বরং অভিকর্ষের প্রভাবে তা ধীরে ধীরে নিচে পড়ে যায় এবং জলাধারের বুকে জমতে থাকে।এটি প্রকারান্তরে জলাধারের নিচের স্তরের উচ্চতা বাড়িয়ে দেয়।

ভুমিকম্পে বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু?


বাঁধ ভেঙ্গে গেলে তার পরিস্থিতি কি হবে তার কিছুটা FAP 6 এর রিপোর্টে দেখেছি, তবে এর সবকিছুই তাত্ত্বিক বিশ্লেষন। সত্যিকারে কি ভয়াবহ অবস্থা হবে তা চিন্তা করতেও ভয় লাগে।ভূতাত্ত্বিকভাবে টিপাইমুখ বাঁধ এলাকা এবং তৎসংলগ্ন অঞ্চল আসলে অসংখ্য 'ফোল্ড ও ফল্ট' বিশিষ্ট.এই অঞ্চলে গত ১৫০ বছরে রিক্টার স্কেলে ৭ এর অধিক মাত্রার দু'টি ভূমিকম্প হয়েছে যার মধ্যে শেষটি ছিল ১৯৫৭ সালে যা কিনা টিপাইমুখ প্রকল্প থেকে পূর্ব-উত্তরপূর্ব দিকে মাত্র ৭৫ কিমি দূরে[১৩]।
এছাড়া "জলাধার আবেশিত ভূমিকম্প" (Reservoir Induced Seismicity বা RIS) এর আশঙ্কাত আছেই। ভারতের টিপাইমুখ প্রকল্পের EIA রিপোর্ট [২]অনুযায়ী এই বাঁধের 'Full Reservoir Level' সমুদ্র সমতল থেকে ১৭৫ মিটার উঁচুতে আর এর তলদেশের গড় উচ্চতা সমুদ্র সমতল থেকে ২২.৫ মিটার উচুতে, অর্থাৎ জলাধারের পানির গড় উচ্চতা ১৫২.৫ মিটার।গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে যেসব জলাধারের পানির উচ্চতা ১৫০ মিটারের বেশী তাদের ক্ষেত্রে এই RIS এর হার শতকরা ৩০ ভাগ[১৩], সেক্ষেত্রে টিপাইমুখ বাঁধও এই আশঙ্কাতে পড়ে।

সচল জাহিদের লেখা

প্রান বৈচিত্র্য ও জীবিকার ক্ষেত্রে-এ

টিপাইমুখে এই বাঁধ নির্মিত হলে বাংলাদেশের প্রাণবৈচিত্র্যও ব্যাপকভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে। এটা শুধু পানির অভাবে নয়, স্বাদু পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘ্নিত হলে সমুদ্রের লবণাক্ত পানি বাংলাদেশের নদ-নদীগুলোর আরো ভেতরে প্রবেশ করবে। এর পরিণতিতেও বাংলাদেশের প্রাণবৈচিত্র্যও যেমন বিনষ্ট হবে, তেমনি চাষাবাদের জমি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা এবং সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকার লাখ লাখ মানুষকে জীবিকার সন্ধানে শহরগুলোতে ছুটে আসতে হবে। এটিও বিরাট মানবিক সঙ্কটের সৃষ্টি করবে।

পানি সম্পদে প্রভাব

IWM একটি সমীক্ষা ধারণা করেন যে টিপাইমুখ পরিকল্পনা পুর্নভাবে কার্যকর থাকলে সুরমা,কুশিয়ারা ও মেগনা অববাহিকায় জুন মাসে ১০%, জুলাই মাসে ২৩%, আগস্ট মাসে ১৬%, এবং সেপ্টেম্বর মাসে ১৫% পানি প্রবাহ কমে যাবে। কুশিয়ারা নদিতে আমলশিদ স্টেশন, ফেঞ্চনঞ্জ, শেরপুর, মারকুলি স্টেশনে পানির উচ্চতা কমে যাবে যথাক্রমে ১ মিটার, ০.২৫ মিটার, ০.১৫ মিটার, ০.১ মিটার পর্যন্ত। অপরদিকে কানাইরগাট সুরমা নদির সিলেট স্টেশনের পানির উচ্চতা কমে যাবে যথাক্রমে ০.৭৫ মিটার এবং ০.২৫ মিটার পর্যন্ত।

আন্তর্জাতিক রীতি-নীতির লংঘন:
। দুই দেশের মধ্যকার এই যৌথ চুক্তি তো ছাড় ভারত দুই দেশের মধ্যকার যৌথ নদী ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত হেলসেংকি রুল(লন্ডন, আন্তর্জাতিক আইন সংস্থা,১৯৬৭) কিংবা জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক নদী ব্যাবহারের কনভেনশন(১৯৯৭) ইত্যাদি কোনটিরই তোয়াক্কা করছেনা- করলে বাংলাদেশকে না জানিয়ে, বাংলাদেশের জনগণের মতামত না নিয়েই টিপাইমুখ বাধ তৈরীর উদ্যোগ নিতে পারত না।

হেলসিংকি রুলের আর্টিক্যাল ২৯(২) অনুসারে:
একটি রাষ্ট্র নদী অববাহিকার যেখানেই অবস্থান করুক না কেন, তার যে কোন প্রস্তাবিত অবকাঠামো নির্মাণ এবং ইনষ্টলেশানের ব্যপারে নদী অববাহিকায় অবস্থিত অপর যে কোন রাষ্ট্র, এই কাজের ফলে অববাহিকায় ঘটা পরিবর্তনের কারণে যার স্বার্থহানী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ফলে আর্টিক্যাল ২৬ এ সংজ্ঞায়িত আইনি অধিকার বিষয়ক বিরোধ দেখা দিতে পারে, তাকে এ ব্যাপারে নোটিশ দিতে হবে। নোটিশে গ্রহীতা দেশটি যেন প্রস্তাবিত পরিবর্তনের সম্ভাব্য ফলাফলের বিচার-বিশ্লেষণ করতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যাবলী থাকতে হবে।

জাতিসংঘের নদী কনভেশনের আর্টিক্যাল ১২ অনুসারে:

নদী অববাহিকায় অবস্থিত কোন রাষ্ট্র যখন অববাহিকায় অবস্থিত অপর কোন রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এমন কোন পরিকল্পনার অনুমোদন দেয় কিংবা বাস্তবায়ন শুরু করে, তখন সেই রাষ্ট্রকে সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্থ রাষ্ট্রগুলোকে আগাম নোটিশ প্রদান করতে হবে। এই নোটিশের সাথে এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট এর ফলাফল সহ ঐ দেশের হাতে থাকা সমস্ত ডাটা এবং তথ্যাবলী সর্বরাহ করতে পারে যেন গ্রহীতা দেশটি পরিকল্পিত কাজটির সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া যাচাই-বাছাই করতে পারে।

ভারত বহুবছর ধরে টিপাইমুখ বাধের পরিকল্পনা করছে এবং এমনকি ২০০৬ সালে বাধের ভিত্তি প্রস্তরও স্থাপন করেছে কিন্তু আনুষ্ঠানিক ভাবে বাংলাদেশকে এসব কিছুই জানায়নি। ১৪ এপ্রিল,২০০) ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শিবশংকর মেনন হুট করে ঢাকায় এসে বাংলাদেশকে আহবান জানিয়েগেছেন প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করতে-কোন টেকনিক্যাল ডাটা নাই, এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট এর কাগজপত্র নাই- যেন টিপাইমুখ একটি পর্যটন প্রকল্প, গিয়ে পরিদর্শন করে এলেই হলো! ফলে উপরে উল্লেখিত আইনগুলোর আওতায় বাংলাদেশ ভারতকে বাধ্য করতে পারে প্রয়োজনীয় যাচাই বাছাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যাবলী দিতে এবং প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতের মুখোমুখি হতে। অথচ বাংলাদেশের নতজানু শাসক শ্রেণীর সেদিকে কোন নজর তো নেই-ই বরং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নদীপথ ব্যবহারের চুক্তি থেকে শুরু করে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক দ্বাসত্ব মূলক বাণিজ্য চুক্তি নবায়ন এমনকি একের পর এক নতুন নতুন চুক্তিতে আবদ্ধ হচ্ছে।

বিস্তারিত


বাংলাদেশ কেন কিছু বলতে পারছে না!

আওয়ামী লীগ শাসন আমলে ১৯৯৬ সালে সরকার ভারতের সাথে তিরিশ বছর মেয়াদি একটি পানিচুক্তি স্বাক্ষর করে। অর্থাৎ সে চুক্তিতে গ্যারান্টি ক্লজ তুলে দেয়া হয়। ফলে চুক্তিবলে বাংলাদেশে যেটুকু পানি পাওয়ার কথা ভারত তা না দেয়ায় বাংলাদেশের পক্ষে তৃতীয় কোনো শক্তির দ্বারস্থ হওয়ার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। এ কারণে ১৯৯৬ সালের চুক্তির পরও বাংলাদেশ চুক্তি মোতাবেক কখনো পানি পায়নি। ভারত খামখেয়ালি মতো গঙ্গার পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। এবারো শুষ্ক মৌসুমে ভারত বাংলাদেশকে চুক্তির চেয়ে ৮৩ হাজার কিউসেক পানি কম দিয়েছে।



টিপাইমুখ নিয়ে অসাধারন কিছু লেখা!

১৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত যে কোনো উপায়ে উৎপাদন করা সম্ভব। তাপ, বায়ু, পরমাণু অথবা সৌর যে কোনো উপায়ে উৎপাদন করা যাবে। কিন্তু নদিটির মৃত্যু হলে পুনরায় কোনো উপায়ে নতুন বরাক নদী তৈরি করা সম্ভব হবে না।সিডর হতে আইলা সময় অতিবাহিত হয়েছে মাত্র আড়াই বছর। কিন্তু আমরা আক্রান্ত হয়েছি ৬ টি ঘূর্ণিঝড়। সামনে আর ভয়াবহ পরিস্থিতি আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। তাই এখনি আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। আর পরিবেশ বিপর্যয়কারী সকল প্রকার কর্মকাণ্ড হতে নিজেরা বিরত থেকে অপরকেও বিরত রাখার জন্য সর্বতোভাবে বাধা প্রদান করতে হবে।

লেখাটা অনেক বড় হয়ে গেলো। লেখাটা মৌলিক লেখাও নয়। দু দিন ধরে টিপাইমুখ সম্পর্কে পড়ে যা জেনেছি তাই দেবার চেশটা করেছি। এই বিষয়ে অনেক ভালো ভালো লেখা আছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:১৭
১৮টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মৃত্যু কাছে, অথবা দূরেও নয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



©কাজী ফাতেমা ছবি
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বলি, আমারও সময় হবে যাবার
কি করে চলে যায় মানুষ হুটহাট, না বলে কয়ে,
মৃত্যু কী খুব কাছে নয়, অথবা খুব দূরে!
দূরে তবু ধরে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×