somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

~~~কেদাহ ভ্রমন এবং বিচিত্র আভিজ্ঞতা~~~ (পর্ব-১)

১৯ শে নভেম্বর, ২০১০ রাত ১১:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাত তখন ১১:৩০।আমরা সবাই মিলে ভার্সিটির মেইন ফটকে উপস্থিত।উদ্দেশ্য কেদাহ যাবো।কেদাহ হলো মালায়শিয়ার ১৪টি আঙ্গরাজ্য এর আন্যতম ১টি আঙ্গরাজ্য যার রাজধানীর নাম 'আলোর সেতার'।এই আলোর সেতার ই হলো ডঃমাহাথীর মোহাম্মাদ এর জম্মস্থান।আমি কলেজ এ থাকা কালে মাহাথীর কে নিয়ে রচিত ১টি বই পড়ে আলোর সেতার সম্পর্কে ১ম জানতে পারি।মালায়শিয়ার উত্তরদিকে এবং থাইল্যান্ড বর্ডার এর খুব কাছেই কেদাহ আবস্থিত। কেদাহ তে খুব সম্প্রতি ১ সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে এবং থাইল্যান্ড তার পানি ছেড়ে দেওয়াতে খুব ভয়াবহ ধরনের ১ বন্যা হয়েছে।এটি ছিলো মালায়শিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বান্যা।আমাদের কেদাহ যাওয়ার উদ্দেশ্য মুলত বন্যা দূর্গতদের সাহায্য করা।আমাদের ভার্সিটির রিলিফ টিম এর আমরা প্রায় ১০জন বাংলাদেশি যাচ্ছি।সবাই উপস্থিত হওয়ার পর রিলিফ টীম এর প্রধান ১টি ছোটখাট ব্রিফিং দিলো।ওখনে যেয়ে আমাদের কি কি করতে হবে আবং আমারা কোথায় থাকবো এসব বিষয় নিয়ে মোটামুটি ১টী ধারনা দিলো।বাস ছাড়ার পুর্বে আমাদের কে ১০রিঙ্গিত করে ভাতা দিলো পথিমধ্যে যাত্রা-বিরতিতে খাবার কেনার জন্য।৫রিঙ্গিত যাওয়ার সময় এবং ৫রিঙ্গিত আসার সময়।আমাদের বাস রাত ১২:৩০ মিনিটে ভার্সিটি থেকে কেদাহ এর উদ্দেশ্যে ছেড়ে দিলো।পথের দুপাশের আলোর ঝিকিমিকি দেখতে দেখতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম খেয়াল ছিলোনা।বাস থামার ঝাকুনিতে ঘুম ভেঙ্গে গেলো।জেগে দেখি বাস ১জায়গায় যাত্রা-বিরতি দিলো।সবাই মিলে বাস থেকে নেমে ফ্রেশ হয়ে হাল্কা নাস্তা সেরে আবার বাসে উঠে বসলাম।রাত তখন ৩টা।আমাদের বাস এগিয়ে চলছে দুরন্ত গতিতে।ঘুম ভেঙ্গে যাওয়াতে আমি বসে বসে চাদের আলোতে রাস্তার দু-পাশের দূশ্য দেখছিলাম।দুপাশেই বিশাল বিশাল পাহাড়,মাঝে-মাঝে অনেকটা দূরে কিছু জন-বসতি দেখা যায়।আমাদের বাস পথিমধ্যে আরেকটা জায়গায় থামলো সবাই মিলে ফজরের নামাজ পড়ার জন্য এবং সকালের নাস্তা করার জন্য।নামাজ পড়েই বসে পড়লাম সবাই মিলে আড্ডা দেওয়ায়।আগের বিরতিতে নাস্তা করায় প্রায় সবারই পেট ভরা ছিলো।দু-একজন নাস্তা করলো যারা আগের বিরতিতে কিছুই নাস্তা করেনি।তখন প্রায় সকাল হয়ে গেছে।রেস্তোরা থেকে বের হয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি সেই দূর পাহাড়ের কোল ঘেষে কিছু মেঘ ছুটো-ছুটি করছে।খুব এ সুন্দর লাগছিলো দূশ্যটা,তাই কোনো দেরী না করেই সবাই মিলে ১টা গ্রুপ ছবি তুলে নিলাম।এরপর আবার বাসে উঠে রওনা দিলাম গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।কুয়ালালামপুর থেকে কেদাহ যেতে প্রায় ৬ঘন্টা সময় লাগে।আমরা যথাসময়েই আমাদের গন্তব্যস্থলে পৌছে গেলাম যদিও আমাদের পাইলট শেষ মুহুর্তে ভুল পথে চলে গিয়েছিল।আমাদের থাকার ব্যবস্থা করা হলো ইউনিভার্সিটি উতারার তামান সিসওয়া তে।ইউনিভার্সিটি উতারা হলো মালায়শিয়ার অন্যতম ১টি পাবলিক ইউনিভার্সিটি।ইউনিভার্সিটি উতারা যখন প্রথম শুরু হয় তখন মূল ক্যম্পাস থেকে কিছুটা দূরে এই তামান সিসওয়া ছিলো ইন্টারন্যশনাল ছাত্রদের হোস্টেল।পরবর্তিতে হোস্টেল মূল ক্যাম্পাস এ স্থানান্তর করা হয়।এখন এই তামান সিসওয়া গেষ্ট হাইস হিসেবে ব্যবহার করা হয়।যাই হোক,রুম এ ব্যাগ রেখে ফ্রেশ হয়ে এসির বাতাসে বিছনায় গা এলিয়ে দিলাম যদিও তা দীর্ঘস্থায়ি হলোনা।কিছুক্ষন পর ইযযুদ্দীন,আমাদের এই টীম এর প্রধান,এসে রেডি হয়ে নিচে নামতে বললো।সবাই মিলে ১সাথে বের হলাম।খোলা আকাশের নিচে সংক্ষিপ্ত ব্রিফিং শেষে সবাই চললাম ক্যান্টিন এর উদ্দেশ্যে। কিছুক্ষনের মধ্যেই পৌছে গেলাম ক্যান্টিন এ।ক্যান্টিন এ যেয়ে দেখি আমাদের আগে আরো কয়েকটা ভার্সিটির ছাত্র-ছাত্রীরা উপস্থিত।পরে জানতে পারলাম ওরা আরো কয়েকদিন আগেই এসেছে।আজকেই চলে যাবে তারপর ওদের ভার্সিটরই আরেকটা গ্রুপ আসবে ওদের স্থানে।যাই হোক খাবার নিতে গিয়ে দেখলাম মালায় খাবার পরিবেশন করা হয়েছে।মালায় খাবার যে আমি পছন্দ করি তা না।শুধুমাত্র কয়েকটা আইটেম আমি পছন্দ করি।মালায়রা সকাল বেলা ভাত খেয়ে অভ্যস্ত।আমাদেরকে দেওয়া হল নাসি গোরেং।নাসি মানে হলো ভাত আর গোরেং মানে হোলো ভাজি অর্থ্যাৎ ভাত-ভাজি যাকে ইংরেজীতে আমরা বলি ফ্রাইড রাইস।খারাপ হয়নি নাসি গোরেং।নাসি গোরেং শেষ করে হাল্কা কফি পান করে সবাই ছুটলাম ব্রিফিং রুম এ নতুন কিছু শোনার প্রতিক্ষায়। (চলবে)
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×