somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বঞ্চিতের বেদনা

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৮:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সূর্য্য প্রজ্জলিত বলেই চাঁদ আলোকিত
পুরুষ প্রদীপ্ত বলেই নারী কমনীয়
পুরুষ দেখেছে তাই নারী রূপসী
পুরুষ ভালবাসে বলেই নারী প্রেয়সী। - দাউদ

জীবনের পীড়ন থেকে মুক্তি পেতে যা কিছু সম্ভাব্য উপায়ের কথা পৃথিবীতে প্রচলিত আছে তার মধ্যে মৃত্যুই হলো সর্বশ্রেষ্ট এবং মহান। যদিও মৃত্যুকে একমাত্র কল্পনা দ্বারাই অনুভব করা যায়। কেননা মৃত্যুর আগমন সংকেত কখনো পৌছলেও সেই মূহুর্তে মানুষকে আদ্যন্ত যা আলোড়িত করে তার নাম জীবন। মানুষ ছাড়াও জগতের অন্যান্য প্রানীসমূহ, একেবারে কীটানুকীট পর্যন্ত এ বোধের অর্ন্তগত। সকলকেই ত্রস্ত করে জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা।
কারন পৃথিবীতে একমাত্র মৃত্যুকেই বলা হয় নিরপেক্ষ আশ্রয়। জীবন মানেই সুখ দুঃখের গলাগলি, আনন্দ-যন্ত্রনার সহাবস্থান।
নদী চলে গেছে প্রায় ঘন্টা দুয়েক হলো। কিন্তু তার সুবাস যেনো সারা ঘরময় ছড়িয়ে আছে। অনুচ্চ শব্দে উচ্চারিত তার হাসির রাশি যেনো এখনো ঘরময় উড়ে উড়ে বেড়াচ্ছে। তার ওষ্ঠাধর নিংড়ানো সজীব আকুলতা এখনো আমার ইন্দ্রিয়কে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। শারিরীক কামনা আমাদের আরো অনেকদূর হয়তো নিয়ে যেতো। কিন্তু কেন জানি আলিঙ্গনের উষ্ণতায় উদ্বেলিত দু’টি হৃদয়ের স্পন্দন জৈবিক কামনাকে ছাড়িয়ে গেলো। আর এতেই আমরা দু’জনেই দু’জনার হয়ে গেলাম। কখনো ভাবিনি এভাবে কারো সাথে জড়িয়ে যাবো। ছন্নছাড়া জীবনে কেউ এভাবে এসে ঢেউ তুলবে তাও ভাবিনি কখনো। ভেসে বেড়ানো জীবনের নৌকোটিকে কোথাও ভেড়াতে হবে এমন চিন্তাও আসে নি মাথায়। অথচ কোথা থেকে কি হয়ে গেলো। পদ্মা পাড়ের ছোট দ্বীপের মতো এক গ্রাম,নদীর কোল ঘেষে সরু রাস্তা, চারদিকে সবুজে ঘেরা, পাশ দিয়ে সারি সারি আখক্ষেত, আখক্ষেতের পাশ দিয়ে গ্রাম্যমেঠো পথ। সেই গ্রামের এক অতি সাধারণ সুন্দরী যুবতী এসে একপ্রকার জোর করে জাগিয়ে দিলো মন অনুভূতি। তার মধ্যে তারুণ্যের উচ্ছলতা আছে, উন্মত্ততা নেই। সে যথেষ্ট ধীরস্থির আর রিজনেবল। বিলাসিতার চেয়ে প্রয়োজনের দিকে নজর। অসময়ে শুয়ে শুয়ে এসব ভাবছে সৈকত। দূপুর গড়িয়ে যাচ্ছে। বুঝতে পারছে ওর মধ্যে তুমুল ঝড় বয়ে যাচ্ছে। এ ঝড় ভালবাসার ঝড়, প্রথম প্রেমের অনুভূতির ঝড়। ঝড়ের পূর্বাভাস বলে দেয় ক্ষতির পরিমান কেমন হবে। অনেক সময় সে পূর্বাভাসকেও ছাড়িয়ে যায়। প্রকৃতিতে ঝড়ের ক্ষতি প্রত্যক্ষ করা যায়, আবার কিছু কিছু ক্ষতির ক্ষতিপূরনও সম্ভব। কিন্তু হৃদয় ভাঙ্গার ক্ষতি প্রত্যক্ষ করা যায় না, এটা হৃদয় ঘটিত তাই হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে হয়। এ ক্ষতির ক্ষত কাউকে দেখানো যায় না, কাউকে বলা যায় না, কারো কাছে ক্ষতি পূরনের দাবীও জানানোর সুযোগ নেই। এটা শুধু নিজের ভিতরই বয়ে বেড়াতে হয়।

জানি, মানুষের জীবনের সকল আশা-আকাঙ্খা, সাধ-স্বপ্নের যখন মৃত্যু ঘটে তখন শুধু বিগত দিনের স্মৃতিগুলোকে আকড়ে ধরে বেঁচে থাকা যায় না।স্মৃতির মধ্যে সুখ নাই, শান্তনা নেই। আছে শুধু ব্যথা, বেদনা আর দীর্ঘশ্বাস। স্মৃতি, সেতো অতীত। সুখের হোক আর দুঃখের হোক, বর্তমানে তার উপস্থিতি দুঃখজনক। শুধু আমি কেন, পৃথিবীর যে কোন মানুষ যে কোন মুহুর্তে একবার যদি অতীতের সকল সাগর মন্থর করে তাহলে তার ভেতরে একটু না একটু বেদনার উদ্রেক হবেই। যাকে চেয়েছিলাম তাকে পাইনি, যা আশা করেছিলাম তা হয়নি। যা স্বপ্নে দেখেছিলাম তা স্বপ্নরাজ্যেও বেশীদিন স্থায়ী হতে পারেনি। কঠিন বাস্তবতার সুকঠিন নিষ্পেষনে তা কুড়িতেই ঝরে পড়ে ধুলির সাথে মিশে গিয়েছে। তার স্মৃতিও মুছে গেছে পৃথিবী থেকে।
কিন্তু যাকে নিয়ে আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেতো আজ পর্যন্ত আমার মনের পাতা থেকে মুছে যেতে পারেনি। তার সেই মুখ, সেই চোখ, সেই দেহ, সেই রুপ সবই আমার মনের গহ্বরে ছবির মত স্পষ্ট হয়ে জেগে আছে। হ্যাঁ, আয়নার মতই তার মুখখানি ভাসছে আমার চোখের সামনে স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয়ে ভাসছে। কিন্তু তার সেই রুপ দেখেই তাকে আমি ভালবাসিনি, ভালবেসেছিলাম তার ভালবাসা পেয়ে।সে বুঝি সত্যিই আমাকে ভালবেসেছিল। বুঝি গভীর ভাবেই বেসেছিল। হয়তো তাই বিয়ের পরও নিজকে আজো সুখী ভাবতে পারেনি। সুখ হলো মনের ধন সম্পদ কাউকে কি প্রকৃত সুখী করতে পারে ?

The human mind is a device for survival and reproduction, and reason is just one of its various techniques (Edward O. Wilson)
(মানুষের মন বা স্মৃতি হল টিকে থাকার অবস্থা এবং পুনরায় তৈরী করার জন্য পরিকল্পনা এবং বিভিন্ন কৌশলের একটি কারন।)
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×