জোরপূর্বক বিল আদায়ের জন্য চাঁদপুর এলজিইডি অফিসে আওয়ামী লীগের এক নেতা তাণ্ডব চালিয়েছে। ওই নেতা নির্বাহী প্রকৌশলীকে নাজেহাল করতে গিয়ে নিজেই অন্য ঠিকাদারের হাতে জুতাপেটা খেয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বিকাল ৪টায় চাঁদপুর শহরের তালতলার এলজিইডি অফিসে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হাইমচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি নূর হোসেন পাটোয়ারী অসমাপ্ত কাজের বিপরীতে ফাইনাল বিল দাবি করেন। নির্বাহী প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া ওই বিল পরিশোধে অপরাগতা প্রকাশ করলে ওই আ’লীগ নেতা প্রকৌশলীর সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। সে সময় উপস্থিত জনৈক ঠিকাদার বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে উত্তেজিত নেতা নূর হোসেনকে থামতে বলেন। তাতে তিনি আরও উত্তেজিত হয়ে ঠিকাদার রিপনকে মারধর করেন। ফলে উত্তেজিত হয়ে ঠিকাদার রিপন পাল্টা নূর হোসেন পাটোয়ারীর ওপর চড়াও হন এবং তাকে জুতাপেটা করেন।
এলজিইডির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় হতবাক হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। বিষয়টি জানতে পেরে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ ওসমান গণি পাটোয়ারী দ্রুত এলজিইডি অফিসে ছুটে আসেন। নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে বিস্তারিত জেনে দুঃখপ্রকাশ করেন এবং বিষয়টি যথাযথভাবে নিষ্পত্তি করার আশ্বাস দেন।
এব্যাপারে আ’লীগ নেতা নূর হোসেন পাটোয়ারী বলেন, তিনি কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ করেছেন। হাইমচর উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার এবং উপ-সহকারী প্রকৌশলী কাজ দেখে বিল তৈরি করে দিয়েছেন। নির্বাহী প্রকৌশলী অন্যায়ভাবে সেই বিল থেকে ১২ লাখ টাকা কর্তন করেছেন। আমি সেটার প্রতিবাদ করেছি। এটা আমার ন্যায্য অধিকারের বিষয়ে। তাছাড়া বিষয়টি এলজিইডি এবং একান্তই আমার।
নির্বাহী প্রকৌশলী মহসীন উদ্দিন আহমদ ভূঁইয়া বলেন, নূর হোসেন পাটোয়ারী আমাদের প্রতিষ্ঠানের একজন বড় মাপের ঠিকাদার। তার সঙ্গে আমাদের ভালো রিলেশন। তিনি যে বিলটি নিয়ে উত্তেজিত হয়েছেন সেটা এমন একটি প্রজেক্টের, যেটির কাজ উপর থেকে পরিদর্শন করা হয়। ওই কাজটি যদি আমরা মোটামুটি মানসম্মতভাবে না তুলতে পারি তবে আমাদের চাকরি থাকবে না। তিনি বলেন, পাটোয়ারী সাহেবের সঙ্গে আমাদের কোনো বৈরিতা নেই। সবসময় চেষ্টা করেছি সহযোগিতা করার জন্য। তারপরও তিনি যা করেছেন, তা দুঃখজনক।
উল্লেখ্য, এলজিইডির পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প অবকাঠামো উন্নয়ন ২৬ (২০১০-২০১১)-এর একটি রাস্তার কাজ ঊর্ধ্বমূল্যে ১ কোটি ৭৭ লাখ ৮২ হাজার ৯১০ টাকায় নিয়েছিল মেসার্স হোসেন ট্রেডার্স। যার প্রাক্কলিত মূল্য ছিল ১ কোটি ৬৯ লাখ ৪৪ হাজার ১৮৪ টাকা। হাইমচর উপজেলায় আলগী উত্তর ইউপির বাংলাবাজার-আনন্দবাজার রোডের (প্যাকেজ ঈযধ/টক-১০৮) ওই কাজটি অত্যন্ত নিম্নমানের এবং অসমাপ্ত রয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী ফরিদ মিয়া এবং উপ-সহকারী প্রকৌশলী এনামুল হক ঠিকাদারের কাছ থেকে বাড়তি সুবিধা নিয়ে বিলটি তৈরি করে নির্বাহী প্রকৌশলীর দফতরে পাঠিয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী ফরিদ মিয়া মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেন, দোয়া করেন ভাই, বিপদে আছি।
Click This Link