৩২-৪০ বয়সটা সব মেয়েদের জন্য খুব কঠিন সময়। এমন কোন মেয়ে নেই যাকে এই একই যুদ্ধের ভেতর পুলসিরাত পার করতে হয়নি ।
- এই বয়সে ম্যাক্সিমামের হয়ত এক দুটো ছানাপোনা হয়ে যায়। কিন্তু একটা জিনিস পাক্কা যে এ বয়সে শরীর আর আগের সেই শেইপে থাকেনা ।
-আয়নায় তাঁকিয়ে নিজের ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া স্কিনের দিকে তাকালেও তখন মেজাজ খারাপ লাগতে শুরু করে। যদি সদ্য বাচ্চা হওয়া মা হয় তাহলে এই সময়টা ভয়ংকর লাগে। হুট করে এত বড় দায়িত্ব নেয়াটাও দম বন্ধের মত লাগে। আবার শারীরিক পরিবর্তনটাও মেনে নিতে কষ্ট হয়ে যায়।
জীবনের লড়াইতে রূপের আগের সে লাবণ্য নস্ট হতে শুরু করে । মন চায় খুব টেনে কাজল দিয়ে রাখি কিন্তু এ বয়সে আপনাকে আপনার আশ পাশের মানুষরাই বারবার তিরস্কার করে মাথায় ঢুকিয়ে দিবে ..."বয়স হৈছে না,টিন এইজ বয়সের মতো ন্যাকামী সাজো । বয়স হইছে বুঝছো বেশি সাজবা না,এবার একটু গম্ভীর হও
দেখো না বয়স্ক বেটির আবার কি শখ !!!
কিন্তু মনের মধ্যে সেই ২০ এর এক রঙ্গিন ছায়া কোথায় যেনো রয়ে যায় ৷ কিন্তু এ বয়সের সখ্যতাকে সবাই ন্যাকামি টার্ম দিয়ে তাকে ভারিক্কি আর জটিলতার আওতায় আসতে বাধ্য করে । সকলের কথা শুনতে হয়৷
এই বয়সে আবদার করা যায় না। আবদারটা কেবল নিজের কাছে নিজের করতে হয়। পরিবার তখন বিয়ে না হওয়া মেয়েটাকে নিয়ে চিন্তিত, আবার সদ্য বিয়ে হয়ে যাওয়া মেয়েটা নতুন পরিবারের সাথে এডজাস্ট করতে করতে বিধবস্ত, সদ্য মা হওয়া মেয়েটা বাচ্চা সামলানো শিখাতে ব্যস্ত আর্ ডিভোর্সি হলেও দুশ্চিন্তা জীবনটা কেনো এই বয়সটা দিয়েছে সেটা চিন্তা করতে করতেই মেয়েটার দম বন্ধ লাগা শুরু করে।
৩২বছর বয়সে চাইলেই নিজের ভুল সিদ্ধান্ত শুধরানোর সময় পাওয়া যায় না। কাউকে বলা যায় না তোমাকে আমার খুব করে চাই ।
এই বয়সের ভুলটা কেউ একসেপ্ট করতে পারে না। সবাই ভাবে এই বয়সেও ভুল করলে আর শুধরাবে কবে! অথচ পুরো জীবনটাই কিন্তু একটা প্রাথমিক স্কুলের মত। শিখতে শিখতেই একদিন মরে যেতে হয়।
এই বয়সে নিজের কোন সিদ্ধান্তে ্ পরিবার কোন দায়িত্ব নিতে চায় না। নিজের ভুল নিজেকে শুধরাতে হবে অথবা পস্তাতে হবে নিরবে। কাউকে প্রকাশ করলেও লজ্জা পেতে হবে। জীবনটা এই বয়সে এসেই ফ্যাকাসে লাগা শুরু হয়ে যায়।
এই বয়সে এসে বছর খানেক হওয়া বিয়েটাও তখন বোরিং লাগা শুরু হয়। তোমার চুল উষ্কখুষ্ক কেনো!? তুমি মোটা হয়ে যাচ্ছ কেনো!? তোমার চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল কেনো!? এই কথাগুলো শুনা তখন নিত্য রুটিন হয়ে যায়।
এই বয়সে মেজাজ হঠাৎ খিটমিট করে উঠে,অনেকের কথাই তখন সহ্য হতে চায় না। এই সময়ে সেই ১৬ বছরের মত মাঝে মাঝে আদর পেতে ইচ্ছে করে, আবার মাঝেমাঝে সেটাও খুব অসহ্য লাগে। এটা এক অদ্ভুত অনুভূতি। মুড সুইং করে ক্ষনেক্ষনে।
তারপরও মনটা খুব ভালোবাসা পাবার জন্য কাঁদে । খুব চায় তাকে কেউ বুঝুক খুব করে বুঝে নিক তার চোখ দেখে মন কেউ পড়ে নিক।
আশেপাশে খুজলেই এমন অনেক বেঁচে থেকেও মরে আছে এমন মেয়ে পাওয়া যাবে। আফসোস হয়,কেন তারা নিজেকে ভালোবাসা ভুলেই গেছে !
ছবি : নেট থেকে নেয়া
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মে, ২০২১ রাত ৩:৫৪