somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিছু লিখতে ভয় করে

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিগত দিনের কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা প্রবাহ এবং বর্তমান পরিস্থিতি দেখে আমরা সাধারণ মানুষ খুবই শংকিত। আমার সোনার বাংলার ১৬ কোটি মানুষের ভাগ্যে কি ঘটতে যাচ্ছে তা আমরা পূর্বে থেকে কেউ কিছুই আঁচ করতে পারছি না। তবে যেটাই ঘটতে যাচ্ছে না কেন তা আমাদের জীবনে শান্তি যে আনবে না তা পরিষ্কার।

শুরু হলো রাজাকারের ফাসি নিয়ে গণজাগরন। হয়তো ভালই হতো সবার জন্য যদি না ইসলাম বিদ্বেষী ব্লগার রাজীব এবং অন্যান্য নাস্তিকরা মঞ্চে লিড না নিত। রাজাকারের ফাসি চাই দাবীর পাশে উঠে এলো জামাতে ইসলামি নিষিদ্ধ ঘোষনার এর পরে ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি। এই সুযোগটা নিল কেউ রাজীবকে হত্যাকরে। তখনো হয়তো প্রধানমন্ত্রী রাজীবের করা পোষ্ট পড়ে দেখেন নাই। এটাই স্বাভাবিক যে বা যারা রাজাকারের ফাসির দাবীতে আন্দোলনের মঞ্চে রয়েছে তাদের মধ্যে থেকে কেউ খুন হলে সরকার ছুটে যাবেই। এক কুলাঙ্গার সন্তান তার জঘন্য লেখনির জন্য এক মায়ের বুক খালি করল। তার অপকর্মের দায়ভার তাকেই নিয়ে মরত হয়েছে। তার সকল পোষ্ট ব্লগ থেকে সরিয়ে তাকে নির্দোষ প্রমান করান চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি ফেসবুকের কারনে। কারন তার পাসওয়ার্ড কেউ জানত না বিধায় সেখান থেকে লেখাগুলো সরানো যায়নি।

রাজাকারদের বিপক্ষে সৃষ্ট আন্দোলন ঠিকঠাকই চলছিল, বিপত্তি ঘটল রাজীবকে শহীদের খেতাব সহ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান করায়। সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এলো। ধীরে ধীরে প্রকাশ পেতে থাকলো অন্যান্য নাস্তিক ব্লগারদের করা পোষ্ট। দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা সকল দেশবাসীর ধর্মীয় অনুভূতিকে চরম ভাবে নাড়িয়ে দিল রাজীবের করা আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ) কে নিয়ে কটাক্ষ করার পোষ্টগুলোকে ধারাবাহিক ভাবে ছেপে। ব্যাস শুরু হলো ভিতরে ভিতরে জনগণের তীব্র ক্ষোভ।

সরকার বিষয়টা যেন প্রকাশ না পায় তার জন্য রাজীবের পোষ্টগুলো মিথ্যা বানোয়াট এবং জামাতের গভীর ষড়যন্ত্র বলে ঢাক ঢোল পিটাতে লাগল। ইতিমধ্যে বিষয়টা সকলের মাঝেই পরিষ্কার হয়ে গেল যে নাস্তিক ব্লগার সত্যই ইসলামকে গালি দিয়েছে। ওলামা পরিষদ এক হলো সেই সাথে অন্যান্য ইসলামি দল, জামাত শিবীররাও এদের মধ্যে মিশে গেল। ঠিক নাস্তিরা যেমন সাধারণ জনগনের মধ্যে শাহাবাগ গনজাগরণ মঞ্চের ভীড়ে মিশে আছে। শুরু হলো দুই পক্ষের মধ্যে চরম বিরোধ। এক পক্ষ প্রমান করার চেষ্টা করছে পুরাটাই জামাত শিবিরের জঙ্গিবাদ আর অন্যদল প্রমান করতে চাইছে সরকার নাস্তিকবাদের ও ফ্যাসিবাদের স্বীকার। সরকার ঘোষনা দিলো যারা নবী (সাঃ) নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছে তাদের পাশে আমরা নাই অথচ তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর কথা একবারও বলল না, এমন কি গান ম্যান দিয়ে তাদের জীবনের নিরাপত্তা দিল।

ওলামাগণের মিছিলে পুলিশ সশস্ত্র হামলা চালিয়ে প্রথম দিনে সারা দেশে ৫ জনের মৃত্যু সহ এই তিনদিনে ১২/১৩ জনের মৃত্যু ও হাজার হাজার মানুষ আহত এবং পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হলো। মিডিয়া বরাবরের মতোই সরকারের পক্ষ নিল। এটিএন নিউজে বারবার সকল ওলামদের জঙ্গী বলে আখ্যা দিতে লাগল। সাংবাদিকদের উপর গুলি ছোড়াকে জঙ্গীবাদ বলে প্রচার প্রসার চালাতে লাগল অথচ গুলি করেছে পুলিশ যা আমরা সবাই পরে জানতে পেরেছি। বায়তুল মোকাররমে হাজার হাজার রাউন্ড গুলি, গ্রেনেড ও টিয়ার সেল ছুড়ছে পুলিশ, ভিতরে আটকা পড়া মুসল্লিগণ তীব্র ঝাঁঝাল গন্ধ থেকে বাঁচার জন্য সিড়িতে পুরানো কার্পেট ও কাগজ পুড়িয়ে গ্যাসের বিষক্রিয়া কিছুটা হলেও নষ্ট করতে লাগল। বাহির থেকে সাংবাদিকরা প্রচার করতে লাগল মুসল্লিরা নামাজের কার্পেটে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে! অর্থাৎ গোটা বিষয়টা একটা রাজনীতি বেড়াজলে জড়িয়ে গেল। সাংবাদিক ভাইদের বস্তুনিষ্ট এবং সত্য সংবাদের পরিবর্তে জামাত-শিবিরের উপর যে ক্রোধ ছিল তা সাধারণ মুসল্লিদের উপর ঝেড়ে দিল।

সবকিছু মিলিয়ে ফেলল ডাল চাল খিচুড়ির মতো। সারা দেশে এখনো অসংখ্য নিরীহ মানুষ পুলিশের গুলিতে শিয়াল কুকুরের মতো মারা পড়ছে অথচ সংবাদে তা প্রচার করতে পারছে না। সরকার সত্য সংবাদ প্রচার করতে দিচ্ছে না তার প্রমান হলো বিটিভির সংবাদ বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমে প্রচার করা। একমাত্র দিগন্ত টিভি ও আমার দেশ পত্রিকা জানাচ্ছে আসল ঘটনাটা দেশবাসীকে। যে কারনে আমারদেশ পত্রিকার চাহিদা পূর্বের তুলনায় ১০ গুন বেড়ে গেছে এবং যে কোন দিন দিগন্ত টিভি দেখে না সে-ও খুলে বসে আছে।

বিএনপি এতেদিন পর ১২ দলের সাথে হরতালে সায় দিল। তাদের উচিত ছিল ইসলাম নিয়ে কটাক্ষ করার সংগে সংগে রাস্তায় নেমে পড়া। জামাত শিবির এই সুযোগেরই অপেক্ষায় ছিল। জল ঘোলা করে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করার এই মোক্ষম সুযোগটা আওয়ামীলীগই তাদের করে দিলে। এখন চলছে পলিটিকস এর উপর পলিটিকস, গণজাগরনে যারা আছে তাদের অধিকাংশই আওয়ামীলীগ সমার্থিত একথা বলার অপেক্ষা রাখে না। আওয়ামী সমার্থিত না হলেও তারা এখন সরকারী ছত্রছায়ায় জামাত নিধন নামে সকল মুসলিমকে জঙ্গি উপাধিতে ভুষিত করে এক পাল্লায় দাঁড় করিয়ে রেখেছে। আর ওলামা পরিষদ সকল গনজাগরণের সমার্থককে নাস্তিক বলে গালি দিচ্ছে। এই হলো সাম্প্রদায়িকতার শুরু। দেশের চালিকা শক্তি আওয়ামী সরকার যদি জাতীয় পতাকা ছেড়ার ধৃষ্ঠতায় যেমন রাগন্বিত হয়ে উঠেছেন মাঠে ময়দানে বক্তৃতা দিচ্ছেন ঠিক একই রকম যদি নবী (সাঃ) কে নিয়ে যারা কটাক্ষ করেছে তাদের বিরুদ্ধে একটা কথাও বলত হয়তো এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। হুজুর দেখলে পিত্তি জ্বলা স্বভাব দিনে দিনে যে নবী (সঃ) এর প্রতি ভলোবাসা থেকে দুরে ঠেলে দিয়েছে তার বড় প্রমান আওয়ামী সরকার সুন্দর ভাবে দেশবাসীকে দেখিয়ে দিয়েছে রাজীবকে জাতীয় বীর ও শহীদের মর্যাদায় ভূষিত করে। শহীদ কারা জানতে হলে কোরআন পাঠ করুন, আল্লাহই আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন কাদের তিনি শহীদের মর্যাদা দিবেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমার একটা বিশেষ অনুরোধ, দেশকে সংকটের হাত থেকে বাঁচান। আপনি ইচ্ছা করলে এক কথায় পারেন সকল আন্দোলনের পরিসমাপ্তি ঘটাতেঃ

১) সাধারণ মুসল্লিগণ, আপনার অধৈর্য হয়ে কোন বড় ধরনের ভুল করবেন না, আমাদের একটু সময় দিন বিষয়টা তদন্ত করে বের করার। যারা ইসলামকে এবং আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ) কে অবমাননা করেছে তাদেরকে খুব শিঘ্রই গ্রেফতার করা হবে। আমিও মুসলমান ঘরের সন্তান, আমারও নবী (সাঃ) প্রতি দরদ রয়েছে যতোটুকু রয়েছে আপনাদের।

২) আপনারা জামাত শিবিরকে সংগে নিয়ে জনগণের দুর্ভোগ বাড়িয়ে নিজেদের ক্ষতির দিকে নিয়ে যাবেন না প্লিজ। আমরা বুঝতে পেরেছি রাজীব ছিল ইসলাম বিদ্বেষী।

৩) আমি সাত দিনের মধ্যে প্রকৃত অপরাধী যারা ব্লগে স্বাধীন ভাবে মত প্রকাশের নামে ধর্মকে কটাক্ষ করে আজ এই পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে তাদের অবিলম্বে গ্রেফতারের ভার আমি পুলিশ প্রশাসনকে দিলাম।

ব্যাস, এতোটুকুই পারে চরম বিক্ষোভে ফেটে পড়া সাধারণ মুসলিমদের হৃদয়কে শীতল করতে। অন্য কোন পথ আমার জানা নাই।

ভালো থাকবেন আপনারা সবাই।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×